Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকা-জলপাইগুড়ি ট্রেন নাম পাচ্ছে ‘মিতালী’

মালবাহী ট্রেনের উদ্বোধন আগেই হয়েছে। এখন যাত্রীবাহী ট্রেন উদ্বোধনের অপেক্ষা

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চালু হতে যাওয়া নতুন ট্রেনটির নাম হতে যাচ্ছে ‘মিতালী এক্সপ্রেস’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নামটি ঠিক করেছেন। এখন ভারত রাজি থাকলে এই নামেই চলবে ঢাকা–জলপাইগুড়ি ট্রেনটি।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ২৭ মার্চ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নতুন এই ট্রেনটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এটি ঢাকার সেনানিবাস রেলস্টেশন থেকে নীলফামারীর চিলাহাটি হয়ে নিউ জলপাইগুড়ির পথে চলাচল করবে।

রেলওয়ের পক্ষ থেকে গতকাল রোববার নতুন ট্রেনের প্রস্তাবিত নাম জানানো হয়। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ট্রেনটি উভয় দেশ থেকে সপ্তাহে দুই দিন করে চলাচল করবে। বাংলাদেশ থেকে সোমবার ও বৃহস্পতিবার। ভারত থেকে রোববার ও বুধবার চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন ট্রেনের নাম ঠিক করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চারটি নাম পাঠানো হয়—মিতালী, সম্প্রীতি, সুহৃদ ও বন্ধুত্ব। এ থেকে মিতালী নামটিই বাছাই করেন তিনি। ভারত এই নামে দ্বিমত করবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।
ভারত–বাংলাদেশ এখন যে দুটি ট্রেন চলছে, তার মধ্যে ঢাকা–কলকাতা ট্রেনের নাম মৈত্রী এক্সপ্রেস, খুলনা–কলকাতা রুটের ট্রেনটি হলো বন্ধন এক্সপ্রেস।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, ২৭ মার্চ উদ্বোধন হলেও ওই দিন থেকেই ট্রেন চলাচল করা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও বাংলাদেশ ভ্রমণ ভিসা বন্ধ রয়েছে। ফলে নতুন ট্রেনে যাত্রী পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন না রেলওয়ে কর্মকর্তারা। আর ট্রেন চালুর ১০ দিন আগে থেকেই টিকিট বিক্রি শুরু হওয়া দরকার। কিন্তু এখনো ভাড়ার হারই চূড়ান্ত হয়নি।

জানতে চাইলে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী আজ রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ট্রেনের নাম, ভাড়ার হার ও রাজস্ব আয় নিয়ে ভারতের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই সব জানা যাবে।’

Also Read: চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলসংযোগ চালু

রেলের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ উদ্বোধনের পর মালবাহী ট্রেন চলাচল করার কথা ছিল। তবে মাল পরিবহনে আগ্রহী ব্যবসায়ী পাওয়া যায়নি বলে তা চালু হয়নি। এখন যাত্রীর অভাবে যাত্রীবাহী ট্রেনও চালু করার সুযোগ নেই।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশের ব্রডগেজ ট্রেনের কোচ নেই। এ জন্য ভারতের কোচ দিয়েই যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১০টি কোচের একটি ট্রেন বিনা পয়সায় ভারত দিতে রাজি হয়েছে। বাংলাদেশ কোচ আমদানি করলে নিজস্ব ট্রেন চালানো হবে। সম্ভাব্য ভাড়ার হার ও কোন দেশ কত রাজস্ব পাবে, সে প্রস্তাব ভারতের কাছে পাঠানো হয়েছে। ট্রেনে তিন ধরনের আসন থাকবে। এসি বার্থ, এসি সিট ও এসি চেয়ার। এগুলোর ভাড়া হার প্রস্তাব করা হয়েছে যথাক্রমে ৪৪, ৩৩ ও ২২ ডলার।
ঢাকা-জলপাইগুড়ি পথের দূরত্ব ৫৯৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে ৫২৬ কিলোমিটার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দূরত্ব বিবেচনায় নিয়ে ট্রেন থেকে হওয়া আয় দুই দেশের মধ্যে ভাগাভাগির একটি প্রস্তাব ভারতকে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আয়ের ৮৫ ভাগ পাবে বাংলাদেশ, ১৫ ভাগ ভারতের। মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনেও দূরত্ব অনুসারে আয় বণ্টন হয়। এই পথের দূরত্ব ৫৩৮ কিলোমিটার। বাংলাদেশে পড়েছে ৪১৮ কিলোমিটার। বাকিটা ভারতে। আয়ের ৭৫ শতাংশ পায় বাংলাদেশ। ভারত পাচ্ছে ২৫ শতাংশ।

চিলাহাটি থেকে ভারত সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সূত্র জানায়, এখন যে অবকাঠামো আছে, তা দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো যাবে। তবে আধুনিক স্টেশন, অভিবাসন অবকাঠামো এবং স্টেশনসংলগ্ন খোলা জায়গা দরকার। এর জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে ১৪৩ কোটি টাকা হবে।