ফ্রান্সে বাংলাদেশি বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান

প্যারিসে কঠিন চিবর দান অনুষ্ঠান
ছবি: লেখক

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের অদূরে কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারে বৌদ্ধদের দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৪ অক্টোবর দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব বিহারের নিকটবর্তী সেন্ট ডেনিসের সালন দো পার্ক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন সকালে ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এ উৎসব শুরু হয়। এটা ছিল ফ্রান্সে প্রথম দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান।

দানোত্তম কঠিন চীবর দান উপলক্ষে ভোর থেকে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে শীলগ্রহণ, বুদ্ধপূজা, সংঘ দান, অষ্টপরিষ্কার দান, কল্পতরু দান, সবশেষ বহু আকাঙ্ক্ষিত কঠিন চীবর দানসহ নানা আয়োজনে সমৃদ্ধ ছিল।

ফ্রান্সের কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত এই দানসভায় সভাপতিত্ব করেন মৈত্রী বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত অনোমদর্শী থের। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জার্মানি থেকে আসা ভিক্ষুণী সংঘামিত্রা। মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত জ্যোতিসার ভিক্ষু, ভদন্ত, আনন্দ ভিক্ষু, বিজয়ানন্দ ভিক্ষু দেশনা করেন।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা
ছবি: লেখক

বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে। মঙ্গলাচরণ করেন ভদন্ত কল্যাণরত্ন ভিক্ষু। সুধীর বড়ুয়া পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন বরণ বড়ুয়া, বরণ সংগীত পরিবেশন করেন রীমা মুৎসুদ্দি। তবলায় সংগত করেন সত্যজিত বড়ুয়া। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অনুপম বড়ুয়া।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রিটন বড়ুয়া, উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন রবি বড়ুয়া আর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তাপস বড়ুয়া।

বক্তারা বলেন, চীবর দান ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বৌদ্ধদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দান জন্ম-জন্মান্তরে সুফল প্রদায়ী। প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে বছরে একবার চীবর দান করা হয়। এদিন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ গৃহীরা ভিক্ষু সংঘকে চীবর দান করেন। ভিক্ষু সংঘও তাদের বিনয়-বিধানের সব নিয়ম অক্ষুণ্ন রেখে পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে এ চীবর গ্রহণ ও ব্যবহার করে। কঠিন চীবর দানের বহুধা গুণের কথা স্মরণে রেখে প্রত্যেক বৌদ্ধ জীবনে অন্তত একবার হলেও চীবর দান করার মানসিকতা পোষণ করেন।

প্যারিসে কঠিন চিবর দান অনুষ্ঠান
ছবি: লেখক

অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশ, লাওস, কম্বোডিয়া, ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকেরা এ উৎসবে অংশ নেন।