বাংলার পোশাক আমার পছন্দ

ফুজিসাওয়ার সাগর
ফুজিসাওয়ার সাগর

ছোটবেলা থেকে আমি কানাগাওয়ার ফুজিসাওয়ায় থাকি। জাপানে ফুজিসাওয়ার সাগর বিখ্যাত। কারণ সেখানে সুন্দর একটি দ্বীপ আছে। আমি সাগরের কাছে বড় হয়েছি। তাই সাগর আমার পছন্দ। আমি বহুবার সাইকেল চালিয়ে বা বন্ধুর সঙ্গে জগিং করে সেখানে গেছি। সমুদ্রতীরে সুন্দর ঝিনুক ও সি-গ্লাস পড়ে থাকা, ভলিবল খেলা আর সাগর দেখতে দেখতে ঢেউয়ের শব্দ শোনা আমার ভালো লাগে।

যখন আমার মনে হয়েছিল যে এই সাগরের অন্য দিকে বিদেশ আছে, তখন আমি উত্তেজিত হয়েছিলাম। কারণ আমি বিদেশ পছন্দ করি। আমার বাবা ও মা অনেক জায়গায় আমাকে নিয়ে যেতেন। যখন জাপান থেকে ভিন্ন দৃশ্য আর সংস্কৃতি সম্পর্কে আমি জেনেছি, তখন আমার মনে হয়েছে সেগুলো নিয়ে আরও ভালো ভাবে জানা দরকার। তখন থেকেই আমি ভেবেছিলাম যে এমন এলাকা নিয়ে আমি শিখতে চাই, অন্য জাপানিরা যেটা তেমন জানে না। আর ঠিক এ কারণেই আমি এখন বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করছি।

কলকাতায় বাংলা ভাষার ক্লাসে
কলকাতায় বাংলা ভাষার ক্লাসে

বাংলা নিয়ে আমার লেখাপড়া করার আরেকটা কারণ ছিল এ রকম, আমি পোশাক ভালোবাসি। আমার ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল সুন্দর পোশাকের দোকান খোলা। খুব ছোটবেলা থেকে আমি একা নিজের পোশাক বেছে নিতাম ও পোশাকের ছবি আঁকতে ভালোবাসতাম। দোকানে পোশাকের ট্যাগ দেখে আমি জানতে পেরেছি, বাংলাদেশে অনেক পোশাক ও কাপড় তৈরি করা হয়। আমি আমার পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়তে চেয়েছি বলে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে আমি ভর্তি হয়েছি। বাংলাদেশ বা ভারতের ঐতিহ্যগত পোশাক, কাঁথার মতো চিকন কাজ, আর কাপড়ের মুদ্রণ নিয়ে এখন আমি আগ্রহী হয়ে উঠেছি।

বাংলা ভাষা শিখে এখন আমি আনন্দ পাচ্ছি। আমি প্রতিদিন বাংলার সংস্কৃতি, শিল্প আর ইতিহাস নিয়ে নতুন অনেক কিছু শিখছি। তাই আমি জানি যে বাংলা খুব সুন্দর। সেখানে চমৎকার সংস্কৃতি ও প্রকৃতি আছে। তবে একই সঙ্গে আমি বাংলাদেশ ও ভারতের সমস্যা নিয়েও পড়ি। ভবিষ্যতে আমি বাংলা ভাষা ব্যবহার করে পোশাকের সঙ্গে সম্পর্কিত কাজ করতে চাই। পোশাকশিল্পের সমস্যার সমাধান খুঁজে নিয়ে বাংলার উপকার করতে পারা হচ্ছে আমার ইচ্ছা।

আমার আরেকটি ইচ্ছা হলো আমার দেশের অনেক মানুষ যেন বাংলাকে আরও ভালোভাবে জানতে পারে, সেই সুযোগ এদের জন্য করে দেওয়া। এ কারণে আমি বাংলা আরও ভালো করে শেখার চেষ্টা করব। বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়ে আমার জীবন এখন আগের চেয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। নতুন আরও অনেক কথা আমি শিখতে থাকব।

আয়ানা ওজাকি: দ্বিতীয় বর্ষ, বাংলা বিভাগ, বিদেশবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়, টোকিও।