তুরস্কে ৭ মার্চ উদযাপন, ‘লিডারশিপ বিয়ন্ড দ্য বর্ডার’ ওয়েবিনার আয়োজন

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, ইস্তাম্বুল এবং তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফাতিহ সুলতান মেহমেত বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ‘লিডারশিপ বিয়ন্ড দ্য বর্ডার’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করেছিল
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

দুদিনব্যাপী ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপনের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, ইস্তাম্বুল এবং তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফাতিহ সুলতান মেহমেত বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ‘লিডারশিপ বিয়ন্ড দ্য বর্ডার’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। তুরস্কের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কূটনৈতিক প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করেন। কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সুলতান মেহমেত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-রেক্টর অধ্যাপক ড. ফাহমেদিন বাশার, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. আজমি ওজজান এবং ইলদিজ টেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষক এলিফ বালি কুরতারির ওয়েবিনারে অংশ নেন।

ওয়েবিনারের শুরুতে কনসাল জেনারেল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি ৭ মার্চের ভাষণের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, গুরুত্ব ও বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় এর প্রাসঙ্গিকতার ওপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ইউনেসকো এ কালজয়ী ভাষণটি বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করায় এ বক্তব্যটি এখন বৈশ্বিক সম্পদে পরিণত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বক্তব্যটি ইতিমধ্যে তুর্কি ভাষায় অনূদিত হয়েছে, যা তুরস্কের জনগণকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধুর গৌরবময় জীবন ও সংগ্রাম জানার ব্যাপ্তিকে আরও সহজতর ও প্রসারিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষক এলিফ বালি কুরতারির দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতার অর্জনে নেতৃত্বের অবদানের কথা তুলে ধরেন। ভারতের মহাত্মা গান্ধী, বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু ও তুরস্কের আতাতুর্কের আদর্শ, দর্শন ও চিন্তা-চেতনার ওপর এক তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করেন, যেখানে তিনি এই তিন মহান নেতার গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, শান্তি ও সম্প্রীতি এবং মানবাধিকারের বিষয়ে আদর্শিক ও নীতিগত সাদৃশ্য রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. আজমি ওজজান বাংলাদেশ-তুরস্কের মধ্যকার ঐতিহাসিক যোগসূত্রের এক প্রাঞ্জল বর্ণনা করতে গিয়ে এ দুটি দেশকে একই ইতিহাসের দুই সন্তান হিসেবে অভিহিত করেন। খেলাফত আন্দোলনের ঐতিহাসিক পটভূমি ব্যাখ্যা করে তিনি তুরস্কের স্বাধীনতায় বাঙালি মুসলিমদের ভূমিকা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি দুদেশের মধ্যকার এ ঐতিহাসিক বন্ধনকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। এর মাধ্যমে দুদেশের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও অর্থবহ ও সুদৃঢ় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে তুরস্কের জনগণের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

ভাইস রেক্টর অধ্যাপক ড. ফাহমেদিন বাশার কনস্যুলেটকে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি দুদেশের মধ্যকার শিক্ষা ও গবেষণার পর্যায়ে আরও অধিকতর যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর তাগিদ দেন।

ইতিপূর্বে প্রথম দিনে কনস্যুলেট ৭ মার্চে ইস্তাম্বুলে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ: প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করে; যেখানে প্রবাসীরা বাংলাদেশের ইতিহাস তথা বঙ্গবন্ধুর গৌরবময় জীবন ও কর্ম তুরস্কে তুলে ধরতে তাঁদের প্রতিশ্রুতি ও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বিজ্ঞপ্তি