মেক্সিকোয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

ইবেরো আমেরিকানো বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে সেমিনার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, মেক্সিকো
ইবেরো আমেরিকানো বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে সেমিনার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, মেক্সিকো

মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে সিনেটর, শিক্ষক, কূটনীতিক ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে যথাযথ ভাবমর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করা হয়েছে মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

২১ ফেব্রুয়ারি দিবসের দ্বিতীয় অংশে দেশটির বিখ্যাত ইবেরো আমেরিকানো বিশ্ববিদ্যায় ও বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিনেটর মিস সচিল গালভেজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর মিস সিলভিয়া ইরেনে স্মেকেল ডেল ভাইয়ে।

আয়োজনে তুরস্ক, ইরান, জর্জিয়া, বুলগেরিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন, প্যালেস্টাইন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কাজাখস্তান ও আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতসহ ২৮ জন কূটনৈতিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রদূত ও অন্য দূতাবাসের প্রতিনিধিরা দিবসটি সম্পর্কে নিজস্ব ভাষায় তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন এবং দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা দিবস সংশ্লিষ্ট তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

সিনেটর সচিল গালভেজ তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে জানার এবং নিজ নিজ ভাষা ও অন্য উপভাষাকে সম্মান ও সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত হবে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘ল্যাংগুয়েজ উইদাউট বর্ডারস’।

অস্থায়ী শহীদবেদিতে ভাষাশহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, মেক্সিকো
অস্থায়ী শহীদবেদিতে ভাষাশহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, মেক্সিকো

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, গুরুত্ব ও জাতীয় জীবনে এর প্রভাবসহ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট ও বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে নিজস্ব ভাষাভাষী ক্ষুদ্রতম জনগোষ্ঠীর মধ্যেও এটির তাৎপর্য তুলে ধরেন।

তিনি ভাষা আন্দোলনে শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউরের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষা আন্দোলনে অবদানের বিষয়ও তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে তুলে ধরেন। বিশ্বের প্রতিটি দেশের বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীও যেন তাদের নিজস্ব ভাষার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সেমিনারের শুরুতে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া মিলনায়তনের প্রবেশমুখে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদবেদিতে উপস্থিত সবাই ভাষাশহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

অস্থায়ী শহীদবেদিতে ভাষাশহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, মেক্সিকো
অস্থায়ী শহীদবেদিতে ভাষাশহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, মেক্সিকো

এর আগে প্রত্যুষে মেক্সিকো সিটির বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। পরে দূতাবাস প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি