প্রবাসে ভালো লাগার মুহূর্ত
অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত সব শোরুমে পছন্দের কোনো ড্রেসের ট্যাগ উল্টে যখন ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা দেখি, গর্বে আনন্দে বুকটা তখন ভরে যায়। জানি না কেমন শোনাবে, তবে সত্যিই তখন আনন্দে চোখে পানি চলে আসে।
আরও ভালো লাগে, যখন এই ক্রিসমাস সেলে আমার দেশের তৈরি জিনস ও টি-শার্ট বিভিন্ন দেশের লোকজনকে হাসিমুখে কাড়াকাড়ি করে কিনতে দেখি।
নিজেও যে কতবার শুধু ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা দেখে দুই-তিন সাইজ বড় বা ছোট ড্রেস কিনে বাসায় ফিরেছি, তার হিসাব নেই!
বাংলাদেশি হিসেবে ক্রিকেট-ফুটবলের চেয়ে এই গার্মেন্টসশিল্প নিয়েই কেন জানি আমার সবচেয়ে বেশি গর্ববোধ হয়।
কয়েক দিন আগে এক তুর্কি বন্ধু বলল, জাহান, তোমাদের দেশের গার্মেন্টসকর্মীরা তো প্রায় বিনা টাকায় কাজ করে। কীভাবে সম্ভব এত কম টাকায় কাজ করা?
তার কথা শুনে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল।
হুট করে রানা প্লাজার শাহিনার কথা মনে পড়ে গেল। কেমন আছে শাহিনার ছোট বাচ্চাটা? যার জন্য শাহিনা খুব করে বাঁচতে চেয়েছিল। ‘ভাই আমাকে বের করেন, আমার বাচ্চাটা না খেয়ে আছে...!’
শাহিনার সেই ভয়ার্ত কণ্ঠ কত রাত আমাকে জাগিয়ে রেখেছে।
কেমন আছে মা-বাবা হারানো ৩৬ এতিম শিশু? শুনেছি, তারা কেউ কেউ এখন বেঁচে থাকার তাগিদে রাস্তায়। কেমন আছে সেই লোকটা? যে বারবার বলছিল, ‘ভাই, আমার পা কাইট্যা হইলেও আমারে বাইর করেন। আর পারি না!’
কেমন আছে সেই উদ্ধারকর্মীর পরিবার? যে কিনা এই ভয়াবহতার স্মৃতি ভুলতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিল?
ভালো থেকো বাংলাদেশ...।
নিরাপদে থেকো...।