কোরিয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংগঠনের প্রীতিসভা

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংগঠনের প্রীতিসভা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংগঠনের প্রীতিসভা

দক্ষিণ কোরিয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংগঠনের এক প্রীতিসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির হান্নাম ইউনিভার্সিটিতে ‘সোসাইটি অব নেপালিজ স্টুডেন্টস ইন কোরিয়ার (সনসিক) ১৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা (২০১৯) উপলক্ষে এই প্রীতিসভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় দেশটিতে অধ্যয়নরত বিভিন্ন দেশের ছাত্র সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়ার (বিএসএকে) কার্যনির্বাহী পরিষদের তিনজন প্রতিনিধি এ সভায় যোগদান করেন। দুই দিনব্যাপী সনসিকের বার্ষিক সাধারণ সভা ২৪ ও ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়।

সনসিকের সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত রাম সিং থাপা। তিনি সনসিকের সাধারণ সভায় বিএসএকে ও অন্য দেশের ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে স্বাগত ও এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে এক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা
ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা

সভায় বিএসএকের পক্ষে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য এস এম নাসির উদ্দিন, মিলন চৌধুরী ও মো. গোলাম রাব্বানী। তাঁদের মধ্যে মো. গোলাম রাব্বানী বিএসএকের বর্তমান কার্যক্রম ও কার্য পরিচালনা পরিষদ সম্পর্কে উপস্থিত সবাইকে অবহিত করার পাশাপাশি সংগঠনটির ভবিষ্যৎ কিছু সম্ভাব্য পরিকল্পনার কথাও ব্যক্ত করেন।

বিএসএকের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ঘানা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (ঘাএসকেএ) প্রতিনিধিরা। তাঁরা তাঁদের বক্তব্যের একপর্যায়ে এখন থেকে সনসিকের পাশাপাশি বিএসএকেও আরও একটি সহযোগী সংগঠন হিসেবে তাঁদের পাশে পাওয়ার আশা ব্যক্ত করেন। ফলে বিএসএকের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতায় কার্যক্রম পরিচালনায় ফিলিপাইন ও নেপালের সঙ্গে এবার ঘানা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনও তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে ভবিষ্যৎ দিনগুলোতে যৌথ উদ্যোগে একাডেমিক কনফারেন্স, সেমিনারসহ নানাবিধ অনুষ্ঠান করার পথ সুগম করে।

স্যুভেনির হাতে প্রধান অতিথি ও অতিথিরা
স্যুভেনির হাতে প্রধান অতিথি ও অতিথিরা

মূলত এ ধরনের আন্ত-সম্পর্কিত কার্যক্রম শুরু হয়েছে চলতি বছরের ২৯ জুন সিউলের এশিয়ান-কোরিয়ান সেন্টারে ফিলিপাইন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (পিকো), সোসাইটি অব নেপালিজ স্টুডেন্টস ইন কোরিয়া ও বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়ার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক রিসার্চ কলোকিউম ২০১৯-এর মধ্য দিয়ে।

এর মাধ্যমে দেশটিতে বিএসএকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছেও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সেবায় নিয়োজিত অন্যতম সংগঠন হিসেবে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়, যেখানে শুধু বিএসএকের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরাই নন, বরং সংগঠনটির দিকনির্দেশক হিসেবে বর্তমান উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

কলোকিউমে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ
কলোকিউমে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ

বিএসএকে ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের এই ধরনের যৌথ আয়োজন আন্ত-সম্পর্কিত কার্যক্রম বৃদ্ধির পথ আরও গতিশীল ও কোরিয়ায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য বহুমাত্রিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আর এভাবেই বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া তার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশের ধারক-বাহক হিসেবে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রাখতে সক্ষম হবে।

উল্লেখ্য, বিএসএকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংগঠন। ২০১১ সালে একদল উদ্যমী শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

কলোকিউমে বিএসএকের সদস্য ও উপদেষ্টারা
কলোকিউমে বিএসএকের সদস্য ও উপদেষ্টারা

প্রতিষ্ঠাকাল থেকে দেশটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নানাবিধ প্রয়োজনে সেবা প্রদানসহ বিবিধ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সংগঠনটি তার নিজস্ব স্বকীয়তা ধরে রেখেছে। সময়ের পরিক্রমায় সংগঠনটি শুধু স্বদেশি শিক্ষার্থীদের কাছেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেনি, বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছেও দিন দিন বাড়ছে এর গ্রহণযোগ্যতা।

বিএসএকে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন

এ ছাড়া বিএসএকে ফেসবুক গ্রুপে যোগাযোগ করা যাবে।

মো. গোলাম রাব্বানী: কার্যনির্বাহী সদস্য, বিএসএকে ও পিএইচডি গবেষক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, দক্ষিণ কোরিয়া।