দ্রুত দুর্নীতি দমন জরুরী

মাত্র দুটি অক্ষরের মেলবন্ধনে আবদ্ধ একটি শব্দ—ঘুষ। এই ঘুষের মধ্যে লুকিয়ে আছে যত সব ন্যায়-অন্যায়ের ফারাক। মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি এই ঘুষ আজ আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় কমবেশি স্থানভেদে প্রচলিত। ঘুষের কালোগ্রাসী ছোবলে দিশেহারা বর্তমান সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত, অধীনস্থ নৈতিক মান-হুঁশ সম্পন্ন মানুষ। ক্রমবর্ধমান সময়ে ঘুষ যে বহুমাত্রিক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে, এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে না। ঘুষদাতা ও গ্রহীতার কাছে ঘুষ একটি স্বাভাবিক লেনদেন হলেও মানবিক অর্থে ঘুষ হচ্ছে স্বাভাবিক ও বৈধ উপায়ে যা কিছু পাওয়া যায় তার বাইরে অবৈধ পন্থায় অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করা। সমাজে ঘুষ এক অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘুষের টাকা বিভিন্ন নামে যেমন-উৎকোচ, মাল, উপঢৌকন, বকশিশ, পার্সেন্টেজ, টাকা, ডলার, খরচ, টু-পাইস, মাসোহারা, চাঁদা, সাহায্য, উপরি আয়, ট্যাক্স, উপহার, কম্প্রোমাইজ, সম্মানি, এক্সট্রা পারিশ্রমিক, বখরা ও টিপস ইত্যাদি নামে পরিচিত। তবে যে নামেই প্রচলিত হোক না-কেন, ঘুষ দেওয়া ও নেওয়া মারাত্মক অন্যায়।
ঘুষের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈধ-অবৈধের বালাই নেই। সবাই যেন টাকার পেছনে ছুটছে। যেভাবেই হোক টাকা উপার্জন করতে হবে। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় সরকারি চাকরিতে বেতন যাই হোক, উপরি কত, সেটাই অনেক সময় মুখ্য বিবেচ্য হয়ে দাঁড়ায়। সরকারি চাকরিজীবী পাত্রের কাছে কনে বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও একাংশ অভিভাবক জানতে চান, বেতনের সঙ্গে উপরি আছে তো? যৌতুক প্রথাকেও পরোক্ষ-প্রত্যক্ষ ঘুষ বলা যেতে পারে। বিশেষত, আমাদের দেশের বিভিন্ন সরকারি ওপর থেকে নিচ মহল পর্যন্ত কমবেশি ঘুষের দায়ে অভিযুক্ত।
ঘুষের লেনদেনে দুর্নীতিপরায়ণ দায়িত্বশীল ব্যক্তি ঘুষকে নিজের অধিকার মনে করে থাকেন। ওসমান গনীর মতো দুর্নীতিপরায়ণ রাঘববোয়াল গ্রেপ্তারের পর থেকে দেশের মানুষ বুঝেছেন, প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের লোভ নিঃসন্দেহে গোটা প্রজন্মকে পেছনে ঠেলবে। প্রতিনিয়ত ব্রেকিং নিউজে দুর্নীতি আর অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জনের রমরমা ধান্দা, নিরীহ গরিব মানুষের শোষণ—সত্যি আমাদের সমাজ ব্যবস্থার বিশুদ্ধতা আজ প্রশ্নের মুখে! বিশেষ করে সরকারি অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে একজন পিয়ন পর্যন্ত অনেকেই এর সঙ্গে কমবেশি জড়িত। চাকরি দেওয়া, সুপারিশ করা, কোনো উদ্দেশ্য হাসিল কিংবা কার্যসিদ্ধির জন্য ঘুষ দিতে হয়। আমাদের দেশে বড় বড় আমলার অফিসে বিভিন্ন দরকারি ফাইল আটকে থাকে, ঘুষ দিয়ে ফাইল মুক্ত করতে হয়। শিক্ষিত মানুষের বিবেকহীন কার্যকলাপে দেশের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা কারও জানা নেই।
‘অন্যায় যে করে অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে।’ এই উক্তিটি আজ ঘুষের বাজারে পদে পদে লাঞ্ছিত। কথাটি অপ্রিয় হলেও বাস্তব আঙ্গিকে অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে যারা স্লোগান তোলেন, সে সব-সংস্থা বা ব্যক্তিকেও অনেক সময় সমঝোতার সহায়তা নিতে বা দিতে হয়। প্রত্যক ধর্মেই ঘুষ অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য হলেও নৈতিক অবক্ষয়ে ধর্মীয় বাধা-বিপত্তিকে আজকাল কেউ পরোয়া করে না। দেশের উন্নয়নে এই দুর্নীতি আড়ালে চাপা পড়ছে।
ঘুষের প্রচলন হঠাৎ করে রোধ করা সম্ভব নয়। জনগণ ও সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা সময়ের দাবি। অবশ্য অস্বীকার করছি না, সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই ঘুষ নেন না। বরং অনেক সৎ মানুষও নিজের কর্মতৎপরতা সরকারি বেতনে সততার সঙ্গে সম্পাদন করে যাচ্ছেন বলে মূল্যবোধ নাম-কা-ওয়াস্তে টিকে আছে। দেশের অন্যতম প্রধান এই সমস্যা প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ঘুষগ্রহীতা কখনো এককভাবে দোষী নয়, মদদদাতাও সমান দোষী। নাগরিক ও সরকারি আমলা সবাইকে কাজ করতে হবে সততার সঙ্গে। শুধু মুখে প্রতিবাদ নয়, আন্তরিকভাবে ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করতে হবে।
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী রূপ দেশ দরদি প্রত্যেক নাগরিককে ভাবিয়ে তুলেছিল। দুর্নীতির মূলে ছিল ব্রিটিশ ও পরবর্তী পর্যায়ে পাকিস্তান আমলে সৃষ্ট দারিদ্র্য। দারিদ্র্য আর দুর্নীতিকে রাজনৈতিকভাবে আড়াল করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। হাট-বাজার, মাঠ-ময়দানে এই শব্দ দুটি শোনা যাচ্ছে সততই। গেল কয়েক বছর আগেও প্রশাসন ও সমাজের প্রায় সব পর্যায়ে দুর্নীতি ছিল স্বাভাবিক বিষয়। সাধারণ নাগরিকদের আশ্বাস দেওয়া হলেও এসব দূরীকরণের নামে চলছিল প্রহসন, চলছিল ভেলকিবাজি, চলছিল মোহ সৃষ্টির প্রতিযোগিতা। সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্নীতি নির্মূলে নানাভাবে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ ছাড়াও গণসচেতনতা সৃষ্টির প্রয়াস চালাচ্ছে, যা প্রশংসার দাবিদার। রাজনৈতিক দলগুলো যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন দুর্নীতি পৌঁছেছিল সর্বোচ্চ মাত্রায়। কয়েক বছর দুর্নীতিতে আমাদের অবস্থান ছিল প্রথম। ডানপন্থী, উদারপন্থী, বামপন্থী, নরমপন্থী সব দলই ক্ষমতায় থেকে বা না থেকেই স্বীকার করেছে যে, দারিদ্র্য আর দুর্নীতি সমাজ ও দেশকে গ্রাস করেছে অক্টোপাসের মতো। এতসব বিবেচনার পর অপরাধ কার (?) প্রশ্নটি আসা অস্বাভাবিক নয় কি?
শাসক ও বিরোধী পক্ষ তথা অন্যান্য রাজনৈতিক দল দুর্নীতি, দারিদ্র্য ও সন্ত্রাস দূরীকরণে শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতি দিয়েই চলেছিল। দুর্নীতি আর সন্ত্রাস শুধু সমাজ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে আটকে ছিল না। বিস্তৃতি লাভ করছিল রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল ও কমবেশি অন্যান্য দলেও। ফলে সমাজ জীবনের ভিত পর্যন্ত কাঁপিয়ে তুলেছিল। বৃহত্তম কেলেঙ্কারিগুলো যেমন শেয়ার কেলেঙ্কারি, সার কেলেঙ্কারি, ভূমিও বিভিন্ন দ্রব্য আমদানি কেলেঙ্কারি প্রভৃতি ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা মদদপুষ্টদের স্বার্থের রক্ষাকারী হলেও কেলেঙ্কারিগুলো সর্বাবস্থায়ই জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। দুর্নীতি শেষ পর্যন্ত দেশপ্রেমকে করেছিল কলুষিত। কথায় কথায় কমিশন গঠন ও তার ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ না করা ঘুম পাড়ানো গানের শামিল নয় কি?
দুর্নীতিকে আবার দুভাগে ভাগ করা যায়। উচ্চতর ও নিম্নস্তর। নিম্নস্তরের দুর্নীতি আমজনতাকে আঘাত করে সরাসরি। উৎকোচ বিনা কোনো কাজই হাসিল বা আদায় করা ছিল কঠিন বা অসম্ভব। যদিওবা চাকরির নিয়ম বহির্ভূত স্বার্থ কিছু কিছু আদায় হয় উৎকোচের বিনিময়ে, তবে তার সংখ্যা তুলনামূলক কম। কেননা এ ক্ষেত্রে উৎকোচের পরিমাণ বেশির ভাগই লক্ষাধিক হয়। সাধারণের ক্ষমতার বাইরে। দুর্নীতিগ্রস্তরাই এ সুযোগ গ্রহণে সক্ষম। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির অগ্রগতি হচ্ছিল অভিনব সব পন্থায়।
স্বজনপ্রীতি দুর্নীতির আশ্রয়ে পুষ্ট ছিল। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সিট, চাকরি, প্রয়োজন বদলি, ভুয়া মার্কশিট, সার্টিফিকেট, হাসপাতালে ভর্তি এমনকি অপারেশন প্রভৃতি দুর্নীতিতে ছিল ঘেরা। প্রচলিত আইন লঙ্ঘন, প্রশাসনযন্ত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। ফলে প্রশাসন যন্ত্র হয়ে পড়ে ছিল দুর্নীতিপরায়ণ ও অকেজো। কিছু সৎ লোক থাকলেও তারা এসব দেখেশুনে কথা বলত না। ছিল হতাশাগ্রস্ত। এ সুযোগে প্রশ্রয় পাচ্ছিল চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, খুন, ধর্ষণ মাদকদ্রব্যের বহুল ব্যবহার ও নানা সামাজিক অপরাধ। রাজনৈতিক আশ্রয়পুষ্ট দেশপ্রেমিক ও তকমাধারী দালাল শ্রেণিই ছিল সর্বেসর্বা। দুর্নীতির আশ্রয় বিনা কোনো কিছু আদায় করা ছিল কল্পনাতীত। ফলে সামাজিক শান্তিশৃঙ্খলা নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছিল প্রতিনিয়ত। সরাসরি প্রতিবাদ–প্রতিরোধ না হলেও ক্ষোভের মাত্রা বাড়ছিল দিনে দিনে।
যানবাহনের পারমিট, জায়গা-জমির কাগজাদি, শিক্ষকতা থেকে শুরু করে চাকরি, ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ ভিত্তিতে ঠিকাদারি বিলি প্রভৃতির ক্ষেত্রে প্রচলিত আইনের মর্যাদা পাচ্ছিল। ফুটপাত থেকে রাস্তা চলছিল অবাধে কেনাবেচা। এসবের পরে অনৈতিকতায় কালোবাজারি, ধান্দাবাজি, স্বজন পোষণ প্রভৃতি মহামারি রূপে সংক্রমিত হয়েছিল। ভ্রষ্টাচার, অনাচার, মিথ্যাচার, দুর্বৃত্তায়ন, রাজনৈতিক অঙ্গনে শুধু স্বীকৃত পন্থাই নয়, বিধান বললে অত্যুক্তি হবে না। মন্ত্রী, সাংসদ, আমলা, এমনকি জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে দুর্নীতি চেপে বসেছিল। প্রতারিত হচ্ছিল চাকরিপ্রার্থী, বেকার তরুণ–তরুণী থেকে শুরু করে সমাজের বৃহদাংশ। প্রশ্ন হচ্ছে, যারা দুর্নীতি করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয় না কেন? দুর্নীতিকে যারা প্রশ্রয় দেয় তারা কি দুর্নীতিবাজ নয়? ভাব দেখে মনে হয়, কেলেঙ্কারির নায়করাই দেশপ্রেমের পাঠদান করছিল? দুর্নীতি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক মদদে চলছিল। তা না হলে জাতীয় স্বার্থে শাস্তির বিধান হয় না কেন? দুর্নীতি দমনে ইচ্ছার অভাব দিবালোকের মতো স্পষ্ট।
দারিদ্র্য দূরীকরণ, দুর্নীতি দূরীকরণে সতত দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো আজ দেশবাসী বিশেষভাবে যুব সমাজের কাছে ধোঁকাবাজির শামিল। মনে রাখতে হবে, স্বল্প সময়ের জন্য দেওয়া যায়, প্রতারিত করা যায়, বিভ্রান্ত করা যায়। কিন্তু স্থায়ীভাবে সম্ভব নয়। কথাটি চিরন্তন সত্য।
তাই দুর্নীতি নির্মূল করার সংগ্রাম ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তা দেশদরদী, গণদরদী ব্যক্তি ও দলের কাছে আজ অতি জরুরি। ফ্যাসিবাদী মনোভাব বৃদ্ধিকে রোধ করার হাতিয়ার তো বটেই। গেল গেল বলে নিষ্ক্রিয় থাকা অপরাধের শামিল হবে ইতিহাসের কাছে। তা না হলে জাতীয় প্রগতি শুধু বিলম্বিত নয়, পুরো ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিশ্ব খেতাব অর্জন অসাধ্য হলেও দুর্নীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রথম স্থানে ছিল বেশ কয়েক বছর। জাতীয় কলঙ্ক আর কাকে বলে? বস্তুত দলমত-নির্বিশেষে সবার কাছে দুর্নীতি অভিযান জাতীয় স্বার্থে আজ পবিত্র কর্তব্য। নিষ্ঠার সঙ্গে এ কাজ গ্রহণকারী দলসমূহের পক্ষে জনমত অনুকূলে যাওয়ার সম্ভাবনা জরুরি হয়ে উঠেছে। ১. রাজনীতিকে দুর্নীতি মুক্ত করা। সংগঠনে দুর্নীতিকে কোনো অবস্থাতেই প্রশ্রয় না দেয় ২. দুর্নীতিকে ঘৃণ্যতম জাতীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে কঠিনতম দণ্ডদান ৩. দুর্নীতিমুক্ত রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক ব্যক্তিত্বকে জাতীয় সম্মান দেওয়া ৪. সংসদে গৃহীত আইন মোতাবেক মন্ত্রী, সাংসদ, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, কর্মকর্তাদের সম্পদ এবং আয়কর পরিশোধের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করা ৫. দুর্নীতিমূলক কাজে লিপ্ত অভিযুক্তদের রক্ষায় প্রশাসন বা বিচার বিভাগের কাজে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টিকে অপরাধ বলে আইন মাফিক ঘোষণা করা ৬. দেশে প্রচলিত আইন মোতাবেক অভিযুক্তদের বিচারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ, প্রভাব বিস্তার অপরাধ বলে গণ্য করা ৭. আইন ভঙ্গকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা ৮. রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকে সামাজিক ঘৃণ্যতম অপরাধ বলে রাজনৈতিক দলগুলোর জনসমক্ষে ঘোষণা করা ৯. দুর্নীতিকে ঘৃণ্যতম অপরাধবোধে সামাজিক চেতনা বৃদ্ধি করা ১০. আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দুর্নীতি থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ১১. দুর্নীতি দমন কমিশনে সৎ, দেশপ্রেমিক ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া।
মনে রাখতে হবে, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি ও শাসন স্থায়ী করা অসম্ভব। আধুনিক কালের ইতিহাস এ সাক্ষ্যই দেয় যে দক্ষিণপন্থী, উদারপন্থী, বামপন্থী যে রাজত্বই হোক না কেন, দুর্নীতি দমনের নামে প্রহসন বুমেরাং হওয়ার আগেই জাতীয় স্বার্থে নড়েচড়ে বসা জরুরি হয়ে পড়েছে।