টরন্টোয় ভক্তদের মাতিয়ে গেলেন জেমস

টরন্টোয় ভক্তদের মাতিয়ে গেলেন জেমস
টরন্টোয় ভক্তদের মাতিয়ে গেলেন জেমস

মঞ্চে এসেই অধীর আগ্রহে বসে থাকা দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশে একটি মাত্র বাক্য, ‘আই লাভ ইউ’। হলের মধ্যে ভেসে চলে তাঁর আঙুলের ছোঁয়ায় গিটারের টুং টাং, ডিং ডং ধ্বনি, যা দর্শকদের সঙ্গে তাঁর সংযোগ স্থাপনের অসাধারণ এক মাধ্যম। গিটারের সেই সুর তরঙ্গে দর্শক-শ্রোতাদের আনন্দ ভেসে চলে। তিনি গাইতে শুরু করেন, ‘লেইস-ফিতা লেইস, লেইস ফিতা লেইস, চুড়ি ফিতা রঙিন সুতা রঙিন করিবে মন...’। সুরের মূর্ছনায় হারিয়ে যেতে শুরু করে উপস্থিত সবাই।

দর্শক-শ্রোতা
দর্শক-শ্রোতা

নিখুঁত শব্দ সংযোজনে সুরের জাদুকর গলা খুলে গাইতে থাকেন একের পর এক গান, ‘তুমি স্বপ্নচারিণী হয়ে খবর নিয়ো না-কবিতা, এই নিশাচর আমায় ভেবো না সুখের মোহনা’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না দুঃখিনী দুঃখিনী’, ‘ও বিজলি চলে যেও না ও বিজলি চলে যেও না’, ‘আমি তারায় তারায় রটিয়ে দেব তুমি আমার’, ‘দুষ্ট ছেলের দল; মোরা শাসন মানি না, বারণ-ও শুনি না, করি তালবাহানা, করি নানা ছলনা’ ইত্যাদি। বাদ পড়েনি তাঁর জনপ্রিয় হিন্দি গান ‘না জানি কহি, ক্যাসি হে এ জিন্দেগানি, জিন্দেগানি হামারি আধুরি কাহানি’ কিংবা আবেগ মাখা বাংলা ‘মা’ গানটিও। আর দর্শক-শ্রোতারা তাঁর সঙ্গে সঙ্গে, সুরে সুরে, উড়তে থাকেন তারার দেশে।

হ্যাঁ, এই সুরের জাদুকর আর কেউ নন। তিনি হচ্ছেন বাংলা ব্যান্ড সংগীতের জনপ্রিয় শিল্পী নগরবাউল জেমস। তিনি গান শুনিয়ে মাতিয়ে রেখে গেলেন টরন্টোর ভক্তদের। কাজের চাপে ঝিমিয়ে পড়া মানুষগুলোকেও নাচিয়ে তুললেন একত্রে। ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন তাঁদের তারুণ্যে। কিন্তু তেষ্টা মেটাতে পারেননি ভক্তদের। সারা রাত গান করলেও অবশ্য তাদের এই তেষ্টা মিটবে না। তবে গানের মাঝে মাঝে তাঁর ছোট ছোট ‘আই লাভ ইউ’, ‘উম্মা’, ‘তোমরা-ই আমার জান, তোমরা-ই আমার গান’ বার্তাগুলো ভিজিয়ে দিয়েছে ভক্তদের হৃদয়।

মঞ্চে জেমসের সঙ্গে আয়োজক ও উপস্থাপকেরা
মঞ্চে জেমসের সঙ্গে আয়োজক ও উপস্থাপকেরা

তাই তো উচ্ছ্বাসিত ভক্তরা প্রত্যুত্তরে বারবার ‘গুরু’ বলে ভালোবাসা প্রকাশ করলেন। তাঁর সর্বশেষ বার্তা ‘বেঁচে থাকলে-আবার দেখা হবে, আপনাদের শুভেচ্ছা’ নিয়ে সবাই বাড়ি ফিরলেন গত রোববার (২১ জুলাই) দ্য টরন্টো প্যাভিলিয়ন থেকে। কনসার্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সুরে সুরে তিনি তাঁর ভক্তদের সঙ্গে সে সম্পর্ক গেঁথে রেখে গেছেন, তা নিয়ে ভালো থাকবেন ভক্তকুল বেশ কিছুদিন। তাঁরা তাঁদের গুরুর দীর্ঘায়ু কামনা করবেন যেন আবারও এভাবে সুরের সাগরে ভেসে বেড়াতে পারেন।

কনসার্টটি আয়োজন করেছিল টরন্টো থেকে দ্য ম্যাক এন্টারটেইনমেন্ট, শাহিন খান, নাসির কাশেম ও কাজী আলম লিটন। এ ছাড়া ভ্যানকুভার থেকে ঢাকা ক্লাব ভ্যানকুভার ও এডমন্টন থেকে হালিম শাহ।

পুরো কনসার্ট উপস্থাপনায় ছিলেন দিলারা নাহার বাবু ও অজন্তা চৌধুরী।