Thank you for trying Sticky AMP!!

কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতেই তিমিটি মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে

কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের বালুচরে আটকে আছে মৃত তিমি। গত শুক্রবার রাতে জোয়ারের সময় সৈকতের সংরক্ষিত বন এলাকায় তিমিটি আটকা পড়ে। সংরক্ষিত বন এলাকা, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত, ১৮ মে। ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের বালুচরে জোয়ারে ভেসে আসা মৃত তিমিটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার সৈকতের বালুচরেই তিমিটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়।

গত শুক্রবার রাতের ভরা জোয়ারের সময় কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের সংরক্ষিত বন এলাকায় তিমিটি ভেসে আটকা পড়ে । শনিবার সকাল থেকে মৃত তিমিটি দেখতে পান কুয়াকাটায় আগত পর্যটক ও জেলেরা। এটি দৈর্ঘ্যে ৪৫ ফুট এবং প্রস্থে ২০ ফুট। ওজন আনুমানিক চার থেকে পাঁচ টনের মতো হবে বলে জানা যায়।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তানভীর রহমান উপস্থিত থেকে মাটিচাপা দেওয়ার কাজটি সম্পন্ন করেন। এ সময় মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (ইউএলও) মো. রফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

মো. রফিকুল ইসলাম জানান, রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মৃত তিমির দেহাবশেষ মাটিচাপা দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। এ কাজে ২০-২৫ জন শ্রমিককে যুক্ত করা হয়। মাটিচাপা দেওয়া সম্পন্ন করতে পৌনে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তানভীর রহমান বলেন, ‘মাছটি পচে যাওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। কুয়াকাটা পর্যটন এলাকার পরিবেশ সুরক্ষার কারণে সৈকতের বালুচরেই দ্রুত মৃত তিমিটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। তবে কেউ এর কঙ্কাল সংরক্ষণ করার চিন্তা করলে এ ব্যাপারে সহায়তা দেওয়া হবে।’

তিমি মাছটি কীভাবে মারা গেছে, এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা (এসইউএফও) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘তিমির মৃতদেহ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এর মাথার ওপরে বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে; যা থেকে অনুমান করা যায়, পানির গভীর থেকে শ্বাস নেওয়ার জন্য খাড়াভাবে ওপরে উঠতে গিয়ে সাগরে থাকা কোনো জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এটি মারা যেতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জেলেরা ইনলিগ্যাল আনরেগুলেটেড অ্যান্ড আনরিপোর্টেড (আইইউইউ ফিশিং) তথা সামুদ্রিক প্রাণী সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতন। সমুদ্রবক্ষে তিমি, ডলফিন ও হাঙর শিকার বা ক্ষতি করার কোনো ইচ্ছা আমাদের জেলেদের মধ্যে লক্ষ করা যায় না। এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তর জেলেদের তিমি, হাঙর ও ডলফিন শিকার না করার বিষয়ে তাগিদ দিয়ে থাকে।’

এদিকে মাছটির কঙ্কাল সংরক্ষণ করে রাখা যায় কি না, তা যাচাই করতে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং অ্যাকোয়া কালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন মণ্ডলের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। শনিবার সকালে এ দলটি কুয়াকাটায় যান।

এ দলের সদস্য এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকোয়া কালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রোসনে আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাছটির কঙ্কাল সংরক্ষণ করে রাখার চিন্তা করা হয়েছিল। জায়গা না থাকায় সে চিন্তা বাদ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফআরআই) অথবা বন বিভাগ কঙ্কাল সংরক্ষণ করে রাখতে পারে। এখনো কঙ্কাল সংরক্ষণ করে রাখার সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমরা কারিগরি সহায়তা দিতে পারি।’