উত্তর আমেরিকার বাংলাদেশিদের বড়দিন

বড়দিন পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য চলছে মহড়া
বড়দিন পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য চলছে মহড়া

উত্তর আমেরিকায় বড়দিনকে ঘিরে শুরু হয়ে গেছে নানা আয়োজন। বিপণিবিতান সেজেছে নানা রঙে। রঙে-বেরঙে সজ্জিত বিপণিতে বেড়ে গেছে মানুষের কেনাকাটা। সে সঙ্গে আলোকসজ্জায় সেজে আছে মানুষের বাড়িঘর। মেসিস, সিয়ার্স, টার্গেট, আর্মি-নেভি, কেমার্ট, খোলস, জেসিপ্যানিসহ নানা কোম্পানি বিশেষ ছাড় দিয়ে তাদের পণ্য বিক্রি করছে। কোথাও কোথাও ২০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ে তাদের পণ্য বিক্রি করছে। এমনি আমেরিকানরা কেনাকাটা বেশি করে থাকে। এরপর যদি হয় ২০-৫০ পার্সেন্ট সেল, তাহলে তো কথাই নেই, ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে বিপণিতে। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ‘সেল’ হলেই এরা জিনিস কিনবেই।
অন্যদিকে বাড়িওয়ালারা বসে নেই। বাড়ির আঙিনা থেকে শুরু করে ঘরের চাল, কার্নিশ, জানালায় জ্বলছে হরেক রঙের বাতি। কারও কারও বাড়ির সামনে গোসালা, বড় বড় সান্তা, হরিণসহ নানা রকমের স্ট্যাচু। বাড়িগুলো সাধারণত সাজানো হয় নভেম্বরের শেষ সপ্তাহের দিকে। ঘরের ভেতর থাকবে বিশেষ ক্রিসমাস ট্রি ও গোসালা। বাহ্যিকভাবে এরা অনেক টাকা খরচ করে। আধ্যাত্মিক যত্ন না হলেও এই বাহ্যিকতা চোখে পড়ার মতো।

বড়দিন উপলক্ষে বাড়িতে আলোকসজ্জা
বড়দিন উপলক্ষে বাড়িতে আলোকসজ্জা

আমেরিকাপ্রবাসী বাংলাদেশি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকেরাও বসে থাকে না। তাদের ঘরেও জ্বলে নানা রঙের ঝালরবাতি, ক্রিসমাস ট্রি ও গোসালা। বড়দিনের দুই সপ্তাহ আগে থেকেই চলে বাংলা পবিত্র খ্রিষ্টযাগের প্রস্তুতি। চলে গির্জার গানের প্রস্তুতি। চলে বড়দিন পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের রিহার্সাল। চলে বাড়ি বাড়ি কীর্তন। বড়দিনের সকালে বাংলায় পবিত্র খ্রিষ্টযাগ উত্সর্গ করেন বাংলাদেশ থেকে আগত কোনো পুরোহিত। খ্রিষ্টযাগের পর পর কেক কেটে আনন্দ উত্সব করা হয়। এই সময় সবাই আনন্দে নেচে-নেচে কীর্তন করে যীশুর জন্মের বারতা আনন্দ প্রকাশ করে।

বাংলাদেশি একজনের বাড়িতে ক্রিসমাস ট্রি
বাংলাদেশি একজনের বাড়িতে ক্রিসমাস ট্রি

বড়দিনের আগে থেকেই প্রায় সবার বাড়িতে বাংলা কায়দায় বানানো হয় বিশেষ পিঠা ও মজাদার খাবার। প্রবাসে বসেও বাঙালি শত ভাগ বাঙালিপনা থেকে থাকে না। সবাই সবার আত্মীয়স্বজন না হলেও বিদেশে এসে সবাই হয়ে যায় একে অপরে আপনজন। তাই সবাই সবার বাড়ি যায়। পিঠা-পায়েস খায়, আনন্দ করে। ছোটরা নেয় বড়দের বিশেষ আশীর্বাদ। বড়রাও আশীর্বাদের সঙ্গে তাদের হাতে তুলে দেন সালামি বা বিশেষ উপহারসামগ্রী।
আর মাত্র কদিন পরই বড়দিন। উত্তর আমেরিকার মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের তিনটি বড় সংগঠন, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন, ইছামতী ও বাঙালি-আমেরিকান খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন একত্রে বড়দিনের বিশেষ বাংলা খ্রিষ্টযাগের আয়োজন করেছেন। বাংলাদেশ থেকে ছুটেও এসেছেন, সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর সাবেক সম্পাদক ফাদার সুব্রত বনিফাস টলেন্টিনু, সিএসসি। ২৫ ডিসেম্বর সকালে তিনি বাংলায় বিশেষ খ্রিষ্টযাগ উত্সর্গ করবেন। এখানে বসবাসরত প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি এই খ্রিষ্টযাগে অংশ নেবেন। সংগঠনগুলো ২৭ ডিসেম্বর বড়দিন পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন।
সুবীর কাস্মীর পেরেরা
মেরিল্যান্ড