পরপর দুদিন মৃতের সংখ্যা শূন্য, স্বস্তি স্পেনে

করোনাভাইরাসে পরপর দুই দিন মৃতের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় স্পেন। গত তিন মাসে টানা করোনা–তাণ্ডবে যে সংখ্যা হাজার বেশি পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মৃতের সংখ্যা শূন্য, অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে স্পেনে।

করোনা মোকাবিলায় স্পেন সরকারের অনন্য সাফল্য বলে দাবি করছেন অনেকে। স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেস মনে করেন, লকডাউনের সফল পেতে যাচ্ছে স্পেন। খুব তাড়াতাড়ি তার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে উৎসব, আনন্দ ও ফুটবলের দেশ স্পেন।

স্পেনে প্রথম করোনা রোগী প্রথম শনাক্ত হয় ৩১ জানুয়ারি, কানেরিয়া দ্বীপে। চার মার্চে একজন মারা যান। ১৪ মার্চ থেকে স্টেট অব অ্যালার্ম জারি করা হয়। ১২ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ইউরোপের সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে ইতালিকেও ছাড়িয়েছে স্পেন বেশ কয়েকবার। এরপর পাঁচটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়, প্রতিটির মেয়াদকাল ছিল ১৫ দিন করে এবং ষষ্ঠবারের মতো আরেকটি লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় স্পেন। গত ২৮ এপ্রিল স্পেন সরকার স্বাভাবিক অবস্থায় যেতে শূন্য ধাপ থেকে চারটি ধাপ ঘোষণা করে, পর্যায়ক্রমে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে লকডাউন কমিয়ে আনতে থাকে। ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দীর্ঘস্থায়ী লকডাউন ঘোষণা করে পর্যটননির্ভর ভূমধ্যসাগরের দেশ স্পেন।

ভয়াবহতার দিক থেকে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ ও পর্যটন নগরী বার্সেলোনা সংক্রামক ও আক্রান্তের সংখ্যা এখনো বেশি। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৮৬ হাজার ৫০৯ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ২৭ হাজার ১৩৭ জন। স্পেনে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৯৫℅মানুষ ছিলের বৃদ্ধ, বেশির ভাগের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে।

প্রথম দিকে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে গেলেও মে মাসে লাগাম ধরতে সক্ষম হয় স্পেন। বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন থাকতে হয় প্রায় ৬ কোটি অধিবাসীকে।

করোনা–তাণ্ডবে স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে স্পেন। ইতিমধ্যে বার্সেলোনার নিসান কোম্পানি করোনা মহামারি সংকট কাটিয়ে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে, বন্ধ ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় অঞ্চলে তাদের তিনটি শাখা। এতে মোট তিন হাজার কর্মী চাকরি হারাবেন। সরকার ঘোষিত লকডাউনের চারটি ধাপে দ্বিতীয় ধাপের পৌঁছে গেছে স্পেনের ৭০ শতাংশ মানুষ। এখনো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা প্রথম ধাপে রয়ে গেছে। স্থানীয় সরকার আগামী ৮ জুন থেকে দ্বিতীয় ধাপে উন্নতির আবেদন করেছে মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায়।

আগামী ১ জুলাই থেকে পর্যটন উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে স্পেন। তবে, স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে কিছুটা পরিবর্তন নিয়েই চলতে হবে, এমন ঘোষণা দিয়েছে স্পেন সরকার।