কীভাবে মানুষের মন বদলাবেন

যদি আপনি আমাকে বছর দুয়েক আগে প্রশ্ন করতেন, কীভাবে কারও মতামতকে প্রভাবিত করে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসতে হয়, আমি হয়তো আপনাকে একদম ভিন্ন একটা উত্তর দিতাম।

একজন বিজ্ঞানী হিসেবে হয়তো আমি আপনাকে বলতাম যে বিষয়ভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত ও পরীক্ষার ফলাফলের ওপরে নির্ভর করতে। শুধু প্রমাণযোগ্য এবং পরীক্ষাযোগ্য সত্যের ওপরে নিজের মতামতের একটা শক্ত ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করতে।
এরপরে যাঁর মন বদলাতে চান, তাঁকে সেই নির্ভুল সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করান। যাবে কোথায়? মানতেই হবে যে সে ভুল বকছে। কিন্তু ভুল, একদম ভুল সেই প্রক্রিয়া!

প্রতিপক্ষকে সত্যের ডামাডোলে চাপা দিয়ে, সব কুসংস্কার আর ভুল ধারণাকে চিড়েচ্যাপ্টা করার এই মানসিকতা বিজ্ঞানমনস্ক বা যুক্তিবাদী তরুণদের মধ্যে খুব দেখা যায়। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন যে সত্য, মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে কোটি ডলার খরচের যুদ্ধ যে আসলে কাজ করছে না, বিবর্তন যে চোখের সামনে অহরহ ঘটছে, ঝুঁকিহীনভাবে ব্যবসা যে অলাভজনক, এ ধরনের সত্যগুলো যারা বিশ্বাস করে না, তাদের কিন্তু যতই তথ্য–উপাত্ত দিয়ে যুক্তি বোঝানো হোক, তারা তা মানবেই না, বরং নিজের মতামতে আরও গেঁড়ে বসবে।

সত্য যত কঠিনই হোক না কেন, মানুষের মন যেন আরও বেশি কঠিন। মানুষের চিন্তার ধারা যত না সত্যকে অনুসরণ করে, তার চেয়ে বেশি অনুসরণ করে তার অভিজ্ঞতার ছায়াকে, আর তার সন্দেহবাতিক পূর্বধারণাকে। আপনি যতই নির্ভরযোগ্য তথ্য কিংবা পরীক্ষালব্ধ ফলাফল নিয়ে আসুন না কেন, একবার যে মনস্থির করে ফেলেছে এক বিষয়ে, তাকে পুরোপুরি ভুল স্বীকার করানো কিন্তু সহজ নয়। কেন নয়?

কারণ, নতুন তথ্য পেলে আমরা সেটাকে গ্রহণ করি যদি সেটা আমাদের ধারণার সঙ্গে মিলে যায় আর সেটাকে বর্জন করি, যদি তা না হয়। এই প্রক্রিয়াটা অবচেতন মনেই ঘটে, এমনকি খুব খোলা মনের মুক্তবুদ্ধির মানুষও এই দোষ থেকে মুক্ত নয়। অসুবিধাজনক সত্যকে আমরা কম গুরুত্ব দিতে থাকি আর সুবিধাজনক মিথ্যাকে আমরা প্রশ্রয় দিতে থাকি আর আশা করে থাকি তা যেন সত্য হয়। এ কারণেই দেখা যায় বড় বড় করপোরেট অফিসে মিডিওকার কর্মীরা চাকরি হারান না। কারণ, তাঁকে প্রাথমিকভাবে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত যে ঠিক ছিল না, সেটা কেউ স্বীকার করতে চায় না। অন্য উদাহরণ দিলে বলা যায়, চিকিৎসকেরা এখনো খাবারে স্নেহজাতীয় উপাদানের ক্ষতির কথা রোগীকে বলে থাকেন, যদিও আধুনিক গবেষণা বলছে, আসলে ফ্যাট নয়, চিনি হলো বেশির ভাগ ক্ষতির কারণ। শুরুর ভুলকে নতুন সত্যের আলোকে স্বীকার না করার এই প্রবণতার উদাহরণ শুধু ব্যক্তিপর্যায়ে নয়, জাতীয় পর্যায়েও প্রচুর দেখা যায়। এই প্রবণতার নাম হলো Confirmation Bias.

যদি এখনো বিশ্বাস না করে থাকেন যে আসলে আমরা সবাই Confirmation Bias–এর শিকার। তাহলে একটু ভাবেন তো, মনে কোনো প্রশ্ন আসার পরে তা Google Search করে আপনি কি সব কটা লিঙ্ক ক্লিক করে পড়ে একটা নিরপেক্ষ ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করেন নাকি আপনি খুঁজতে থাকেন কোন লিঙ্কের তথ্য আপনার পূর্বধারণার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে, আর সেটাই আদ্যোপান্ত পড়েন। আপনি যদি প্রথম দলের হয়ে থাকেন, তাহলে নিঃসন্দেহে আপনি অসাধারণ!

মনে মনে ভাবছেন, যদি সত্য দিয়ে মানুষের মন না বদলায়, তাহলে কি দিয়ে বদলায়? মিথ্যা দিয়ে? আসলে তা–ও নয়।

মনকে পালানোর রাস্তা দিন
মানুষ ভুল স্বীকার করতে চায় না। ভুল স্বীকার এড়াতে এমন ভয়ংকর সব কাজ করে বসে যে ফলাফল আরও খারাপ হয়। তাই সেই পথে না হাঁটাই ভালো। তার চেয়ে একটা অজুহাত দাঁড় করান। যার মন বদলাতে চান, তাকে সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করানোর আগে, তার আগের সিদ্ধান্তকে ভুল না বলে বলুন, ‘সেটাই সবচেয়ে ঠিক সিদ্ধান্ত ছিল সেই সময়ের জন্য।’ তার কাছে যতটা তথ্য ছিল, তার ভিত্তিতে তার নেওয়া সিদ্ধান্তটাই সবচেয়ে সঠিক ছিল। নতুন তথ্য বা ফলাফল যেহেতু এসেছে, তাই আগের ভালো ও সঠিক সিদ্ধান্তকে আবার বিবেচনা করার সময় এসেছে।

আমরা কি সেটা করি? না করি না। বরং বলে ফেলি, ‘কী, বলেছিলাম না আগে?’ ‘এমন ভুল মানুষ করে?’ ‘কী, বুদ্ধির মাথা খেয়েছিলে?’ ‘উচিত শিক্ষা হয়েছে, আগে ভাবোনি কেন?’

Schadenfreude একটা জার্মান শব্দ, প্রাচীন ইরেজিতেও এটার ব্যবহার দেখা যায়, এর মানে হলো, অন্যের দুরবস্থা কিংবা মন্দ ভাগ্য দেখে একটু কৌতুক অনুভব করা। এটা করে আমাদের অনেকেরই সময় ভালো কাটে কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিন্তু কিছু হয় না। বরং যাকে নিয়ে এটা করা হয়, সে আরও বেশি রক্ষণশীল হয়ে পড়ে। কাউকে তার ভুলের কারণে ছোট করে কথা বলার পর তাকে কারেকশন করতে হলে স্বীকার করে নিতে হয় যে সে অবিবেচক। এই আত্মসমালোচনা করার মতো বড় মন সবার নেই। বাংলা সিনেমায় একটা কমন ডায়লগ ছিল না, ‘এই ...ভাঙবে কিন্তু মচকাবে না’, অনেকটা সে রকম। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের এই প্রবণতা বাড়ে বৈ কমে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটরা এই ফাঁদে ধীরে ধীরে পড়তে যাচ্ছে। আগামী নির্বাচনে যদি তারা ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটারদের গিয়ে বলে যে আপনারা গত নির্বাচনে ভুল করেছিলেন, তাহলে কখনোই তারা তাদের সমর্থন পাবে না। সাইকোলজি প্রফেসর রবার্ট সিয়ালদিনির মতে, ডেমোক্রেটদের উচিত হবে বলা যে ‘আপনাদের যেই সমস্যাসংকুল অবস্থা ছিল ২০১৬–তে, তাতে আপনাদের সিদ্ধান্ত সেই সময়ের জন্য ঠিক ছিল, কিন্তু তখন তো আপনারা জানতেন না যে...’ শুনতে যতই প্যাথেটিক শোনাক, মানুষের মন এভাবেই কাজ করে।

পঞ্চাশের দশকে কলম্বিয়ায় একনায়ক রোহাসের পতন ঘটে। তাঁর অনেক কুকর্মের সঙ্গী ছিল সেনাবাহিনী। সরাসরি না হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের মৌন সমর্থন ছিল (একনায়কেরা এভাবেই তৈরি হয় আসলে)। কিন্তু একনায়কের পতনের পরে কলম্বিয়ার জনগণ খুব বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সেনাবাহিনীর দিকে আঙুল না তুলে তাদের সম্মানের সঙ্গে ব্যারাকে ফেরত পাঠায়, সেটা না করলে বড় ধরনের রক্তপাতের ঘটনা ঘটত, বহু প্রাণহানি হতো। কলম্বিয়ার রাজনীতিবিদেরা বুঝেছিলেন, গণতন্ত্র আনতে হলে তাদের সেনাবাহিনীকে দোষারোপ করলে চলবে না। বরং তাদের সাহায্য লাগবে বিপ্লব–পরবর্তী পুনর্গঠনের জন্য। জনগণকে তারা একটা ধারণা দিয়েছিল যে রোহাসের কুকর্মের সঙ্গে মিলিটারির সরাসরি সম্পর্ক নেই, তারা কেবল জনগণের মতোই দর্শক ছিল, তারা কিছু করেনি রক্তপাত এড়ানোর জন্য। এই বক্তব্যে মূল ভিলেন বানানো হয় রোহাসের ব্যক্তিগত সহচর আর পরিবারের সদস্যদের। সেনাবাহিনীর জন্যও এই বক্তব্য হজম করা সহজ ছিল। কারণ, তারাও জনগণের শত্রু হতে চায়নি। যদি এই চতুর পদক্ষেপ নেওয়া না হতো, তাহলে কলম্বিয়ায় তখন গণতন্ত্র না এসে মিলিটারি একনায়ক ক্ষমতায় আসত।

আপনার বিশ্বাস আর আপনি এক নন
আপনার একটি ছোট সিদ্ধান্ত বা বিশ্বাস আপনার সব অস্তিত্বকে সংজ্ঞায়িত করে না। আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে কেউ যদি আমার যুক্তিকে খণ্ডন করত প্রেজেন্টেশনের সময়, আমি ভীষণ রেগে যেতাম। আমার হৃৎস্পন্দন বেড়ে যেত, মাথা গরম করে যে উত্তরগুলো দিতাম, সেগুলো হয় যুক্তির বিচারে খুব দুর্বল হতো অথবা প্রশ্নকর্তার প্রতি আমার বিদ্বেষটাই প্রতিফলিত করত। শুধু কি আমি এমন ছিলাম? না, আমি বেশির ভাগ মানুষকেই কোনো না কোনো বিষয়ে এমন আচরণ করতে দেখেছি। সব মানুষই নিজের বিশ্বাস আর জ্ঞানকে যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়—

‘এটা আমার কথা’
‘এটা আমার লেখা’
‘এটা আমার ধারণা’

যেন ধারণা আর ব্যক্তি মিলেমিশে একাকার। সমস্যাটা ঠিক এখানেই। যখন আপনি ভাববেন একটি বিশ্বাস আপনার গোটা অস্তিত্বকে ধারণ করছে, সেই বিশ্বাস ভাঙার মানে হলো আপনার অস্তিত্বকে বিপন্ন করা। সেই কাজটা তখন খুবই কঠিন হয়ে যায়। তাহলে কীভাবে সেই শিকল ভাঙা যায়?

আপনার চিন্তা–ভাবনা-ধারণা আর ব্যক্তি আপনি—এই দুই সত্তাকে আলাদা ভাবতে শিখুন। মনে করুন আপনার চিন্তা একটা আলাদা ব্যক্তি। একেকটি বিষয়ের চিন্তা বা বিশ্বাসকে একেকটি অবয়বে ভাবার চেষ্টা করে দেখুন। কোনোটি কিন্তু পুরো আপনি নন। আপনার কথার শব্দগুলোকে বদলে ফেলুন। যুক্তি দেওয়ার সময়, ‘আমি মনে করি’ না বলে বলুন, ‘এই প্রস্তাবনা বা মতবাদ অনুসারে...’। ‘আমার জানামতে...’ না বলে বলুন, ‘এই গবেষণার তথ্যানুযায়ী...’।

যদিও বক্তব্য-চিন্তা-ধারণা—সবই আপনার মাথা থেকেই বেরিয়েছে কিন্তু এই সজ্ঞানে বিশেষ শব্দচয়নের কারণে আপনার মনে হবে যে এই ধারণাটা ভুল হলেই আমি ভুল হয়ে যাব না। এই কাজের সমালোচনা মানে ব্যক্তি আমির সমালোচনা নয়। আপনার ব্যক্তিসত্তা থেকে আপনার চিন্তাসত্তাকে বের করে দিতে পারলে দেখবেন কোনো আক্রমণকেই আর ব্যক্তিগত আক্রমণ মনে হচ্ছে না। মনে হবে একটি প্রস্তাব ভুল হতেই পারে, তাতে ব্যক্তি হিসেবে আপনার মহত্ব কমছে না।

আমি গাড়ির ইঞ্জিনিয়ার। এমন সময়ে কাজ করছি, ইন্ডাস্ট্রিতে যখন খুব বড় ধরনের একটা বিপ্লব চলছে। চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি কীভাবে ধীরে ধীরে আইসি ইঞ্জিন থেকে পুরোপুরি বের হয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা চলছে। ইলেকট্রিক গাড়ি হবে ভবিষ্যতের অবলম্বন। স্বয়ংক্রিয় চালিত গাড়ি কেড়ে নেবে ড্রাইভিং পেশার লাখ লাখ চাকরি। কিন্তু এই গাড়ি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা বড় এক অংশ গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিশ্বাস করে না। এখন আপনি যদি তাদের এক রুমে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেকচার দিতে থাকেন যে কেন আইসি ইঞ্জিন খারাপ, কেন এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, তারা কিন্তু আপনার কথা বিশ্বাস করবে না। কারণ, এই বিশ্বাস তাদের ভবিষ্যতের চাকরি হারানোর কথা বলে। মানুষের মন বড়ই বিচিত্র। কেউ যদি আপনার কোনো কথায় সম্মতি না দেয়, তাহলে এর কারণ এটা নয় যে আপনি ঠিক, সে ভুল। বা সে ঠিক আপনি ভুল। বরং তার কারণ হলো সে যা বিশ্বাস করে, আপনি তা বিশ্বাস করেন না। আসল চ্যালেঞ্জ হলো সে কিসে বিশ্বাস করে তা খুঁজে বের করুন, কোন জিনিসকে সে গুরুত্ব দেয়, সেটা জানুন। আপনার প্রস্তাবনায় সেই জিনিসের প্রতিফলন ঘটান। যেমন ডেট্রয়েটের গাড়ির কারখানার শ্রমিকদের বিপন্ন পেঙ্গুইন বা পোলার বেয়ারের ছবি দেখিয়ে লাভ হবে না। যদি চাকরিটাই তাদের কাছে মুখ্য হয়, তাহলে তাদের দেখাতে হবে যে নবায়নযোগ্য শক্তির যে বিশাল চাকরির বাজার সামনে আসছে, তাতে শুধু তাদের নয়, তাদের পরবর্তী প্রজন্মের চাকরির অভাবও হবে না। এবার তারা আপনার কথার গুরুত্ব দেবে।

এ খাঁচা ভাঙব আমি কেমন করে?
আমরা আসলে আজকাল একটা বুদবুদে বাস করি। ফেসবুকে আমরা নিজেদের মতো মানুষদেরই বন্ধু বানাই। নিজের মতো মানুষদেরই টুইটারে ফলো করি। নিজেদের রাজনৈতিক বা ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে মিলে যায়, এমন দৈনিক পত্রিকা পড়ি কিংবা এমন চ্যানেলের খবর শুনি। এর মানে হলো আমাদের মতামতগুলো আগে যেভাবে পরীক্ষার মুখোমুখি হতো, এখন আর তা হয় না। কিন্তু এই অভ্যাসটা কতটা লাভজনক? একেবারেই নয়। আজ থেকে এই নিজের মতামতের এই অদৃশ্য খাঁচা ভাঙার চেষ্টা করুন। আপনার মতামতের সঙ্গে সব সময় একমত হয় না, এমন লোকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন, তাদের কথা শোনার চেষ্টা করুন।

‘নেটস্কেপ ব্রাউজার’–এর লেখক মার্ক আন্দ্রেসেনের একটি উক্তি আছে, ‘Strong beliefs, loosely held.’ কোনো আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে চাইলে সেটা শক্তভাবে বিশ্বাস করতে হবে, যাতে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা না হয়। কিন্তু সেই বিশ্বাসকে যথেষ্ট পরিবর্তনের পরিসর রাখতে হবে, যদি সত্যের মুখোমুখি সেটা না টিকতে পারে।
নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন, ‘কোনো সত্যটির মুখোমুখি দাঁড়ালে আপনার সবচেয়ে শক্তিশালী মতামত বা বিশ্বাসটিও টলে উঠবে?’ যদি আপনার উত্তর হয়, কোনো সত্যই আমার মতামতকে টলাতে পারবে না, তাহলে আপনি বিপদে আছেন। যদি সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও কোনো মানুষ তার একটি ধারণাকে পরিবর্তন করতে না চায়, তাহলে সংজ্ঞা অনুসারে সে মৌলবাদী।

পরিশেষে একটা কথা সবার মনে রাখা উচিত, যথেষ্ট সাহস এবং প্রতিজ্ঞা থাকলেই কেবল নিজের মতামতের বিপরীতে সত্যের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায়, সেটা সুবিধাজনক কিছু না–ও হতে পারে। কিন্তু মিথ্যার সুবিধাজনক চাদরের চেয়ে সত্যের শীতল হাওয়ার কাঁপন কিন্তু শ্রেয়।

লেখার সূত্র:
ওজান ভেরল হতে চেয়েছিলেন একজন রকেট বিজ্ঞানী। এই বিষয়ে তিনি ডিগ্রিও নেন। কিন্তু যুক্তি ও আইনের মারপ্যাঁচের প্রতি দুর্বলতা থেকে তিনি তাঁর বিষয় ছেড়ে আইনে ডিগ্রি নিয়ে এখন আইন বিষয়ে অধ্যাপনা করছেন। তাঁর সঙ্গে আমার অনলাইনেই যোগাযোগ হয়। ভদ্রলোকের চিন্তাভাবনা আর লেখার প্রতি আমার আগ্রহের কথা আর আমার সামান্য লেখালেখির কথা জানাতেই তিনি আমাকে বাংলায় তাঁর লেখাগুলোকে ভাবানুবাদ করার অনুমতি দেন। তাঁর সদ্য প্রকাশিত বই ‘The Democratic Coup D'état’ কিছু অংশ নিয়ে একটা কলামের বাংলা ভাবানুবাদের চেষ্টা করা হলো। মূল লেখার লিঙ্ক: https://goo.gl/A4PZhP

*লেখক: হাইব্রিড ও ইলেকট্রিক গাড়ি বিশেষজ্ঞ, জেনারেল মটরসে কর্মরত