চাকরি হারিয়ে বিপাকে পড়া আবুধাবির কর্মীদের পাশে দূতাবাস

বাংলাদেশ দূতাবাস অসহায় কর্মীদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির একটি ক্লিনিং কোম্পানি ৫ মাস থেকে বন্ধ। ওই কোম্পানির তিন শতাধিক শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এরই মাঝে পাঁচ মাসের বেতন বকেয়াসহ বিদ্যুৎ, পানি ও খাদ্যসংকটে রয়েছেন শ্রমিকেরা। স্থানীয় প্রশাসন মাঝেমধ্যে খাবার দিয়ে গেলেও অনেক দিন অনাহারে দিনযাপন করতে হচ্ছে। অনেকের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি প্রবাসে বেকার হওয়ায় তাঁদের পরিবারেও যেন নেমে এসেছে কালো মেঘের ছায়া।

আবুধাবিতে মাফরাক শিল্প এলাকার ব্যাইনোনা জেনারেল ক্লিনিং কোম্পানির ভুক্তভোগী শ্রমিকেরা ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। কোম্পানির বিরুদ্ধে শ্রমিকদের দায়ের করা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ব্যাইনোনা জেনারেল ক্লিনিং কোম্পানির কর্মী দেলোয়ার বলেন, ‘এ কোম্পানিতে আমরা ১০ থেকে ১২ বছর ধরে কাজ করছি। প্রথম দুই বছর সবকিছু ঠিক ছিল। এরপর থেকে নানা সময় বেতন বকেয়া রাখছে। গত পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া। খাবার নাই, বিদ্যুৎ ও পানি নাই। কোম্পানি আমাদের খোঁজখবরও নিচ্ছে না। আমরা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছে এসব অভিযোগ জানিয়েছি।’

কর্মী মাসুদুর রহমান জানান, গত রমজান মাসে স্থানীয় রেড ক্রিসেন্ট থেকে খাদ্যসহায়তা দিয়েছে। তবে দীর্ঘ সময় বেতন বকেয়া থাকায় বর্তমানে তারা অসহায় হয়ে পড়েছে।

আমরা ওই কোম্পানির কর্মীদের অভিযোগ পেয়েছি। মামলা নিষ্পত্তি করা দীর্ঘমেয়াদি কাজ। এটি প্রক্রিয়াধীন

ভুক্তভোগীরা দূতাবাসের মাধ্যমে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চান। তাঁরা জানান, বর্তমানে দেশটিতে এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানিতে ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে। দূতাবাসের সহযোগিতায় সমস্যা সমাধান করা গেলে তাঁরা অন্যত্র কাজ করার সুযোগ নিতে পারবেন।

এদিকে রাষ্ট্রদূত আবু জাফরের নির্দেশে সম্প্রতি বাংলাদেশ দূতাবাস শ্রমকল্যাণ উইং কাউন্সিলর (স্থানীয়) লুৎফুন নাহার নাজিমের নেতৃত্বে লেবার উইং কর্মকর্তারা অসহায় কর্মীদের মাঝে বিপুল পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।

লুৎফুন নাহার নাজিম বলেন, ‘সরকার সব সময় প্রবাসীদের পাশে আছে। যেকোনো সময় প্রবাসীরা বিপদে পড়লে, আমাদের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ওই কোম্পানির কর্মীদের অভিযোগ পেয়েছি। মামলা নিষ্পত্তি করা দীর্ঘমেয়াদি কাজ। এটি প্রক্রিয়াধীন। বর্তমানে তাঁরা খাদ্যসংকটে রয়েছেন জেনে গত শুক্রবার দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাঁদের খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হয়েছে।’ আমিরাতের আইনকানুন মেনে চলার পাশাপাশি করোনাকালে কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।

*লেখক: মতিউর রহমান মুন্না, আরব আমিরাত