রুয়ান্ডায় করোনা-ঈদ

পরিবারের সঙ্গে লেখক। ছবি: সংগৃহীত
পরিবারের সঙ্গে লেখক। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী করোনার থাবা থেকে এশিয়া-ইউরোপ-আফ্রিকা-আমেরিকা—কেউই রক্ষা পায়নি। লাখো মানুষ এর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে এবং অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে, যা এখনো চলছেই। করোনায় এ পর্যন্ত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্বের প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাবান দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষমতাবান হলেও এই দেশটি করোনার আক্রমণ থেকে কোনোই ছাড় পায়নি বলা যায় বরং একেবারে যাকে বলে নাকানি–চুবানি খেতে হয়েছে, যা কারোরই অজানা থাকার কথা নয়। হৃদয়বিদারক তো বটেই!

করোনার থাবা পড়েছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডাতেও। তবে সরকারসহ সর্বস্তরের মানুষের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার ফলে দেশটিতে করোনা এখন পর্যন্ত তেমন সুবিধা করতে পারেনি। দেশটি এখন পর্যন্ত শূন্য মৃত্যুহার ধরে রাখতে পেরেছে, যা সম্ভব হয়েছে কেবল সরকারের দৃঢ়তার কারণে।

গতকাল রোববার (২৪ মে) পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩২৯ জন, যার মধ্যে ২৪৭ জন সুস্থ হয়ে ইতিমধ্যেই বাড়ি ফিরেছেন এবং বর্তমানে ৮২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। উল্লেখ্য, দেশটিতে এ পর্যন্ত টেস্টের আওতায় এসেছেন ৫৯ হাজার ৮৭৭ জন।

লকডাউনের কড়াকাড়ি কিছুটা শিথিল করা হলেও এখনো এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে যাতায়াতে বিধিনিষেধ আছে। মাস্ক পরা সবার জন্য একেবারে বাধ্যতামূলক। এর ব্যতিক্রম হলেই সবারই শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আওতায় আসতে হয়।

ঈদের বন্ধুদের সঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত
ঈদের বন্ধুদের সঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত

এরই মাঝে গতকাল রোববার সৌদি আরব, ইউরোপ, আমেরিকার সঙ্গে মিল রেখে দেশটিতে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। মসজিদ বা ঈদগাতে কোন ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ থাকার কারণে ঘরেই নামাজ আদায় করতে হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন পারিবারিকভাবে কারও সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ না হওয়ার কারণে বাচ্চারা একেবারে হতাশ হয়ে উঠেছিল বিধায় গুটি কয়েক পরিবার মনে সাহস নিয়ে একত্র হয়েছিলাম, যাতে বাচ্চারা কিছুটা হলেও আনন্দ উপভোগ করতে সক্ষম হয়েছিল।

প্রিয় বাংলাদেশে উত্তরোত্তর যে হারে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এবং যে হারে এমনকি দেশের বিশিষ্টজনেরা এতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন, তাতে আতঙ্ক আর উদ্বেগ ক্রমেই যেন বাড়ছে। তাই দেশবাসীকে অধিকতর সাবধানতা অবলম্বনের আকুত জানাচ্ছি। কারণ নিজেকে নিজে রক্ষা করতে না পারলে চিকিৎসক বা সরকার—কারও পক্ষেই কাউকেই হয়তো রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

শিগগরিই আঁধার কেটে যাক, বিশ্বময় আনন্দ ফিরে আসুক আবারও। ঘরে ঘরে সুখের নহর বহমান হোক আগেরই মতন, এই প্রত্যাশা রেখে এবং দেশে-বিদেশে থাকা সবাইকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি।

ঈদ মোবারক