মায়াহীন এক শহর থেকে খোলা চিঠি

প্রতীকী ছবি। টোকিওর একটি দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি। টোকিওর একটি দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স

জীবিকার প্রয়োজনে মানুষ কত কি না করে। আমার বেলায় ব্যাপারটা ঠিক সে রকম নয়। তারপরও একটু ভালো থাকা, আরও একটু বেশি সুখের আশায়, তোমাকে ছেড়ে, চেনা সেই প্রিয় শহর ছেড়ে, তোমার-আমার অজস্র স্মৃতিতে মোড়ানো অতি পরিচিত রাস্তাঘাট আর টং দোকানকে বিসর্জন দিয়ে আজ আমি তোমার থেকে হাজার হাজার মাইল দূরের কোনো অচেনা দেশে।

কাজে বিশেষ মন নেই আমার। এই যে আমি লিখছি, অফিসের কাজ ফাঁকি দিয়ে লিখছি। তুমি হয়তো জানো না, কেমনভাবে কাটে আমার সময়। এখানে চারদিকে এত আলোর আয়োজন তুমি ছাড়া বড়ই বিচ্ছিরি লাগে। বিচ্ছিরি লাগে এখানকার সুন্দর রাস্তাঘাট আর রেস্তোরাঁগুলো।

আমার দেখা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শহর হলো ঢাকা। হয়তো নোংরা। কিন্তু ঢাকার অলিগলিতে যে মায়া আছে, তা আর পৃথিবীর কোনো শহরে নেই। মায়াহীন এই ভিনশহরে তোমাকে বড্ড মিস করছি। আমি যে তোমার মায়ায় পড়ে গেছি।

শুনেছিলাম জাপানের মানুষগুলো রোবটের মতন। যা শুনেছিলাম আসলেই তা–ই। এই জাতি কাজ ছাড়া আর কিছু বোঝে না। আর আমি তাদের কাজে ফাঁকি দিয়ে সারাক্ষণ তোমার কথা ভাবি। এই টিপটাপ শহুরে জীবনকে কিছুতেই আমি আপন করে নিতে পারছি না।

প্রতীকী ছবি। ঢাকার কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ। ছবি: প্রথম আলো
প্রতীকী ছবি। ঢাকার কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ। ছবি: প্রথম আলো

তোমরা যখন বন্ধুবান্ধব নিয়ে খুব পরিচিত কোনো রেস্টুরেন্টে আয়েশ করে খাওয়াদাওয়া করো আর ফেসবুকে ছবি আপলোড করো, আমি তখন সেই ছবিতে নিজেকে কল্পনা করে সময় পার করি।

তুমি জানো কী? যখন অফিসে বসে কঠিন কোনো অ্যালগরিদমের কোড টাইপ করি, মাঝেমধ্যে সেই সব কোডের মধ্যেও তোমার নাম লিখে ফেলি। ভুল করে এমনটা করি, তা কিন্তু না। ইচ্ছে করেই করি। এই যে সবকিছুর মধ্যে তোমাকে বয়ে নিয়ে বেরানোর ইচ্ছে, হয়তো এটাই মায়া, এটাই ভালোবাসা। ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি তোমাকে।