মেলবোর্নে অন্য ধরনের এক বিতর্ক সভা
মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়ান বাংলা কমিউনিটি ফাউন্ডেশনের (ভিবিসিএফ) প্রাঙ্গণে শিশুদের অংশগ্রহণে হয়ে গেল অন্য ধরনের এক বিতর্ক সভা। সমাজকর্মী রাশেদা নাসরীনের ‘আলোক স্কুল’-এর জন্য অর্থ সংগ্রহ ও বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের প্রতি দায়িত্ববোধ তৈরিই ছিল এই বিতর্ক অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য।
গতকাল রোববার (১৩ অক্টোবর) এই বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশুদের জন্য এই বিতর্ক অনুষ্ঠানটির উদ্যোগ নেন বাংলা একাডেমি অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে এর পরিচালক আনোয়ার আকাশ।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় ওয়েস্টার্ন রিজিয়ন বাংলা স্কুলের ছেলেমেয়েরা লাল ও সবুজ রঙের পোশাক পরে পক্ষে ও বিপক্ষে বিভক্ত হয়ে এই বিতর্কে অংশ নেয়। এই স্কুলের বাচ্চারা ইতিপূর্বে নাচ-গান, নাটক, চিত্রাঙ্কন, খেলাধুলায় অংশ নিলেও বিতর্ক অনুষ্ঠানটি ছিল তাদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন এক অভিজ্ঞতা।
বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা খুবই আনন্দিত। কারণ, তাদের এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য একটি তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, ভবিষ্যতেও এমন কর্মকাণ্ডে উৎসাহ নিয়ে অংশগ্রহণ করবে।
বিতর্কের বিষয় ছিল ‘সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’।
এই অনুষ্ঠান যে বাচ্চাদের জন্য, সেই বাচ্চাদের পরম আশ্রয়ের নাম আলোক স্কুল। আজ থেকে ১৬ বছর আগে রাশেদা নাসরীনের হাত ধরে গুটি গুটি পায়ে এটির যাত্রা শুরু। মাত্র পাঁচটি শিশু নিয়ে সম্পূর্ণ একার উদ্যোগে শুরু করে এখন তিনি গর্বের সঙ্গে জানালেন, ৫৫০টি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব আজ সেই আলোক স্কুলের।
স্কুল বড় হয়েছে। তাই এর পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় রাশেদা নাসরীনের একার পক্ষে বহন করা আর সম্ভব নয়। দেশ-বিদেশের মানুষের এমন অবদান তাঁর এই স্কুলের দরিদ্র শিশুদের মুখে আজ হাসি ফোটায়।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক আয়োজনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন ভিবিসিএফের সভাপতি নুসরাত ইসলাম ও ওয়েস্টার্ন রিজিয়ন বাংলা স্কুলের প্রিন্সিপাল মোর্শেদ কামাল।
বিতর্ক অনুষ্ঠানের বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন ড. তামান্না রুমিন, ড. আখতার হোসেন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আতিক রহমান।
বিতর্কে অংশ নেয় আহ্নাফ, জেসপার, ইশমে, আরীব, ইয়ারা, জারাহ, ইশরাক, শাবাজ, আরিকা, ডোরি, ইশাল ও রাইয়ান।
মেলবোর্নের স্থানীয় বাঙালিদের মধ্যে আনোয়ার আকাশের এই উদ্যোগ যথেষ্ট আলোচিত ও প্রশংসিত হয়।
জান্নাতুল ফেরদৌস নৌজুলা: হপার্স ক্রসিং, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া।
