ওল্ড ইয়েলার - রবার্ট স্টিভেনসন

ওল্ড ইয়েলার

 পরিচালক: রবার্ট স্টিভেনসন

প্রথম প্রকাশ: ১৯৫৭

ধরন: অ্যাডভেঞ্চার

ব্যাপ্তি: ৮৩ মিনিট

 কাহিনি:  অনেক অনেক আগে   শিয়াল আর কুকুর নাকি বন্ধু ছিল। কিন্তু শুধু কুকুরই কেন মানুষের বন্ধু, সে ব্যাখ্যাটি আফ্রিকার এক উপকথায় উঠে এসেছে সুন্দরভাবে। এ উপকথা অনুযায়ী, শিয়াল আর কুকুর একসময় বনে থাকত।  প্রচণ্ড ঠান্ডা আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় একদিন বন থেকে লোকালয়ে চলে এসেছিল কুকুর। মানুষের বশ্যতা মেনে ঝেড়ে ফেলেছিল গায়ের বুনো গন্ধ। সেই থেকে শিয়াল আর কুকুর পরস্পরের শত্রু। ওল্ড ইয়েলারের কাহিনিতেও দেখা যায় এমনি এক বুনো কুকুর। একদিন সে হাজির হয় যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের কোটস পরিবারের আঙিনায়। কুকুরটি বয়স্ক আর গায়ের রং হলুদ (ইয়োলো) হওয়ায় তার নাম হয় ওল্ড ইয়েলার। শুরুতে চার সদস্যের কোটস পরিবারের সবচেয়ে ছোটজন আর্লিসের বন্ধু বনে যায় ইয়েলার। কিন্তু বড় ভাই মানে ১৬ বছরের ট্রাভিস কিছুতেই পছন্দ করতে পারে না কুকুরটিকে। আর্লিসের আপত্তি সত্ত্বেও কুকুরটিকে তাড়াতে উঠেপড়ে লাগে ট্রাভিস। কিন্তু একটি ঘটনা তার সব হিসাব পাল্টে দেয়।

হয়েছে কী, সেবার তাদের বাবা কদিনের জন্য গেছেন শহরে। বাড়িতে শুধু মা, ট্রাভিস আর আর্লিস। খামার আর পরিবারের দায়িত্ব নেয় ট্রাভিস। কিন্তু টেক্সাসের বুনো পশ্চিমের সেই প্রতিকূল পরিবেশে কাজটা মোটেও সহজ নয়। যখন তখন সেখানে হামলা চালায় হিংস্র জন্তু-জানোয়ার। এভাবে একদিন খামারে আক্রমণ করে বসে হিংস্র ভালুক। জানবাজি রেখে আর্লিসকে বাঁচায় ওল্ড ইয়েলার। এ আত্মত্যাগ দেখে কুকুরটিকে ভালোবাসতে শুরু করে ট্রাভিস। এরপর ইয়েলারকে কে বেশি ভালোবাসতে পারে, তা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে শুরু হয় এক অলিখিত প্রতিযোগিতা। বিনিময়ে তাদের একের পর বিপদ থেকে উদ্ধার করে বিশ্বস্ত কুকুরটি। একবার বন্য শুয়োর শিকারে গিয়ে জানোয়ারদের হামলায় গুরুতর আহত হয় ট্রাভিস। সেখানেও একদল শুয়োরের সঙ্গে মরণপণ যুদ্ধ করে তাকে উদ্ধার করে ডাকাবুকো ইয়েলার। তবে এবার গুরুতর আহত হয় কুকুরটি। অবশ্য এ যাত্রায় অল্পের জন্য বেঁচে যায় দুজনই।

এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এক রাতে ট্রাভিসদের খামারে আক্রমণ করে এক পাগলা নেকড়ে। পড়িমরি করে বন্দুক নিয়ে ছুটে যায় ট্রাভিস আর তার মা। কিন্তু তার আগেই নেকড়েটিকে ধরাশায়ী করে ওল্ড ইয়েলার। তবে নেকড়ের কামড়ে আহত হয় কুকুরটি। মা বুঝতে পারেন, কুকুরটিও এবার জলাতঙ্ক রোগে পাগল হয়ে যেতে পারে। পরদিনই মায়ের আশঙ্কা সত্যি হয়। পাগল হওয়ার সব লক্ষণ ফুটতে থাকে ইয়েলারের মধ্যে। ট্রাভিস, আর্লিস কিংবা মিসেস কোটস কাউকেই আর চিনতে পারে না একসময়ের প্রভুভক্ত কুকুরটি। তাদেরও আক্রমণ করতে এগিয়ে আসে সে। এ ঘটনা ১৮৬০ সালের। তখনো জলাতঙ্ক রোগের টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তাই একমাত্র উপায় প্রিয় ইয়েলারকে গুলি করে মেরে ফেলা। কিন্তু কিছুতেই মেনে নিতে পারে না ট্রাভিস। উভয় সংকটে পড়ে সে: একদিকে পরিবার আর আরেক দিকে প্রিয় বন্ধু ইয়েলার। পরিবারের সবার স্বার্থে ট্রাভিস কি শেষ পর্যন্ত এই কঠিন কাজটি করতে পেরেছিল? সে প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে দেখে নিতে পারো ওয়াল্ট ডিজনির  ওল্ড ইয়েলার  মুভিটি। মার্কিন লেখক ফ্রেডরিক বেঞ্জামিন জিপসনের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত এ মুভিটি পুরোনো হলেও ক্লাসিকের মর্যাদা পেয়েছে।