নিউজিল্যান্ডে উদ্‌যাপিত হলো ‘বিদ্রোহী’ কবিতার শতবর্ষ ও রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। যে কবিতার জন্য তিনি বাঙালির চিরকালের ‘বিদ্রোহী কবি’, সেটা হলো তাঁর ‘বিদ্রোহী’ কবিতা। ১৯২১ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে কবি নজরুল রচনা করেছিলেন তাঁর অমর সৃষ্টি ‘বিদ্রোহী’। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার শতবর্ষপূর্তি, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী এবং বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ উপলক্ষে নিউজিল্যান্ডের মানাওয়াতু বাঙালি সোসাইটি আয়োজন করে এক বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

নিউজিল্যান্ডের পামারস্টোন শহরে ২৯ মে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ শহরে বসবাসকারী দুই বাংলার (বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ) বাংলা ভাষাভাষীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মানাওয়াতু বাঙালি সোসাইটির সভাপতি শ্রীকান্ত চ্যাটার্জি। রক্তিম বড়ুয়ার সাবলীল উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পুরো বিশ্বে করোনা মহামারিতে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

রবীন্দ্র গবেষক ও মেসি ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক শ্রীকান্ত চ্যাটার্জি কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার জন্ম, প্রকাশ এবং সেই সময়ে কবিতাটির প্রভাব নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন। তিনি বলেন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম সব ধর্মের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে মানবতার জয়গান গেয়েছেন। তাঁর লেখা কবিতার বিখ্যাত একটি লাইন হলো, ‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।’

অনুষ্ঠানে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা থেকে আবৃত্তি করে শোনান মেসি ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক মু. মাহবুবুর রহমান।

‘বিদ্রোহী’ কবিতার শতবর্ষ ছাড়াও এ অনুষ্ঠানে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই তাই ছিল সমবেত কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো, এসো’ গানটি। এ ছাড়া দুই বাংলার বাংলা ভাষাভাষীদের অংশগ্রহণে রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য ও কৌতুক পরিবেশনা উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মানাওয়াতু বাঙালি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সান্তনা পডুভাল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মানাওয়াতু বাঙালি সোসাইটির সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক নাজনীন মুনিরা আর সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন মেসি ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির সিনিয়র লেকচারার সাঈদ হাসান।

সবশেষে ছিল বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম আয়োজন খাবার পরিবেশনা, যেসব খাবার এসেছে ভাবিদের নিজ নিজ গৃহ থেকে। দূরপ্রবাসে এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়বে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে, দেশ থেকে দেশান্তরে—এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

*লেখক: মু. মাহবুবুর রহমান, পিএইচডি গবেষক, মেসি ইউনিভার্সিটি, নিউজিল্যান্ড