ফিনিয়াস অ্যান্ড ফার্ব

১০৪ দিনের লম্বা গ্রীষ্মকালীন ছুটি। স্কুল আর পড়াশোনার নিয়মমাফিক রুটিন থেকে বেরিয়ে এসে বিশাল এই ছুটিতে কী করা যায়? টিভি দেখা, কম্পিউটার গেমস খেলা, নাকি ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই দিন পার করে দেওয়া? উঁহু! এর কোনোটাই মানবে না দুই ভাই ফিনিয়াস ও ফার্ব। লম্বা এই ছুটি হেলিয়ে-ফেলিয়ে পার করতে নারাজ তারা। তাই প্রতিটা দিনই তাদের কাছে একেকটা অ্যাডভেঞ্চার। নিজেদের বুদ্ধি খাটিয়ে একেক দিন তারা আবিষ্কার করে একেক অদ্ভুত যন্ত্র কিংবা খেলনা। নিজেরাই তৈরি করে নিজেদের মিশন এবং সেই মিশন সফল করার জন্য আরও কিছু নতুন আবিষ্কার। কখনো কখনো তাদের মিশনগুলো হয় বন্ধু কিংবা অন্য কাউকে সাহায্য করার জন্য, আবার কখনো কখনো শুধু নিজেদের একঘেয়েমি দূর করার জন্য। দুই ভাইয়ের নতুন সব আবিষ্কার আর ছোটখাটো নানান অ্যাডভেঞ্চার নিয়েই ডিজনির অ্যানিমেশন সিরিজ ‘ফিনিয়াস অ্যান্ড ফার্ব’।

একদিন দুপুরে কোনো কাজকর্ম না পেয়ে ফিনিয়াস ও ফার্ব বসে ছিল একটি গাছের নিচে। গ্রীষ্মের এত সুন্দর দিনগুলোয় তাদের এভাবে বসে থাকতে হবে, তারা ভাবতেই পারে না! ফিনিয়াসের মতে, তাদের দিনগুলো হওয়া উচিত রোলারকোস্টার রাইডের মতো উত্তেজনাপূর্ণ। রোলারকোস্টার বলতেই ফিনিয়াসের মাথায় চলে এল ফাটাফাটি এক বুদ্ধি। একটা আস্ত রোলারকোস্টার বানিয়ে ফেললেই বা কেমন হয়? ফার্ব বরাবরই চুপচাপ ধরনের। সে কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী! তাই যেই ভাবা সেই কাজ। দুই ভাই মিলে লেগে গেল বিশাল এক রোলারকোস্টার বানানোর কাজে। বালু, হাতুড়ি, মই নানা রকমের সরঞ্জাম সংগ্রহে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ঠিক এ সময় তাদের ‘সামার-প্ল্যান’ চোখে পড়ে বোন ক্যান্ডিসের। ক্যান্ডিস দুই ভাইয়ের উদ্ভট কাজকর্মে রীতিমতো বিরক্ত! এই অবস্থা দেখার পর তাই তার মেজাজ আর ঠিক থাকল না। আজকে যে করেই হোক, তাদের আম্মুর কাছে ভাইদের দুষ্টু কর্ম ধরা পড়তেই হবে! তখন ক্যান্ডিসও লেগে পড়ে তাদের বকা খাওয়ানোর প্ল্যানে। শেষ পর্যন্ত কী হয় তা জানতে দেখে ফেলো ফিনিয়াস অ্যান্ড ফার্বের প্রথম এপিসোড বা পর্ব ‘রোলারকোস্টার’। অ্যানিমেশনটির আরেকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হচ্ছে পেরি দ্য প্লাটিপাস। দুই ভাইয়ের পোষা প্লাটিপাস অত্যন্ত বুদ্ধিমান। সে হচ্ছে একটি সিক্রেট এজেন্ট। মুখ থেকে বিচিত্র ধরনের শব্দ করা ছাড়া পেরি কোনো কথা বলে না। সায়েন্টিস্ট ডক্টর ডুফের কুমতলবে বিঘ্ন ঘটানোই তার মূল কাজ। প্রায় সব পর্বেই দেখা যায়, ফিনিয়াস তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। আর তখনই পেরি চলে যায় তার সিক্রেট এজেন্টের কাজে। এ ছাড়া ফিনিয়াস এবং ফার্বের গণিতপ্রিয় বন্ধু বালিজিত্, ক্যান্ডিসের বন্ধু জেরেমি, ফিনিয়াসের বান্ধবী ইসাবেলা, কেউই বাদ যাবে না উল্লেখযোগ্য চরিত্র বলতে গেলে। এই অ্যানিমেশনের প্রতি সিজনেই নতুন কিছু চরিত্র যোগ হয়, যারা একেকজন একেকটি পর্বে প্রাধান্য পায়। তবে প্রতিটি চরিত্রই মজার ও হাস্যরসপূর্ণ।

ফ্যামিলি সিরিজ কিংবা ছোটদের সিরিজ হিসেবে জনপ্রিয়তা থাকলেও সাধারণ কার্টুনভক্তরা ‘ফিনিয়াস অ্যান্ড ফার্ব’ দেখতে পিছিয়ে থাকে না। পরিপক্ব আইডিয়া ও সংলাপের জন্য সব বয়সের মানুষই এ সিরিজ বেশ উপভোগ করে। সিরিজটির সবচেয়ে উপভোগ্য ব্যাপার হলো, প্রায় প্রতিটি পর্বেই সামঞ্জস্যপূর্ণ এক বা একাধিক গান থাকে। গানগুলো বেশ চমত্কার। এমন একটি গানই তোমার মন ভালো করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই তুমিও যোগ দিতে পারো ফিনিয়াস এবং ফার্বের মজার সব অ্যাডভেঞ্চারে। মোট চারটি সিজনের এই অ্যানিমেশনটিতে দুইশর বেশি পর্ব রয়েছে। এই লিঙ্কে গিয়ে সিজন ওয়ান থেকে দেখা শুরু করে দিতে পারো। সাইটটি ঘুরে ফিনিয়াস অ্যান্ড ফার্ব মুভিও পেয়ে যাবে তুমি।

তথ্যসূত্র: আইএমডিবি