বুকের ভেতর অসংখ্য সী-গাল

তোমার ইঙ্গিতপূর্ণ ই-মেইল কিংবা মেসেঞ্জারের ম্যাসেজে সাড়া দিইনি

অ্যারোড্রামে টেকঅফ করা প্লেনের শব্দের মতো শব্দ আর
বুকের ভেতর অসংখ্য সী-গাল শুধু ওড়ে।

বরফ গলতে গলতে সামারের ফুলগুলো ফোটে
টিউলিপে ভরে যায়
ওয়াশিংটন পার্কের লাল-হলুদে বাঙ্‌ময় হয়ে ওঠে অদৃশ্য মুখ
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ঝমঝম শব্দ ওঠে
ম্যানহাটন, জ্যাকসন হাইটস
হাডসন কিংবা ইস্ট রিভার
জলের ওপর জলযানের বিলোড়ন, ভাসমান প্রতিবিম্ব
অদৃশ্য কারও হাতের স্পর্শে চিত্রময় হয়ে ওঠে।

প্রেইরির সবুজ ঘাস মাড়িয়ে দৌড়ে যায় ঘোড়া
হ্রেষায়, শক্তির দ্রুতিতে ফেটে পড়ে
তেমনি বুকের ভেতর বাজে অসংখ্য ঘোড়ার শব্দ
ক্ষুরে ক্ষুরে ঠুকে যায়
একটি অচেনা পাখি ঠোকরায় নির্দয় মাংসের খাঁচায়।

তোমার অদৃশ্য স্বর এসে হানে, রক্তাক্ত হৃদয়ের চিত্র মেলে ধরে
একটি অচেনা পাখি রহস্যের গাঢ় ছায়া মাখে। অজানা কুহক এসে আর্ত ডানা ঝাড়ে।

কোনো এক রাত্রির গল্প
এ বি এম সালেহ উদ্দীন

ওটা কোন রাত্রি ছিল জানা নেই।
চাঁদের পিছনে খোলা তলোয়ার
জলের কল্লোলে রক্ত প্রণালির হাত ধরে
দুঃখগুলো মিশে গিয়েছিল বঙ্গোপসাগরে।
নক্ষত্রের রাত নয় সেটি
আঁধার বাহিকায় নীরব ইশারায়
কে যেন ডেকেছিল; তাও মনে নেই।
কোন কোন দুঃখবোধ ধুলোবালির ভেতর থেকে
উঁকি মেরে তাকিয়েছিল। তবে
এতটুকু মনে আছে
রাত্রি থেকে ঘুমকে সরিয়ে
আমিও নেমে পড়েছিলাম জন-অরণ্যে...
সে এক অদ্ভুত সময়...
যখন
জোনাকি রাতে...বিমূঢ় চোখে
হৃদয়-মুকুটে অক্ষর সাজিয়ে
কে যেন ডেকেছিল...
এই যে
এ দিকে এসো
এসো এখানে।

বিশুদ্ধতার কিছু স্বপ্ন
আবদুস শহীদ

প্রতিকূল বাস্তবতার ভেতরেও
স্বপ্নগুলো জেগে থাকে তিল তিল করে
কুয়াশার ভেতরে অভিসারে যাওয়ার স্বপ্ন নয়
অঙ্গুলি হেলানে ছারখার হয়ে যাওয়া
একটা জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন নয়।

বোমা বিক্ষত রক্তাক্ত পৃথিবীর স্বপ্ন নয়
দীর্ঘশ্বাসে বিদীর্ণ বিবর্ণ আকাশের স্বপ্ন নয়
আমি কোনো যন্ত্রণায় ঘেরা স্বপ্ন দেখি না
সংগ্রাম আর সংঘর্ষের রক্তক্ষয়ী স্বপ্ন নয়।

ইঁচড়ে পাকা সন্ত্রাসী সমাজের স্বপ্ন নয়
আমি শুধু স্থূল আনন্দের আর হালকা
হাসির স্বপ্নের কথা বলছি।
ভালোবাসার সোনায় মোড়ানো একটি
সুস্থ হৃৎপিণ্ডের স্বপ্নের কথা বলছি।

দীর্ঘদিন অন্ধ দুচোখে সুরভিত কিছু
স্বপ্ন দেখার কথা বলছি।
অন্ধকারে নিমজ্জিত জনগোষ্ঠীর পথে
তড়িৎ বিদ্যুত চমকের স্বপ্নের কথা বলছি।
একটা সুন্দর সকাল আসুক আগামীকাল
আমি সেই আগামীর স্বপ্নের কথা বলছি।