রৌদ্রের ঘ্রাণ

অলংকরণ: কাইয়ুম চৌধুরী
অলংকরণ: কাইয়ুম চৌধুরী

চৈত্রের এক ঝিম দুপুরের ঘ্রাণ প্রায়ই আমাকে জাগিয়ে তোলে

তখন পীঠ থেকে আলগোছে মায়ের হাতটা সরিয়ে রাখি
পিঁপড়ে পায়ে পিলপিল করে বেরিয়ে আসি
রোদের ডাকে
আমি হাঁটি একলা পথে, সূর্য দেবতা পিছু পিছু আসে
মাঠের পুবে কাঁঠালের ছায়ায় একটি কুকুর মাটি খুঁড়ে বসে থাকে
ক্লান্ত চোখে একবার তাকাতেই আবার তার চোখ বন্ধ হয়ে আসে
ঝিম দুপুর, অলস দুপুরে খরতাপ আমাকে
ক্লান্ত করতে পারে না
আটাশ নম্বরের মাঝামাঝি হু করে একরাশ বাতাস আসে
মৃতপ্রায় বাগানবিলাসের একটি ডাল খানিকটা গড়িয়ে যায়
আমি হাঁটি, আমার শরীরজুড়ে কেবল দুপুরের ঘ্রাণ।
দুপুর আমায় টানে, কী এক আজন্ম নেশায় পথে নামায়!
কোত্থেকে একটা কোকিল এসে বসন্তের শেষ গানটা ধরে
থমকে দাঁড়াই, নিস্তব্ধতার সুর ফুরিয়ে যাবার ভয়ে থাকি
তবুও আমি হেঁটে যাই, দুপুরের ঘ্রাণ নিয়ে, স্নিগ্ধ কিছু ধুলা মেখে
শাহী মসজিদের পাশ ধরে একটু এগিয়ে উঁকি দিতেই ঝিগাতলা
নতুন পথ আবিষ্কারের আনন্দ আমাকে চঞ্চল করে তোলে
কে জানত এ পথ ধরেই অজস্রবার আমাকে যেতে হবে!
এরপর আরও শত কোটি বছর আর যেতে হবে না।
এতকাল পরেও দুপুরের ঘ্রাণ এসে আমায় ডেকে তোলে
মায়ের হাত সরিয়ে উঠে দাঁড়াতেই তিনি টের পেয়ে যান
আমি পিঁপড়ের মতো হাঁটতে গেলেও কপাটে শব্দ হয়ে যায়
আমি সবকিছু অবহেলা করে পথে নামতে পারি না
আমি রৌদ্রের ঘ্রাণে আর সারা দিতে পারি না!