অণুগুলো অতিক্রমের আগে

আমার দু’হাত ভরা হিজল ফুল। এর আগে এই দু’হাতে

পলাশ ছিল, রক্তজবা ছিল, কৃষ্ণচূড়া ছিল। ছিল ঘন সেগুনের
গুচ্ছ গুচ্ছ পাতা। যে মাটিতে দাঁড়িয়ে আমি হা-ডু-ডু
খেলতাম, সেই মাটিতে পঁচিশ বছর লেগে থেকেছিল আমার
পায়ের দাগ। আমার কনুইয়ে লেগে থেকেছিল সেই মাটিচিহ্ন।

মূলত আমি মাটিপুত্র। মূলত আমি ধীবর সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি।
তাই আটলান্টিকে কাউকে জাল ফেলে মাছ ধরতে দেখলে;
বঙ্গোপসাগরের স্মৃতি রোমন্থন করি। হাত উঁচু করে আঙুল
মিশিয়ে দিই তার সাথে। বলি, আজকের দুপুর মৎস্যময় হোক!

তোমাদের পাশে যে অণুজীবগুলো প্রতিদিন ঘোরাঘুরি করে-
এমন অনেক প্রটোজোয়া কিংবা এককোষী শৈবাল পরখ
করতে করতেই আমি বেড়ে উঠেছি সমুদ্র তীরে। জানি, এই
অণুযন্ত্রণার কাল অতিক্রান্ত হলেই-তোমরা তার কথা ভুলে
যাবে। অথচ যারা চিরকালের অনাহারী, যাদের ক্ষুধার কোনো
সংজ্ঞা নেই; ওরা থেকে যাবে আমার পাশে, আমাদের পাশে-
প্রতিদিনের মতোই। প্রতিটি ভোরকেই দুঃস্বপ্ন ভেবে, প্রতিটি
সূর্য আর চন্দ্রকে ভেবে আঁধারের ধ্বংসস্তূপ, বর্জ্যের প্রতিরূপ ।