লন্ডনে ঢাবি ক্লাব ইউকের ভার্চ্যুয়াল ঈদ পুনর্মিলনী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধ শতাধিক সাবেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষক ও প্রফেশনালদের অংশগ্রহণে গত শনিবার লন্ডনে হয়ে গেল ঈদ পুনর্মিলনী। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে অ্যালামনাইরা জুম অ্যাপের মাধ্যমে পুনর্মিলনীতে যুক্ত হয়েছিলেন।

গত ২৬ জানুয়ারি লন্ডনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পর করোনাভাইরাসের লকডাউনের কারণে ক্লাবের কার্যক্রম কার্যত বন্ধ ছিলে। তবে ক্লাবের উদ্যোক্তরা ইউকেতে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের মধ্যে অনলাইনে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ মে অনলাইনে এই ঈদ পুনর্মিলনী ও আড্ডার আয়োজন করা হয়। যুক্তরাজ্যে লকডাউনের সময় ব্রিটেনে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা তাঁদের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের জুম আড্ডার সঞ্চালনা করেন একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক ও ক্লাব ম্যানেজমেন্টের সদস্য তানভীর আহমেদ। জুম আড্ডার শুরুতে ক্লাব ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন থার্ড সেক্টর কনসালট্যান্ট বিধান গোস্বামী, সোনালী ব্যাংক ইউকের সাবেক ডেপুটি চিফ এক্সিকিউটিভ আমীরুল ইসলাম চৌধুরী, ব্যারিস্টার অজয় রায় রতন, ব্যারিস্টার চৌধুরী হাফিজুর রহমান, ব্যারিস্টার কাজী আশিকুর রহমান, আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম, আইনজীবী ইউসূফ ইকবাল, তাসলিমা মীরা ও আইনজীবী ঝুমুর দত্ত।

আলোচনার শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সদস্য ফাতেহা পলি ও আরিফুর রহমানসহ যাঁরা এনএইচের ফ্রন্টলাইন স্টাফ হিসেবে কোভিড-১৯–এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছেন, তাঁদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানো হয়।

করোনাভাইরাসের লকডাউনের সময় ফাতেহা পলির ৯ বছরের মেয়ে ইশাল ফাতেহা সরকার কীভাবে নিজের ইউটিউব ব্লগ খুলে অনলাইনে স্টোরি টেলিং শুরু করেছে, সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করে। সংবাদ পাঠিকা হিমিকা আযাদের কবিতা পাঠের পাশাপাশি ঘরবন্দী ১১ বছরের ছেলে আহনাফ ওয়াসিফ তরণ কীভাবে সংবাদ লেখাও শিখে গেছে, সেই সংবাদ পড়ে শুনিয়েছে অ্যালামনাইদের। পরে ওয়াসিফ বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে প্রথম পুরস্কার জেতা নিজের আঁকা ছবিও সবার সঙ্গে শেয়ার করে।

কভেন্ট্রিতে বসবাসকারী ১৯৯২ ব্যাচের ম্যানেজমেন্টের সাবেক শিক্ষার্থী, সংগীতপ্রেমী রুমানা নাসির তাঁর মেয়ে ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষার্থী অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোরাল মিউজিক স্কলার সৃষ্টির গিটার ও ইয়ার এইটের শিক্ষার্থী অরথ্রিকা যুক্ত হয়েছিলেন পিয়ানো নিয়ে। করোনাভাইরাসের লকডাউনের সময়কে কাজে লাগিয়ে নতুন করে ব্লগিং শুরু করেছেন আরেক অ্যালামনাই কিশোয়ার মুনিয়া। মুনিয়া তাঁর নতুন ব্লগের বিস্তারিত নিয়ে কথা বলেন ঈদ আড্ডায়। চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিল্পী আসাদ লাইভ পোর্ট্রেট আঁকেন এনএইচএসের ফ্রন্ট লাইন স্টাফদের নিয়ে। করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিল্পী আসাদ তাঁর চিত্রকর্ম নিয়ে প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন। জুম আড্ডায় যুক্ত হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ম্যানেজমেন্টের অন্যতম সদস্য বাংলাদেশ ল অ্যাসোসিয়েশন ইউকের সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক, আইনজীবী কাউসার আলাম হীরা, আইনজীবী মামুন আল ফিরোজী, ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন, এম মোত্তালিব ও শায়লা শিমলা।

ভার্চ্যুয়াল পুনর্মিলনীতে যুক্ত হয়েছিলেন কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশনের অ্যাডভাইজার ও লিংকনশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার ডক্টর মাহফুজুর রহমান, বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টারের অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর রমা রানী বিশ্বাস, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি সাহেলা আক্তার, এডুকেশন কনসালট্যান্ট গোলাম মর্তুজা, ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান তালুকদার, রওশন জাহান, ফাতেম লিলি, রথিন গোস্বামী, কাদের জিলানীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক অ্যালামনাই।

প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী প্রাণবন্ত আড্ডা, কবিতা, গল্প পাঠ, গান, গিটার আর পিয়ানোর সুরে মেতে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ব্রিটেনের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী সারোয়ারী আলমের সুরেলা কণ্ঠের গান শুনতে শুনতে পুনর্মিলনীর পরিসমাপ্তি ঘটে। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, কোভিড–পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু না হওয়া পর্যন্ত ক্লাবের ভার্চ্যুয়াল কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।