মুম্বাইয়ে বাংলাদেশবিষয়ক বাণিজ্যিক সেমিনার
ভারতের বাণিজ্যিক নগরী মুম্বাইয়ে ‘ডুয়িং বিজনেস উইথ বাংলাদেশ: অপরচুনিটিস অ্যান্ড হোয়াই ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক বাণিজ্যিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মুম্বাইয়ের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও অল ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগিতায় মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ উপহাইকমিশন আজ বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এই সেমিনার আয়োজন করে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও অল ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রায় ৫০ জন সদস্যসহ মুম্বাইয়ের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কার্যনির্বাহী সদস্য (অতিরিক্ত সচিব) অশোক কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে চার সদস্যের এক প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে মুম্বাইয়ে নিয়োজিত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার মো. লুৎফর রহমান সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই সেমিনারের মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসা বা বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী ভারতীয় ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।
লুৎফর রহমান আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁর কন্যার নেতৃত্বে গৃহীত পদক্ষেপের ফলে দেশ গত ১০ বছরে ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে। তাঁর গৃহীত এসব পদক্ষেপ আজ বিশ্বের কাছে রোল মডেল।
বাংলাদেশের ধারাবাহিক এ উন্নতির অংশীদার হতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রতি লুৎফর রহমান আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে তাঁরা এ সুফল গ্রহণ করতে পারেন।
লুৎফর রহমান অর্থনীতির ধারাবাহিক উচ্চ প্রবৃদ্ধি, কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে অগ্রগতি এবং দারিদ্র্য হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, বৈদেশিক বিনিয়োগ, বাংলাদেশের উপগ্রহ উৎক্ষেপণ, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতির বিষয় তুলে ধরেন।
লুৎফর রহমান অল ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট বিজয় কালান্তারির নেতৃত্বে একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফরের অনুরোধ জানান।
বেজার কার্যনির্বাহী সদস্য অশোক কুমার বিশ্বাস তাঁর বক্তব্যে বেজা সম্পর্কে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বেজাতে বিনিয়োগ করে বাংলাদেশে বিদ্যমান বিনিয়োগ ও সরকারের গৃহীত প্রণোদনা সুবিধা ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা গ্রহণ করতে পারে।
এ ছাড়া বেজা সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন বেজার ব্যবস্থাপক (উপসচিব) আহসান উল্লাহ।
সেমিনারের দ্বিতীয় অংশে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্পর্কে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়। প্রশ্নোত্তরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।
প্রশ্নোত্তরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রগুলো বিশেষত গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, কৃষিভিত্তিক শিল্প, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, সিরামিক, হালকা প্রকৌশল ও ইলেকট্রনিকস, অবকাঠামো উন্নয়ন, হিমায়িত খাদ্য ও চিংড়ি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পাটজাত দ্রব্য, প্লাস্টিক, ওষুধশিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়।
এ সময় জানানো হয় নিকটতম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে সহজ যোগাযোগব্যবস্থা, ভাষা ও সংস্কৃতির নৈকট্য, আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক পরিবেশের অভিন্নতা ইত্যাদি সুবিধা ব্যবহার করে উভয় দেশই লাভবান হতে পারে।
আলোচকেরা ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা, কানেকটিভিটি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে চমৎকার সহযোগিতা ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে একমত হওয়াসহ দুই দেশের সাফল্যকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। বিজ্ঞপ্তি