কায়রোয় বাংলাদেশ ডে শীর্ষক কর্মশালা
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিসরের রাজধানী কায়রোয় ‘বাংলাদেশ ডে’ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ইজিপশিয়ান বিজনেসম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের (ইবিএ) সম্মেলনকক্ষে এ কর্মশালা আয়োজন করে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়াবিষয়ক বিভাগের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূত মিজনাগলা জাওয়াহিরি।
বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এ টি এম আব্দুর রউফ মণ্ডল দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান ব্যবসা বাণিজ্যের সাম্প্রতিক অবস্থা, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির করণীয় সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি দেশটির সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করেন।
আব্দুর রউফ মণ্ডলের উপস্থাপনায় প্রতীয়মান হয়, দেশটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বাংলাদেশ ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছে।
কর্মশালায় ইবিএর চেয়ারম্যান আলী হেলমি ইসাসহ চারজন বোর্ড সদস্য, কায়রোর বিভিন্ন চেম্বারের ১৫ জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সম্পৃক্ত ৪০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থাপনায় এ টি এম আব্দুর রউফ মণ্ডল উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত ১০ বছরে ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে, যা বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত।
আব্দুর রউফ মণ্ডল অংশগ্রহণকারীদের জানান, ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সাল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তী। বাংলাদেশের ইতিহাসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে স্মরণীয় করতে তিনি দেশটির ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আরও বেশি পরিমাণে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ উল্লেখ করে এ টি এম আব্দুর রউফ মণ্ডল দেশটির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ থেকে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে সুনির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে মানসম্পন্ন তৈরি পোশাক, সিরামিকসামগ্রী, পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানির আহ্বান জানান।
আব্দুর রউফ মণ্ডল জানান, অতি সম্প্রতি বাংলাদেশে পেঁয়াজের উচ্চমূল্য মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে মিসরের বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগের কারণে যথেষ্ট পরিমাণে মিসরীয় পেঁয়াজ বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছিল। তিনি ব্যবসায়ীদের মিসর থেকে বিভিন্ন মৌসুমি ফল, সবজি, খনিজ দ্রব্য, রাসায়নিক সার, কটন বাংলাদেশে রপ্তানির আহ্বান জানান।
উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূত মিজনাগলা জাওয়াহিরি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন এবং মিসরীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে অধিক পরিমাণে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
কর্মশালায় ক্লিন পাওয়ার ফর ন্যাচারাল গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ওয়ালিদ সামি দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ ধরে বাংলাদেশে তাঁর বিভিন্ন ব্যবসা ও বিনিয়োগের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মিসরের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইজ্জত তাঁর বক্তব্যে মিসরীয় বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে থাকে।
ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য অতি দ্রুত একটি যৌথ বাণিজ্য কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তি