বাবা আমিও যাব

অ্যারিজোনায় আবরার হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: মাসুদ রেজার মাধ্যমে প্রাপ্ত
অ্যারিজোনায় আবরার হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: মাসুদ রেজার মাধ্যমে প্রাপ্ত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরারকে পিটিয়ে হত্যার পর কোনো কিছুতেই মন বসাতে পারছি না। না কাজে, না বাসায়। নিজের অজান্তেই বারবার চোখ ভিজে উঠছে। পত্রিকা ও টিভি নিউজ যতই দেখছি নিজেকে আর স্থির ধরে রাখতে পারছি না। মনে হচ্ছে, যে যার অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করার এবং সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে।

আমার মন খারাপ দেখে আমার স্কুলপড়ুয়া ছেলে জানতে চাইল কী হয়েছে বাংলাদেশে। ছেলেকে বললাম কী নিষ্ঠুর নির্যাতন করে আবরারকে হত্যা করা হয়েছে। আরও বললাম, কাল আমরা সবাই প্রতিবাদ, মানববন্ধন ও দোয়ার জন্য টুড পার্কে সমবেত হব। ছেলে আমার এক সেকেন্ডও চিন্তা না করে বলল, ‘বাবা আমিও যাব প্রতিবাদ জানাতে’।

আবরার ছিল পডুয়া ছেলে। শেরেবাংলা হলে তার রুমে পাওয়া গিয়েছে বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনীসহ পদ্মানদীর মাঝি, সাতকাহন, মিসির আলী সমগ্র।

অ্যারিজোনায় আবরার হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: মাসুদ রেজার মাধ্যমে প্রাপ্ত
অ্যারিজোনায় আবরার হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: মাসুদ রেজার মাধ্যমে প্রাপ্ত

রোববার কুষ্টিয়া থেকে ফিরে নিজ রুমে বসে পড়াশোনার ব্যস্ত ছিল আবরার। রাত আটটার দিকে ওই হলের ২০১১ রুমে টর্চার সেলে ডেকে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে তার ওপর শুরু হয় মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক অত্যাচার ও ভয়ংকর নির্যাতন। একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছাত্রলীগের ২২ জন খুনি।

অ্যারিজোনার সবার পরিচিত মুখ বুয়েটের ’৮৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংসদের জিএস সালাহউদ্দিন চৌধুরী, আরিফ মাহমুদ, ’৮৯ ব্যাচের মঞ্জু, নকিব, শিমু ও স্পষ্টবাদী আশফাক আনসারীর উদ্যোগে সব শ্রেণির মানুষের উপস্থিতিতে চেন ডলার টুড পার্কে আবরারের স্মরণে প্রতিবাদ, মানববন্ধন ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

অ্যারিজোনায় আবরার হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: মাসুদ রেজার মাধ্যমে প্রাপ্ত
অ্যারিজোনায় আবরার হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: মাসুদ রেজার মাধ্যমে প্রাপ্ত

বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা এনাম ভাইসহ জাকী ভাই, মাহবুব, নাঈমী, ফাহমিদা, মঞ্জু ও গাজী সালাহউদ্দিন।

বক্তারা বলেন, আমরা মনে করি বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কারণ, ছাত্ররাজনীতি এতটাই ভয়ংকর ও বেপরোয়া হয়ে গিয়েছে যে, প্রায়ই কোনো না কোনো মায়ের বুক খালি হচ্ছে। কলুষিত হচ্ছে গোটা শিক্ষাব্যবস্থা। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে অনেক অপরাধ, অন্যায় ও সন্ত্রাস বন্ধ হয়ে যাবে।