ধনকুবেরদের বইপড়া

অপরাহ উইনফ্রে
অপরাহ উইনফ্রে

প্রায় সব সফল ধনকুবেরের সাধারণ একটা বৈশিষ্ট্য আছে। কী সেটা? তাঁরা প্রচুর বই পড়েন। আজ তাঁরা যে পর্যায়ে পৌঁছেছেন, সে পর্যায়ে যেতে বই পড়ার যে ভীষণ একটা ভূমিকা রয়েছে তাঁদের জীবনে, তা প্রত্যেকেই একবাক্যে স্বীকার করেন। সফল ধনকুবেররা কেবল মাঝেমধ্যে বই পড়তেন তা না, তাঁরা নিয়মিত প্রচুর বই পড়েছেন এবং এখনো পড়েন।

ওয়ারেন বাফেট
ওয়ারেন বাফেট

সফল মার্কিন ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট বলেছেন, ‘আমি কেবল অফিসে গিয়ে বসি আর সারা দিন পড়াশোনা করি।’ তিনি রীতিমতো হিসাব-নিকাশ করে বের করেছেন যে তাঁর কাজের দিনগুলোর শতকরা ৮০ ভাগ তিনি ব্যয় করেন পড়াশোনা ও চিন্তাভাবনা করে। অপরদিকে, খুব অল্প বয়স থেকেই বই পড়ার প্রতি তীব্র ভালোবাসা রয়েছে জনপ্রিয় মার্কিন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব অপরাহ উইনফ্রের। তিনি বলেছেন, ‘বই পড়াটা আমার জন্য একধরনের স্বাধীনতার ব্যাপার। আমার বয়স যখন তিন, তখন থেকে আমি পড়তে শিখেছি। এরপর ধীরে ধীরে আবিষ্কার করলাম, মিসিসিপিতে আমাদের খামারবাড়ি ছাড়াও বিশাল একটা জগত্ রয়েছে।’ আর মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসকে কে না চেনে। তিনি তাঁর সফলতার সব কৃতিত্ব দিয়েছেন বইপড়াকে। তিনি বলেছেন, ‘আমি যখন অনেক ছোট, তখন থেকেই আমার অনেক অনেক স্বপ্ন ছিল। আমি প্রচুর বই পড়তাম। আমার মনে হয়, আমার স্বপ্নগুলো গড়ে উঠেছিল বইপড়া থেকেই।’ 

বিল গেটস
বিল গেটস

আচ্ছা, এই বিখ্যাত ধনকুবেররা কেন এত বই পড়ার কথা বলেন? কী হবে এই পড়াশোনা করে?—এমন প্রশ্ন তোমাদের মনে জাগতেই পারে। তাই এবার তাহলে বই পড়ার কিছু গুণাগুণ বলা যাক।

১. ধরো, তুমি কোনো একজন সফল গুণী মানুষের গুণমুগ্ধ হয়ে আছ। তুমি যদি তাঁর সম্পর্কে পড়াশোনা করো, তবে তাঁর জীবনে তিনি কী কী অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন, কেমন সব চড়াই-উতরাই পার হয়ে তিনি সফল হয়েছেন—এসব জানতে পারবে। সেসব তোমার জীবনেও কাজে লাগাতে পারবে।

২. নতুন কোনো বুদ্ধি লাগবে? বই পড়ো। নতুন অনেক বুদ্ধিশুদ্ধি কিন্তু পুরোনো আমলের ধ্যানধারণা থেকেই পাওয়া যায়। তাই যত পড়াশোনা করবে, তত কল্পনাশক্তি বাড়বে, উদ্ভাবনক্ষমতা বাড়বে, বুদ্ধিশুদ্ধিও বাড়বে দ্রুতগতিতে।

৩. তোমাকে পাত্তা দিচ্ছে না? থাক, মন খারাপ কোরো না। বই তোমাকে সব সময় পাত্তা দেবে। বই হাতে নিয়ে বসে যাও। কত্ত কিছু জানতে পারবে। ধীরে ধীরে দেখবে, অনেক বিষয় নিয়েই তুমি তোমার মতামত দিতে পারছ, দারুণ দারুণ শব্দ সাজিয়ে কথা বলতে পারছ। তখন দেখবে, যারা তোমাকে গণনায় ধরেনি, তারাই এসে বসে যাবে তোমার জ্ঞানগর্ভ কথা শোনার জন্য।

৪. নানা কারণে মনটা অস্থির হতেই পারে। আর এই বয়সটাই যা উড়ুউড়ু! তবু বই হাতে পড়তে বসে যাও একদম মনোযোগ দিয়ে। একসময় তুমি নিজেই বুঝতে পারবে, কেমন যেন একধরনের প্রশান্তি ভাব আসছে। 

৫. বই পড়ার আনন্দের কথা আর কী বলার আছে! সেই আনন্দের কথা সবাই আমরা কমবেশি জানি। মজার মজার বই পড়ার সময় অন্য সময়ের চেয়ে বেশি বেশি ডোপামাইন হরমোনের নিঃসরণ হয়। তাই খেয়াল করে দেখো, সুখী-সুখী অনুভূতি আসে।

এ তো গেল বই পড়ার মাত্র পাঁচটা গুণাগুণ। এ ছাড়া আরও অনেক গুণ আছে। বাকি সব জানতে এখনই বই পড়তে বসে যাও।

তথ্যসূত্র: বিজনেসইনসাইডার ডটকম