ফ্রান্সে দানোত্তম কঠিন চীবর দান

ফ্রান্সে দানোত্তম কঠিন চীবর দান। ছবি: অনুপম বড়ুয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত
ফ্রান্সে দানোত্তম কঠিন চীবর দান। ছবি: অনুপম বড়ুয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত

উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ফ্রান্সে উদ্‌যাপিত হয়েছে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব দানোত্তম কঠিন চীবর দান। কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টার গতকাল রোববার (১৩ অক্টোবর) রাজধানী প্যারিসের অদূরে সেন্ট ডেনিশের মোলিন বাসেত মিলনায়তনে দিনব্যাপী এক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।

সমবেত প্রার্থনা, অষ্ট উপকরণসহ মহাসংঘদান, ধর্ম দেশনা, আলোচনা সভা, কঠিন চীবর উৎসর্গ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটিকে উদ্‌যাপন করেন প্রবাসী বৌদ্ধরা।

স্থানীয় সময় সকালে ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হয় এ উৎসব। এটা ছিল ফ্রান্সের প্রথম দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান। সকালে সদ্য প্রয়াত একুশে পদকপ্রাপ্ত ও উপসংঘরাজ পণ্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের স্মরণে অষ্ট পরিষ্কারসহ মহাসংঘদান অনুষ্ঠিত হয়।

দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে উপস্থিতি। ছবি: অনুপম বড়ুয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত
দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে উপস্থিতি। ছবি: অনুপম বড়ুয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত

বিকেলে দানসভায় সভাপতিত্ব করেন কম্বোডিয়ার ভদন্ত থিতা ধম্মা ভিক্ষু। সভায় অন্যদের মধ্যে ফ্রান্সের বুদ্ধগয়া প্রজ্ঞাবিহারের পরিচালক কল্যাণরত্ন ভিক্ষুসহ বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা উপস্থিত ছিলেন। কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের পরিচালক ভদন্ত জ্যোতিসার ভিক্ষু দেশনা করেন।

মঙ্গলাচরণ করেন ভদন্ত করুণানন্দ শ্রমণ। পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন সাজু বড়ুয়া। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন বরণ বড়ুয়া। তবলায় সংগত করেন বাবু বড়ুয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অনুপম বড়ুয়া।

বক্তারা বলেন, চীবর দান ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বৌদ্ধদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দান জন্মজন্মান্তরে সুফলপ্রদায়ী। প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে বছরে একবার চীবর দান করা হয়। এদিন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ গৃহীরা ভিক্ষুসংঘকে চীবর দান করেন।

ভিক্ষু সংঘও তাদের বিনয়-বিধানের সব নিয়ম অক্ষুণ্ন রেখে পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে এ চীবর গ্রহণ ও ব্যবহার করে। কঠিন চীবর দানের বহুধা গুণের কথা স্মরণে রেখে প্রত্যেক বৌদ্ধ জীবনে অন্তত একবার হলেও চীবর দান করার মানসিকতা পোষণ করেন।

দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে উপস্থিতি। ছবি: অনুপম বড়ুয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত
দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে উপস্থিতি। ছবি: অনুপম বড়ুয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত

অনুষ্ঠানে প্যারিস ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশ, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকেরা এ উৎসবে অংশ নেন।