জার্মানিতে করোনায় নাগরিকেরা যে যে সুবিধা পাচ্ছেন

করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি

করোনার প্রাদুর্ভাবে কবলিত আপামর জনসাধারণকে সম্ভাব্য আর্থিক সহযেগিতার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার সাধ্যমতো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ ক্ষেত্র জার্মান সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো প্রণিধানযোগ্য।

জার্মান একটি কল্যাণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় সরকার ও প্রতিটি রাজনৈতিক দলের যাবতীয় কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে নাগরিক। প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার পূরণ ও জীবনের নিরাপত্তা প্রদান করা সরকারের মূল লক্ষ্য। এ অধিকার ও নিশ্চয়তা প্রাপ্তি রাষ্ট্রীয় সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত। নাগরিকের এ অধিকার ও নিশ্চয়তা সঠিকভাবে পূরণ হচ্ছে কি না তার অতন্দ্র প্রহরী হচ্ছে স্বায়ত্তশাসিত আইন ও বিচার বিভাগ।

কল্যাণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুসারে নাগরিকের সমান অধিকার সুনিশ্চিত জার্মানিতে। সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে শ্রমিক ও চাকরিজীবীর মধ্যে পেনশন, চিকিৎসা, বেকার ভাতা, ছুটিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার পার্থক্য নেই। পেনশনে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রত্যেক ব্যক্তির সরকারি ও বেসরকারি চাকরি গ্রহণ করার অধিকার আছে।

করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সরকারি ও বেসরকারি সব চাকরিজীবী তাঁদের বেতনের ৬০ শতাংশ পাচ্ছেন সরকারি তহবিল থেকে। সাধারণ নাগরিক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাঁদের বাসা বা প্রতিষ্ঠানের ভাড়ার সিংহভাগ অনুদান হিসেবে পাচ্ছেন সরকারি তহবিল হতে। তা ছাড়া তাঁদের অবশিষ্ট বকেয়া ভাড়া পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়েছে দুই বছর পর্যন্ত। করোনার কারণে সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোও সরকারের অনুদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছ না।

আজ অর্থাৎ ১ জুলাই ২০২০ থেকে ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত নাগরিকেরা নানা সরকারি সহযোগিতা পাবেন। সেগুলোর মধ্য অন্যতম হচ্ছে—
১. সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, সব ধরনের শিক্ষা উপকরণ ও প্রিন্ট মিডিয়ার ওপর বিদ্যমান ভ্যাট ৭% থেকে ৫%-এ, অন্যান্য দ্রব্যের ওপর ১৯% থেকে ১৬%-এ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

২. রেস্তোরাঁর মালিকেরা সরকারকে ১৯%–এর পরিবর্তে ৭% ভ্যাট দেবেন।

৩. পেনশন-ভাতা ৩.৪৫% বৃদ্ধি করা হয়েছে।

৪. স্বাস্থসেবা কর্মীদের সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ঘণ্টায় ১৫ ইউরো।

৫. স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে প্রত্যেক অবিভাবক বর্তমানে প্রতি মাসে প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তানের জন্য ২০৪ ইউরো, তৃতীয় সন্তানের জন্য ২১০ ইউরো ও চতুর্থ থেকে পরবর্তী প্রতি সন্তানের জন্য ২৩৫ ইউরো শিশুভাতা পান। এখন থেকে এই ভাতা ছাড়াও প্রতি সন্তানের জন্য মাসিক ৩০০ ইউরো অতিরিক্ত দেওয়া হবে।

৬. বর্তমানে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে প্রত্যেক আয়করদাতা ওষুধ বাবদ বছরে ১ হাজার ৯০৮ ইউরো আয়কর মুক্তি পান। এই অর্থের পরিমাণ চার হাজার পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে জার্মানিতে সব ধরনের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় বহন করে সরকারি তত্ত্বাবধানে চালিত বিভিন্ন প্রাইভেট স্বাস্থ্যবিমা কোম্পানি।