কানাডায় মাস্ক বাধ্যতামূলক হচ্ছে

বৈশ্বিক মহামারি করোনা যেমনি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে কানাডার অর্থনীতিকে, তেমনি স্বাস্থ্য নিয়েও শঙ্কিত কানাডার জনসাধারণ। যদিও মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছে কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। একদিকে স্বাস্থ্যবিধি আর অন্যদিকে অর্থনীতির চাকা সচল রাখা নিয়ে উভয়সংকটে রয়েছেন সরকারপ্রধান ও নীতিনির্ধারকেরা।

কানাডার আলবার্টার ক্যালগেরির মেয়র নাহিদ নেনশি জনসাধারণকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, ক্যালগারিয়ানরা যদি মাস্ক পরার ব্যাপারে নিজেরা সতর্ক না হন, তবে দুই সপ্তাহের মধ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।

ক্যালগেরির স্থানীয় গণমাধ্যম ‘ক্যালগেরি হেরাল্ড’ জানায়, মেয়র নেনশি আরও বলেন, জনসাধারণের মধ্যে অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার পাশাপাশি কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণকে সীমাবদ্ধ রাখার জন্যই মাস্ক পরা উচিত।

ইতিমধ্যে টরন্টোয় বাধ্যতামূলক বাই ল’ মাস্ক পরা কার্যকর হয়েছে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ সরকারি জায়গাগুলোর যেমন স্টোর, মল, উপাসনা স্থান ও বিনোদন স্থানগুলোতে মাস্ক পরতে হবে। এটি স্কুল বা পোস্ট-সেকেন্ডারি সংস্থাগুলো, কনডো এবং অ্যাপার্টমেন্ট ভবনগুলোতে বা হাসপাতালে প্রয়োগ হবে না।

এ ছাড়া টরন্টোর পাবলিক ট্রানজিট সিস্টেমে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত অটোয়ার সব অভ্যন্তরীণ পাবলিক স্পেসেও মাস্ক বাধ্যতামূলক।

কানাডার স্থানীয় গণমাধ্যম সিটিভি জানিয়েছে, ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে মন্ট্রিয়েলের অভ্যন্তরীণ পাবলিক স্পেসগুলোতে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হবে। মন্ট্রিয়েলের মেয়র ভেলারি প্ল্যান্ট জানিয়েছেন, জুলাই থেকেই পাবলিক স্পেসে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। মন্ট্রিয়েলের সব অভ্যন্তরীণ জায়গা যেগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে, সেখানে শিগগির মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক হতে চলেছে । মেয়র ভেলারি প্ল্যান্ট তাঁর টুইটার এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, শহরটি একটি নতুন বাই ল’ নিয়ে কাজ করছে এবং ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে এটি কার্যকর করার লক্ষ্যে রয়েছে ।

বর্তমানে মন্ট্রিয়েলে মাস্ক শুধু একটি শহরতলিতে, কোট-সেন্ট-লুসে বাধ্যতামূলক, যেখানে নিয়মটি গত সপ্তাহে কার্যকর হয়েছে। ১৩ জুলাই সরকারি ট্রানজিটে বাধ্যতামূলক হবে মাস্ক পরা। অন্য বড় শহরগুলোতেও মাস্ক বাধ্যতামূলক করতে চলেছে মন্ট্রিয়েল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে অটোয়া সিটিতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

কানাডায় এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। শিশু-কিশোরদের স্কুল বন্ধ। স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে অনেকেই বাইরে ঘুরতে যাচ্ছেন না বড় কোনো ভ্রমণে। মানসিক প্রশস্তি আর গ্রীষ্মকালের কথা ভেবে দু-একটি পরিবার বের হচ্ছে, তা-ও আবার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার ৭৪২, মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ৭৪৬ এবং সুস্থ হয়েছেন ৭০ হাজার ৫০৩ জন।