কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক লেখকের লড়াই

ম্যান বুকার পুরস্কারপ্রাপ্ত কানাডীয় লেখক ইয়ান মার্টেল এবং প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপারকে লেখা তাঁর চিঠিগুলোর দুটি সংকলনের প্রচ্ছদ
ম্যান বুকার পুরস্কারপ্রাপ্ত কানাডীয় লেখক ইয়ান মার্টেল এবং প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপারকে লেখা তাঁর চিঠিগুলোর দুটি সংকলনের প্রচ্ছদ

স্টিফেন হারপার কানাডার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ২০০৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত। তাঁর আমলে ২০০৭ সালের মার্চে কানাডা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠানটির জন্মের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করে। কানাডার শিল্প-সাহিত্যের অঙ্গনকে সমর্থনদানকারী এই প্রতিষ্ঠান সে-বছর এই অঙ্গনের পঞ্চাশ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানায় অটোয়াতে। প্রতি বছরের একজন করে প্রতিনিধিকে তাঁরা আহ্বান করেছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন লেখক, চিত্রকর, সংগীতশিল্পীসহ অনেকে। সে-আয়োজনের একটি পর্ব ছিল হাউস অব কমন্সে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন। কিন্তু ঘটনাটি এমন যে তিনি কোনো বক্তৃতা করেননি। এমনকি তিনি সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের স্বাগত বা অভিনন্দনও জানাননি। বিষয়টি ভীষণভাবে তাড়িত করেছিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ম্যান বুকার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ইয়ান মার্টেলকে। কী করেছিলেন ইয়ান? তাই নিয়েই বর্তমান প্রবন্ধ।
কানাডায় যে কজন সাহিত্যিক আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছেন ইয়ান মার্টেল (জন্ম: ১৯৬৩) তাঁদের অগ্রগণ্য। ১৯৯৩ সালে তাঁর দুটি গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস ‘সেল্ফ’। এই উপন্যাসটি তিনি লিখেছিলেন কানাডা কাউন্সিলের অর্থ সহায়তা নিয়ে। ২০০১ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর বিশ্ববিখ্যাত উপন্যাস ‘লাইফ অব পাই’। অসাধারণ সে-উপন্যাস কানাডা থেকে প্রকাশিত হওয়ার আগে ব্রিটেনের অন্তত পাঁচজন প্রকাশক প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ২০০২ সালে সেটি ম্যান বুকার পুরস্কার পায় এবং ২০০৩ সালে ‘সিবিসি কানাডা রিডস’-এ অন্তর্ভুক্ত হয়। ধারণা করা হয়, উপন্যাসটি এ পর্যন্ত এক কোটিরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। গত পনেরো বছরে ইয়ান আরও চারটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।
হাউস অব কমন্সের সেদিনের অনুষ্ঠানে ইয়ান যখন অতিথি হিসেবে উপস্থিত তখন তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত এক নাম। হাউস অব কমন্সের আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন ছিলেন নিশ্চুপ। তিনি মাথা তুলেও তাকাননি। মনে হয়নি যে তিনি অবগত ছিলেন সেখানে অতিথিরা রয়েছেন। ইয়ান মরিয়া হয়ে ওঠেন বুঝতে যে, প্রধানমন্ত্রী সেদিন ওখানে বসে কী করছিলেন। অথবা, অবসর সময়ে স্টিফেন আসলে কী করেন, কী পড়েন। সেটা বুঝতে ইয়ান একটি কৌশল অবলম্বন করেন। অনুষ্ঠান থেকে ফিরে তিনি ১৬ এপ্রিল স্টিফেনকে একটা চিঠি লেখেন। চিঠির সঙ্গে তিনি লিয়েফ তলস্তোয়ের একটি বই পাঠান। বইটি হলো ‘দ্য ডেথ অব ইভান ইলিচ’। চিঠিতে তিনি বইটি নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত উপলব্ধির কথা লেখেন।
৮ মে তারিখে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের একজন সহকারী ইয়ানকে ধন্যবাদ দিয়ে সংক্ষিপ্ত একটি উত্তর পাঠান। ইতিমধ্যে ইয়ান প্রধানমন্ত্রীকে আরও একটি বই পাঠান। এবারের বইটি হলো জর্জ অরওয়েলের ‘এনিম্যাল ফার্ম’। এবং মজার বিষয় হলো ইয়ান মার্টেল এভাবে প্রতি দুই সপ্তাহ পর পর প্রতি সোমবার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেনকে বই পাঠাতে থাকেন। সঙ্গে থাকত ওই বইটি পাঠের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একটি ব্যক্তিগত গদ্য। এভাবে মোট ৫৫টি চিঠি পাঠিয়েছিলেন ইয়ান। বইয়ের সংখ্যা ছিল ৫৭টি। ২০০৭ সালের ক্রিসমাসের ছুটির সময়ে তিনি একসঙ্গে তিনটি বই পাঠিয়েছিলেন। যদিও ২০০৮ সালের ক্রিসমাসে পাঠানো বইয়ের সংখ্যা ছিল একটিই। দ্বিতীয় উত্তরটি এসেছিল ২০০৯ সালের এপ্রিলে। ওই বছরেই সেপ্টেম্বরে নিজের লেখা ৫৫টি এবং প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে পাঠানো দুটি চিঠি নিয়ে ইয়ান একটি বই প্রকাশ করেন— ‘হোয়াট ইজ স্টিফেন হারপার রিডিং’ শিরোনামে।
আরও মজার বিষয় হলো ইয়ান কিন্তু বই ছাপিয়েই ক্ষান্ত হননি। বই পাঠানোর কাজটি তিনি চালিয়ে গেছেন এবং ২০১১ সাল পর্যন্ত মোট ১০১টি চিঠি পাঠানোর পর তিনি প্রকাশ করেন আগের বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ। নাম দেন ‘১০১ লেটারস টু প্রাইম মিনিস্টার’। প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে। তাঁর পাঠানো পার্সেলের সংখ্যা ছিল ১০০টি। শেষ চিঠিটি তিনি নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন যেখানে তিনি ঘোষণা দেন তিনি আর প্রধানমন্ত্রীকে বই পড়ানোর প্রচেষ্টা চালাবেন না।
ইয়ান চার বছরব্যাপী এই প্রকল্পের নাম দিয়েছিলেন হারপার বুক ক্লাব। তাঁর ক্ষোভের অনেকগুলো কারণ ছিল। তিনি মনে করেন এমন একটি আয়োজন ফরাসি দেশে হলে দেশের প্রেসিডেন্ট শিল্প-সাহিত্যের পুরোধা এই ব্যক্তিদের সঙ্গে এমন আচরণ করতেন না। ইয়ানের মনে এমন প্রশ্নও জেগেছিল যে, তাঁরা সরকারের অনুদান নিয়েছিলেন বলেই কি প্রধানমন্ত্রী এমনটি করলেন! সে-প্রশ্নের উত্তরে ইয়ান বলছেন, অনুদানের আঠারো হাজার ডলারের অনেক বেশি তিনি ‘লাইফ অব পাই’ বইয়ের প্রাপ্ত আয় থেকে ট্যাক্স দিয়েছেন সরকারকে। ইয়ান আরও উল্লেখ করেছেন, ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৮৪ বছর বয়স্ক জ্যাঁ লুই রক্সের মতো প্রবীণ নাট্যকার; যার সামনে প্রধানমন্ত্রীর এই আচরণ অশোভন।
ইয়ান মনে করেন প্রধানমন্ত্রী অনেক ব্যস্ত মানুষ। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একজন ব্যস্ত মানুষেরও কিছু ব্যক্তিগত মুহূর্ত থাকে। রাতে শোয়ার সময় বা অন্য কোনো ফাঁকা মুহূর্তে তিনিও নিশ্চয়ই নিজের মধ্যে একটা ধীরতার অনুসন্ধান করেন। সেই অনুসন্ধানে আমাদের শ্রেষ্ঠ সঙ্গী বই। তেমন একটি সময়েই একটি বই একজন ব্যক্তির জীবনে জ্বলে উঠতে পারে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রীকে বই পাঠাবেন। সবগুলোর বই-ই ছিল দু শ পৃষ্ঠার নিচে কারণ ইয়ান চাননি স্টিফেন অনেক মোটা কোনো বইতে নিজেকে বাধ্য হয়ে আটকে রাখেন। বইগুলোর কোনোটিই বিশেষ নিরীক্ষামূলকও ছিল না যেটি পড়তে গিয়ে স্টিফেনকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। বরং ক্ল্যাসিক বিশ্বসাহিত্য থেকেই ইয়ান বই নির্বাচন করেছিলেন। অধিকাংশই ছিল উপন্যাস। অল্প কিছু নন-ফিকশন ও কবিতার বই ছিল।
শুরুর দিকে পাঠানো বইগুলো তুলনায় অনেক বেশি ছোট ছিল। পূর্বোল্লিখিত ‘দ্য ডেথ অব ইভান ইলিচ’ বা এলিজাবেথ স্মার্টের ‘বাই গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল স্টেশন আই স্যাট ডাউন’, বা ‘দ্য ভগবদ্‌গীতা’ তেমনই কয়েকটি বই। এই তালিকায় এলিজাবেথ স্মার্ট ছাড়াও অন্য যে কানাডীয় লেখকেরা ছিলেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কবি মিল্টন অ্যাকর্ন, সমালোচক নর্থরোপ ফ্রাই, কথাশিল্পী ক্যারল শিল্ডস প্রমুখ। তিনি যেমন বহু প্রাচীনকালের লেখককে বাদ দেন নাই, সমকালীন এমনকি নিজের চেয়ে বয়সে ছোট কাউকেও সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে দ্বিধা করেননি। অনেক লেখকের বই-ই দুই তিনবার পাঠিয়েছেন। লিয়েফ তলস্তোয় বা উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ার তেমনই কয়েকটি নাম। জেন অস্টেন, ভার্জিনিয়া উলফ, চিনুয়া আচিবে, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কোয়েস, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, আগাথা ক্রিস্টি প্রমুখের লেখা উপন্যাস ছিল ইয়ানের তালিকায়। কবিদের মধ্যে ছিলেন রাইনার মারিয়া রিলকে, টেড হিউস, টনি মরিসন, ডিলান টমাস প্রমুখ। ‘গিলগামেশ’-এর দুটি ইংরেজি সংস্করণ তিনি পাঠিয়েছিলেন।
প্রতিটি বইয়ের সঙ্গে পাঠানো চিঠির শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে সম্ভাষণ করেছেন ইয়ান। সাধারণভাবে সেটি হতো পাঁচ-ছয়টি লাইনের। লাইনগুলো এমন: To Stephen Haper,/ Prime Minister of Canada,/ From a Canadian writer,/ With best wishes,/ Yann Martel. কখনো কখনো প্রথম দুই লাইনের পরে বইটি নিয়ে থাকত আরও একটি লাইন। প্রতিটি চিঠিতে ছিল বইটি নিয়ে ইয়ানের ব্যক্তিগত ভালোলাগার অনুভূতি। সে-অনুভূতির পেছনের কারণ ব্যাখ্যা। তবে অবশ্যই বলে রাখতে হবে, চিঠিগুলো এমন ছিল না যে সেগুলো ওই পাঠানো বইগুলোর পর্যালোচনা।
প্রথম চিঠিতে তিনি লিখেছেন, কেন তিনি একজন কানাডীয় লেখকের বই না পাঠিয়ে লিয়েফের বই পাঠাচ্ছেন। ইয়েন লিখেছেন যেহেতু তাঁরা দুজনেই অর্থাৎ চিঠির প্রেরক এবং প্রাপক কানাডীয়, ইয়েনের হয়তো উচিত ছিল কানাডার কোনো লেখকের বই পাঠানো। তিনি আরও বলেছেন, রাজনৈতিক এই বিবেচনা দ্বারা তিনি নিয়ন্ত্রিত হতে চাননি বলেই লিয়েফ তলস্তোয়ের ‘দ্য ডেথ অব ইভান ইলিচ’ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেছেন, বিশ্ব সাহিত্যের আর কোনো এত ছোট্ট পরিসরের বই এমনভাবে সেরা সাহিত্যের এমন শক্তি ও গভীরতা প্রকাশ করতে পারে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না।
দ্বিতীয় চিঠিটি লেখার তারিখটি ছিল ৩০ এপ্রিল। কাকতালীয়ভাবে তারিখটি ছিল স্টিফেনের জন্মদিন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি। সেদিনের বইটি ছিল ‘এনিম্যাল ফার্ম’। বইটি পছন্দ করার কারণ হিসেবে ইয়ান জানিয়েছেন তিনিও চান অমন একটি বই লিখতে। অরওয়েলের ওই বইটির মতো আরেকটি বই লেখার ইচ্ছা প্রকাশের ভেতরে লুকিয়ে আছে কানাডীয় রাজনীতির প্রতি, বা রাজনীতির মানুষদের প্রতি একজন লেখকের ক্ষোভের প্রকাশ। প্রতিটি চিঠিই অসামান্যভাবে সুখপাঠ্য। প্রতিটি চিঠিই যেন মনে হয় নতুন কোনো আলোকবর্তিকার মতো।
ধরা যাক পঞ্চম চিঠিটির কথা, যেখানে ইয়ান ভগবদ্‌গীতা নিয়ে কথা বলছেন। চিঠিতে তিনি লিখলেন, অর্জুনের এই যুদ্ধের বাস্তব বা ঐতিহাসিক ভিত্তি থাকলেও থাকতে পারে। তবে বইটি পড়ার সময় রূপক হিসেবেই আমাদেরকে পড়তে হবে। আবার আরেক জায়গায় লিখলেন, গীতার সংলাপটি ঈশ্বরের সঙ্গে একজন মানুষের। তবে শুরুতে যদি সেটিকে একজন পাঠকের সঙ্গে পাঠ বা টেক্সটের সংলাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেটি খারাপ হয় না। দরকারে পরবর্তীকালে গীতা নিয়ে পণ্ডিতদের মতামত পড়ে দেখা যেতে পারে। চিঠির শেষে লিখলেন, বইটি পড়লে অর্জুনের মতো আপনিও ধীর ও জ্ঞানবান হিসেবে নিজেকে প্রত্যক্ষ করবেন। বুঝতে পারবেন, আপনার হৃদয় শান্তি ও প্রীতিতে পূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং আপনি কর্মের ব্যাপারে অধিক তৎপর হয়ে উঠেছেন।
আবার ধরা যাক চতুর্থ চিঠিটির কথা যেখানে ইয়ান কানাডীয় লেখক এলিজাবেথ স্মার্টের ‘বাই গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল স্টেশন আই স্যাট ডাউন’ বই নিয়ে লিখছেন। এত ক্ষুদ্রাকার দ্বিতীয় কোনো বই শুধু কানাডা কেন, বোধ করি পৃথিবীর কোনো দেশেই এমন আলোচনার ঝড় তুলতে পারেনি। ইয়ান লিখলেন: Because this is a language book, a book where language is the plot, the character and the setting. একটি বই নিয়ে এমন একটি অভিব্যক্তি বোধ করি ইয়ানের মতো উচ্চতাসম্পন্ন একজন লেখকের পক্ষেই প্রকাশ করা সম্ভব।
ইয়ান মার্টেল কিন্তু ঘোষণা দিয়ে তাঁর ‘স্টিফেন বুক ক্লাব’ প্রকল্পের সমাপ্তি টানেন। ২০১১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সিটিভি-র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শুরু থেকেই তিনি আসলে বইকে বন্দুকের গোলা হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। তিনি চেয়েছেন রাজনীতিক শ্রেণি ও শিল্পী শ্রেণির মধ্যে বিদ্যমান ব্যবধান কমাতে। ইয়ানের মতে, মানব সভ্যতার উৎস হিসেবে বই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যেটি লিখতে একজন লেখককে বছরের পর বছর ব্যয় করতে হয়। তিনি আরও বলেন, একজন নেতা, সে তিনি রাজনৈতিক নেতাই হোন বা অর্থনৈতিক নেতাই হোন, তিনি যদি বাস্তবকে সত্যিকার অর্থে অনুধাবন করতে চান, তাহলে তাকে বই পড়তেই হবে। কিন্তু কথাসাহিত্য পাঠের ব্যাপারে রাজনৈতিক নেতাদের অনাগ্রহ ইয়ানকে হতাশ করেছে। তিনি বেশি হতাশ এ কারণে যে, প্রধানমন্ত্রী নিজে তাকে একটিও উত্তর দেননি। জানতে দেননি, বই নিয়ে স্টিফেন নিজে আসলে কী ভাবেন। শিল্প-সাহিত্যের প্রতি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের এই নির্বিকারতা লেখক ইয়েনকে পীড়া দিয়েছে, সন্দেহ নেই।
একজন লেখকের গভীর মনোজগৎকে বুঝতে, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন লেখকের পড়াপড়ির ও লেখালেখির ভেতরের খবর বুঝতে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা সাস্কাচুয়ানের বাসিন্দা ইয়ান মার্টেলের এই চিঠিগুলো এক অসামান্য পাঠ।