তারা তিনজন

অলংকরণ: মামুন হোসাইন

রোল ১৩! উঠে আয়!

তমিজউদ্দিন স্যারের ফ্যাসফাসে কণ্ঠ শুনে ভয়ে ভয়ে উঠে দাঁড়ালাম। পাশে বসা আশিক আলতো করে পিঠ চাপড়ে বলল, ‘যা ব্যাটা, ভয় নাই। ভালোই পাবি।’ শুনে ভয় আরও বাড়ল। ও যা বলে তার উল্টোটাই হয় সব সময়। আজ কী হবে কে জানে। স্যারের লেকচার টেবিলের সামনে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়ালাম। স্যার কড়া চোখে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। হাতে ক্লাস টেস্টের সাধারণ গণিত খাতা। ফ্যাসফ্যাসে কণ্ঠে স্যার বললেন, কত পেয়েছিস?

—জানি না স্যার।

—কেন জানিস না? পরীক্ষা তুই দিস নাই? ভূত এসে পরীক্ষা দিয়ে গেছে?

—জি না স্যার। আমিই দিয়েছি।

—তাহলে? বল কত পেয়েছিস? একটা ক্লু দিই। শেষে শূন্য আছে।

কী বিপদ। আমি কীভাবে জানব কত পেয়েছি। পরীক্ষা দেওয়া আমার কাজ। স্যারের কাজ নাম্বার দেওয়া। আমারটা তো ঠিকমতোই করলাম, স্যার ঝামেলা করছেন কেন? শেষে যেহেতু শূন্য আছে, হয়তো পঁচিশে বিশ পাব। পরীক্ষা তো ভালোই দিয়েছিলাম। খুব খারাপ হলে না হয় দশ পেতাম। খুব খারাপ তো হয়নি। সাহস করে বলেই ফেললাম, মনে হয় বিশ পেয়েছি স্যার।

—বিশ? না বিষ? হেহেহে। এই দেখ।

স্যার এমনভাবে খাতাটা উঁচু করে ধরলেন, যেন ক্লাসের সবাই দেখতে পায়। খাতায় বড় করে দুটো শূন্য। খুব যত্ন করে শূন্য দুটো দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে কম্পাস দিয়ে আঁকা। চাপা গুঞ্জন শুনলাম ক্লাসে। বাঁ সারির প্রথম বেঞ্চে বসা আনিলা আর তার বান্ধবীরা মুখ ঢেকে হাসতে লাগল। এতে হাসির কী আছে বুঝলাম না। সাকিব আল হাসানও শূন্য রানে আউট হয়। যদিও আমার শূন্য পাওয়ার কথা না...হঠাৎ স্যারের প্রচণ্ড চড়ে মাথাটা ঘুরে উঠল। পড়ে যেতে যেতে কোনোমতে ঘুরে দাঁড়ালাম। গালটা টনটন করছে ব্যথায়। স্যার বললেন, কত বড় সাহস! নিজে অঙ্কের নিয়ম বানাস! তুই কি পিথাগোরাসের ভাতিজা? কতবার বলেছি, আমি যে নিয়মে অঙ্ক করাই, সেই নিয়মে অঙ্ক করবি। কথা কানে যায় না?

আমি মাথা নাড়লাম।

—কথা কানে না গেলে আমার বাসায় আসবি। চড় মেরে কান ঠিক করে দেব। বাসা চিনিস?

—জি স্যার। চিনি।

—বাসায় গিয়ে খাতাটা মা-বাবাকে দেখাবি। আর গাল দেখিয়ে বলবি, স্যার অটোগ্রাফ দিয়েছে। যা। জায়গায় বস।

ক্লাস শেষে ক্যাপ্টেনকে বলে বাথরুমে এলাম। আয়নায় বিভিন্ন স্যারের নামে আজেবাজে লেখা। তার ভেতর দিয়ে দেখলাম, গালটা বেশ ফুলে গেছে। স্কুলের যে কেউ দেখলেই বুঝবে তমিজউদ্দিন স্যার অথবা জালাল স্যারের চড় খেয়েছি। আমাদের স্কুলে এ দুজনের চড় বেশ প্রসিদ্ধ। তবে তমিজউদ্দিন স্যারের চড়ই আমাকে বেশি খেতে হয়। ইদানীং তিনি মনে হয় টার্গেট করেছেন আমাকে। বেশ কয়েকবার ইঙ্গিত দেওয়ার পরও আমি তার বাসায় পড়তে যাই না। টার্গেট করার জন্য এটাই যথেষ্ট। কেন পড়ব তার কাছে? তিনি অঙ্ক মুখস্থ করে আসেন। ক্লাসে ঘুমান। যদিও এসব কথা মা-বাবা বুঝতে চান না। তাঁরা চান আমি স্যারের কাছে পড়ি। অবশ্য মা-বাবা কোনো ছেলের কথাই পাত্তা দেন না। জানালার গ্রিলে মাথা ঠেকিয়ে ভাবছিলাম, হঠাৎ হাতে সুড়সুড়ি লাগতেই লাফিয়ে উঠলাম। বেশ বড়সড় এক মাকড়সা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চিৎকার দিলাম আমি। মাকড়সাকে আমি তমিজউদ্দিন স্যারের চেয়েও বেশি ভয় পাই। ছুটে বেরোতে গিয়ে পিছলে পড়ে গেলাম মেঝেতে। মাকড়সাটা মনে হয় আরও এগিয়ে এল। হাতের কাছে ঝাড়ু পেয়ে ওটা দিয়েই মারতে গেলাম ওটাকে। কিন্তু কী অদ্ভুত! মাকড়সাটা বলল, অ্যাই! ঝাড়ু ফেলো। ঝাড়ুতে আমার ব্যাপক অ্যালার্জি।

ঝাড়ু ফেলতে হলো না। এমনিতেই পড়ে গেল। হাঁ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। পা বোধ হয় মেঝের সঙ্গে আটকে গেছে। মাকড়সা আবার বলল,

—তুমি স্পাইডারম্যানকে ভয় পাও না, আমাকে ভয় পাও কেন?

বলে কী! আজব ব্যাপার তো।

—আমার নাম ম্যাক। আমি তোমাদের এই বাথরুমেই থাকি। তোমাকেও ভালোমতো চিনি। কয়েক দিন আগেই তো তুমি একবার বাথরুমে ঢুকলে। তারপর...

—না থাক। প্লিজ।

তড়িঘড়ি করে বললাম আমি। সেদিন বাথরুমে হঠাৎ প্যান্ট ছিঁড়ে যাওয়ায় যা বিপদে পড়েছিলাম। সে কথা দেখি এই ম্যাকও জানে। দেখেছে নাকি ঘটনাটা! বিপদ আর বিপদ।

—ইয়ে এ বিষয়টা অফ থাক?

—আচ্ছা।

মাকড়সা তার দুটো পা দিয়ে তবলা না কী যেন একটা বাজানোর মতো করে বলল, তুমি কিন্তু অযথা শূন্য পেলে। অঙ্ক ঠিকই ছিল। খাতা না দেখলেও আমি জানি। খাতা রাখার আলমারিতে আমার পরিচিত এক উইপোকা পুরো পরিবার নিয়ে থাকে। ওর কাছেই শুনলাম।

—কীইই!

—হ্যাঁ। সে আবার অঙ্ক ভালো বোঝে তো। তোমাদের অঙ্ক বই সে অনেক আগেই খেয়ে শেষ করে ফেলেছে। এগুলোতে এখন আর মজা নেই বলে সে এখন উচ্চতর গণিতের বই খাচ্ছে। এটা নাকি বেশ সুস্বাদু।

—ও।

—তো ক্লাসে যাও। এতক্ষণ বাথরুমে বসে থাকলে চড় খেয়ে আরেকটা গালও ফুলে যাবে। আমি তমিজউদ্দিন স্যারের ব্যাপারটা দেখছি। দেখি কী করা যায়।

—জি।

অলংকরণ: মামুন হোসাইন

এক দৌড়ে ক্লাসে এলাম। ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। দেরিতে আসায় পুরো সময় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো।

আজ দিনটাই খারাপ। ছুটির পর বাসায় ফেরার পথে একটা রিকশাও পেলাম না। এই রোদের মধ্যে এত ভারী ব্যাগ নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শরীরের সব পানি বেরিয়ে গেল একেবারে। তার ওপর কোত্থেকে যেন এক বাদামি কুকুর এসে জুটেছে। পিছুই ছাড়ছে না। গলির মাথায় এসে কুকুরটা একেবারে গা ঘেঁষে হাঁটতে লাগল। এত রাগ হলো, কষে এক লাথি দিলাম কুকুরটা পেটবরাবর। কিন্তু ঘেউ ঘেউ না করে কুকুরটা সরাসরি আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কিরে ভাই, লাত্থি দিলা ক্যান?

আর না দাঁড়িয়ে দৌড়ে গলির ভেতর ঢুকে গেলাম আমি। হাঁপাতে হাঁপাতে নির্জন রাস্তাটার মাঝামাঝি এসে দেখি কুকুরটা আগে থেকেই দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখেই বলল, তোমরা ইয়াং জেনারেশন চান্স পেলেই যে আমাদের লাত্থি মারো, ঢিল মারো, এইটা কিন্তু ঠিক না। তুমি একা হাঁটছ, তাই ভাবলাম একটু সঙ্গ দিই। ভালো সঙ্গেরও দরকার আছে। কবি বলেছেন, সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। পড়ো নাই?

আমি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলাম। আজকে হচ্ছে কী এসব? কুকুরটা কী বুঝল কে জানে, সঙ্গে সঙ্গে বলল, অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রতিদিনই দেখি ভারী ব্যাগটা নিয়ে মাথা নিচু করে হেঁটে স্কুলে যাও। খারাপই লাগে। কত কষ্ট তোমাদের।

একটা পা সামনে এনে চোখ মোছার মতো ভঙ্গি করল কুকুরটা।

—এভাবে চলতে থাকলে তো তোমাদের মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে যাবে। দাও, ব্যাগটা আমার কাঁধে দাও। আরে এত লজ্জার কী আছে!

কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না। ছুটে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু পা যেন চলছেই না। মনে হচ্ছে অন্য কেউ নিয়ন্ত্রণ করছে আমাকে। কীভাবে যে ব্যাগটা খুলে কুকুরটার পিঠে বসিয়ে দিলাম, বলতে পারব না। বিশাল কুকুরটা কায়দা করে ব্যাগের বেল্টটা নিজের সঙ্গে আটকে হাসিমুখে বলল, চলো আগাই।

কী করব! কুকুরের পেছন পেছন হাঁটা দিলাম। কুকুরটা বিজ্ঞের মতো মাথা নেড়ে বলতে লাগল, তোমাদের বাবা-মা একটা সিম্পল বিষয় বোঝে না। স্কুলে যাবা আনন্দ করার জন্য। খেলতে খেলতে শিখবা। এটা তো কারাগার না, তাই না? আর ব্যাগে এসব কী বই? এত ভারী কেন? চরম শত্রুকেও তো এই রকম ভারী জিনিস বহন করার মতো শাস্তি কেউ দেয় না।

আমার গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হলো না। বাসার কাছে চলে এসেছি প্রায়। কুকুরটা ব্যাগ নামিয়ে বলল, আজকে যাই। আবার দেখা হবে।

মনে মনে বললাম, আর দেখা না হলেই ভালো।

বাসায় ঢুকে আজকের দিনটা নিয়ে ভাবলাম। ব্যাপারটা মা-বাবাকে খুলে বলা উচিত। সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরতেই তাদের খাতা দেখালাম। বোঝালাম স্যারের নিয়মে না করলেও অঙ্ক ঠিক ছিল। স্যার অযথা চড় মেরেছেন। সব শুনে মা বললেন, ডাবল জিরো পাওয়ায় একটা চড় মেরে স্যার ঠিক করেননি। উনার উচিত ছিল দুই বা ততোধিক চড় মারা। একজন দায়িত্বশীল লোক হয়ে উনি কেন একটা চড় মারলেন বুঝলাম না।

বাবা বললেন, তুমি আগামী মাস থেকে স্যারের কাছে পড়তে যাবি। বিশেষ যত্ন না নিলে তোদের মতো বাঁদর লাইনে আসে না।

এরপর আর বাকি ঘটনা বলার কোনো মানে হয় না। আমি নিজের ঘরে ফিরে গেলাম। কাল আবার তমিজউদ্দিন স্যারের ক্লাসে যেতে হবে ভাবতেই মন খারাপ হয়ে গেল। শুয়ে শুয়ে ভাবলাম, বাবা-মা কেন আমাদের বোঝে না?

২.

গতকালের কথা ভেবে আজ সকাল থেকেই হাসি পাচ্ছিল। কী সব উল্টাপাল্টা কল্পনা করেছি! তমিজউদ্দিন স্যারকে আজ ক্লান্ত দেখাচ্ছে। ফ্যানের নিচে দাঁড়িয়ে রুমাল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে স্যার সবার উদ্দেশে বললেন, ভয়াবহ অবস্থা বুঝলি! কুকুর তাড়া করেছিল আজ। কোনোমতে দৌড়ে বেঁচেছি। উফ! সিটি করপোরেশন কি কুকুর নিধন অভিযান বন্ধ করে দিয়েছে?

স্যারের প্রিয় ছাত্রী আনিলা বলল, ওমা কী ভয়ংকর! কী কুকুর স্যার? দেশি না বিদেশি?

—আরে দেশি। বাদামি টাইপের নেড়ি কুকুর! বদমাইশ কুত্তা!

স্যারের কথা শুনেই চমকে উঠলাম। এটা কি সেই বাদামি কুকুরটা? ধুর। ঢাকার ৭০ ভাগ কুকুরের রং বাদামি। আমি যে কী! গতকাল মনের ভুলে কী না কী কল্পনা করেছি, সেটা আবার সত্যি ভাবছি। ছিঃ।

রুমাল পকেটে ঢুকিয়ে স্যার ব্ল্যাকবোর্ডে লিখলেন, ‘প্রশ্নমালা ৩.২’। বোর্ডের ওপর থেকে ডাস্টার নিতে গিয়েই বিকট শব্দে চেঁচিয়ে উঠলেন স্যার। ক্লাস ক্যাপ্টেন ছুটে গেল। স্যার কাঁপতে কাঁপতে বললেন, ‘মাকড়া! মাকড়সা কামড় দিয়েছে।’ ক্যাপ্টেন বলল, ‘স্যার, এটা সাধারণ মাকড়সা। এগুলো কামড়ায় না। এটা হলো আর্থোপ্রোডা পর্বের অমেরুদণ্ডী শিকারি কীটবিশেষ। যার বৈজ্ঞানিক নাম...’

—চোপ! ধমকে উঠলেন স্যার।

বাদামি কুকুর, মাকড়সা...আচ্ছা, এই মাকড়সা ম্যাক না তো? হতে পারে। সে বলেছিল স্যারের ব্যাপারটা দেখবে। আমার মধ্যে কীভাবে যেন দুষ্টু বুদ্ধি এল। উঠে দাঁড়িয়ে বললাম, স্যার, ব্যাপারটা হালকাভাবে নেওয়া ঠিক হবে না। কিছু কিছু মাকড়সা খুব বিষাক্ত হয়। বইয়ে পড়েছি। মাকড়সার কামড়ে পুরো শরীর অবশ হয়ে যায়। তারপর মৃত্যুর কোলে...’

—বেয়াদব! ফাজলামো করিস আমার সঙ্গে? অ্যাই ক্যাপ্টেন, বান্দরবান থেকে অর্ডার দিয়ে বানিয়ে আনা বেতটা নিয়ে আয়।

বলামাত্র বেত আনতে ছুটে গেল ক্যাপটেন। এটা তার সবচেয়ে পছন্দের কাজ। বিভিন্ন উপলক্ষে মাঝে মাঝেই সে স্যারকে বলে, ‘বেত আনব স্যার?’ স্যার মানা করলে হতাশ হয় সে। আর রাজি হলে তো কথাই নেই, নাচতে নাচতে বেত আনতে যায়। এখন যেমন গেছে।

স্যার হাত কচলাতে কচলাতে বললেন, তুই যে শুধু অঙ্কের নিয়ম বানাস তাই না, মিথ্যে গল্পও বানাস। আমি নিশ্চিত, কুকুর লেলিয়ে দেওয়াটাও তোর কাজ। ডাস্টারের জায়গায় মাকড়সাও তুই রেখেছিস। যাতে আমি অপদস্থ হই, তাই না? তোকে আজ স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ শাস্তি দেওয়া হবে। মাঠে দাঁড় করিয়ে পেটাব তোকে। যাতে পুরো স্কুল দেখে, অন্যায়ের পরিণতি!

ভয় পেয়ে গেলাম। ঘটনা এতদূর গড়াবে তা কে জানত। স্যার সব রাগ আমার ওপর ঝাড়ছেন। ক্যাপ্টেন বেত এনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্যারের হাতে তুলে দিয়েছে। স্যার হাত ধরে টানতে টানতে আমাকে বাইরে নিয়ে এলেন। ক্লাসের সবাই ভিড় করেছে বারান্দায়। স্যার বললেন, মুরব্বিদের কথা কানে নিবি না, আবার বেয়াদবি করবি! বেয়াদবি আমি সহ্য করি না। কত গরু পিটিয়ে মানুষ করেছি তার হিসাব পরিসংখ্যান বোর্ডেও নেই। তোদের মতো বেয়াড়া গরু পিটিয়ে মানুষ করাই আমার কাজ...

বলতে না বলতেই কোত্থেকে যেন বিশাল আকারের এক গরু ‘হাম্বা হাম্বা’ করে ছুটে আসতে লাগল স্যারের দিকে। বোধ হয় পাশে কোথাও ঘাস খাচ্ছিল। স্যার হতভম্ব হয়ে বললেন, একি!

—গরু স্যার, গরু!

কথা শেষ হওয়ার আগেই স্যার দৌড় শুরু করলেন। গরুটাও শিং বাগিয়ে স্যারের পেছনে পেছনে ছুটছে। বোধ হয় পুরো মাঠই চক্কড় দেবে। স্যারের হাত থেকে বেতটা মাটিতে পড়ে গেছে অনেক আগেই। আমি আশপাশে তাকালাম। দূরে গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে সেই বাদামি কুকুরটা। ক্লাসরুমের দিকে তাকিয়ে দেখি হাসছে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা সবাই। এতদূর থেকে ম্যাককে দেখা গেল না। তবে আমি নিশ্চিত, এখন থেকে নিয়মিতই দেখা হবে।