প্রবাসীদের সিঙ্গাপুর নাগরিকদের মতোই দেখভাল হবে

জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হিসিয়েন লুং। ছবি: সংগৃহীত
জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হিসিয়েন লুং। ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরে এখন চলছে সার্কিট ব্রেকার। আগের ঘোষণা অনুযায়ী সার্কিট ব্রেকার ৪ মে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এমন অবস্থায় সিঙ্গাপুর সরকার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে ঘোষণা করে যে সার্কিট ব্রেকার আরও চার সপ্তাহ বৃদ্ধি করা। আগামী ১ জুন পর্যন্ত চলবে সার্কিট ব্রেকার।

বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত বেশির ভাই অভিবাসী কর্মী। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ১ হাজার ৪২৬ জনের মধ্যে ১৬ জন সিঙ্গাপুরের নাগরিক। বাকি সবাই ওয়ার্ক পাশ হোল্ডার। মঙ্গলবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১ হাজার ১১১ জনের মধ্যে ২০ জন সিঙ্গাপুরিয়ান, বাকি সবাই ওয়ার্ক পাশ হোল্ডার।

গত দুই দিনের পরিসংখ্যান দেখেই বোঝা যাচ্ছে, অভিবাসীদের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। আর এই কারণেই সিঙ্গাপুরের সরকার এমনকি প্রতিটি স্থানীয় নাগরিক চিন্তিত। তাই সংগত কারণেই মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হিসিয়েন লুংয়ের ভাষণে অভিবাসীদের কথা উঠে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী লি তাঁর ভাষণে বলেন, সরকার ডরমিটরিতে অবস্থানরত অভিবাসীদের সিঙ্গাপুরের স্থানীয় নাগরিকদের মতোই দেখভাল করবে, যা অভিবাসীরা ইতিমধ্যে পেয়ে আসছেন। সিঙ্গাপুরে কোনো অভিবাসী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সিঙ্গাপুর সরকার তার চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভিবাসীরা যাতে নিয়মিত বেতন পান, তা নিশ্চিত করবে সরকার। এমনকি দেশে অর্থ পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তারা যেন পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইসলামধর্মাবলম্বী প্রবাসী শ্রমিকেরা যাতে যথাযথভাবে রমজান পালন করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হবে। এমনকি ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে উল্লেখ বলেন।

প্রধানমন্ত্রী ভাষণের শুরুতে সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম বাংলাদেশির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত প্রথম বাংলাদেশি দুই মাস আইসিইউতে থাকার পর এখন জেনারেল ওয়ার্ডে আছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। তাঁর সুস্থ হতে একটু সময় লাগবে। আশা করি তিনি খুব দ্রুত তাঁর সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকে কোলে তুলে নিতে পারবেন।


প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের শেষের দিকে এই কঠিন মুহূর্তে সরকারকে সহায়তা করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সবাইকে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন পরবর্তী সময়ে এভাবেই নিয়ম মেনে চলার জন্য এবং ধৈর্য ধারণ করে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য।