Thank you for trying Sticky AMP!!

তরুণদের মন জয় করতে চায় দলগুলো

এবারে নির্বাচনে তরুণদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিশেষ স্থান পাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে। ছবি: প্রথম আলো

একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে তরুণ ভোটাররা। রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, এবার তরুণদের ভোট সংখ্যায় অনেক। তাঁদের টানতে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে তাঁদের সুবিধার কথা উল্লেখ করবে।

এ ছাড়া তাঁদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিশেষ বিবেচনা পাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে। তরুণদের জন্য কেমন হবে নির্বাচনী ইশতেহার—এ নিয়ে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো।

নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এবারের হালনাগাদ শেষে নতুন ভোটারের সংখ্যা ৪৩ লাখের বেশি। সব মিলিয়ে এবার ভোটার সংখ্যা ১০ কোটি ৪১ লাখের বেশি। এই ভোটারদের প্রায় আড়াই কোটি ভোটারই তরুণ।

২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিলেন ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ১৬৭ জন। ২০০৮ সালে ছিলেন ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার। অর্থাৎ, গত ১০ বছরে তরুণ ভোটার বেড়েছে ২ কোটি ২৫ লাখ। আগামী নির্বাচনে এঁরাই জয়-পরাজয়ে মুখ্য ভূমিকা রাখবেন। তরুণদের ভোট যাঁরা বেশি পাবেন, তাঁদের বিজয়ী হওয়া সহজ হবে বলে দলটির ধারণা।

নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, প্রতিটি আসনে গড়ে ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার পর্যন্ত তরুণ ভোটার রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে তরুণ ভোটারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এবারের ভোটে তাঁদের গুরুত্ব অপরিসীম। তরুণ ভোটারদের গুরুত্ব মাথায় রেখে এবারে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল, কর্মসংস্থান—এসব বিষয় এবারের নির্বাচনের ইশতেহারে গুরুত্ব পাবে। তরুণদের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়েই নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করা হচ্ছে।’

জাতীয় পার্টির কো–চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে তরুণেরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই তরুণদের টানতে পারলে যেকোনো দলের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। আমরাও তরুণদের দলে টানার চেষ্টা করব। আমাদের বিশ্বাস, আমাদের কার্যক্রম তরুণদের মনযোগ আকর্ষণ করবে। এবারের নির্বাচনী ইশতেহার করা হবে তরুণদের কথা মাথায় রেখে। তাদের প্রধান সমস্যা চাকরির সুযোগ। এ জন্য তাদের পর্যাপ্ত চাকরির সুযোগ তৈরির কথা ইশতেহারে থাকবে। বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে, পর্যটনশিল্পের প্রসার ঘটিয়ে ও আলাদা অর্থনৈতিক জোন করে তাদের পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে। এ ছাড়া শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করা হবে। গবেষণাকেন্দ্রিক পড়াশোনার সুযোগ তৈরি করা হবে। কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটানো হবে। তরুণদের অন্যতম আকর্ষণ ইন্টারনেট। আমরা ইন্টারনেটের খরচ কমাতে কাজ করব। এ ছাড়া তরুণদের আরও অনেক বিষয় আমরা ইশতেহারে উল্লেখ করব। সেগুলো এখনই বিস্তারিত জানাতে পারছি না। আমাদের ইশতেহার তরুণদের টানবে বলে আশা করছি।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এবারে তরুণেরাই চমক দেখাবে। তাদের নিয়ে আমাদের বিশেষ ভাবনা আছে। তরুণেরা সংখ্যায় অনেক হওয়ার পরও আগের সরকারগুলো তাদের বিষয়ে বিশেষ যত্ন নেয়নি। বর্তমানে আমাদের দেশে শিক্ষিত বেকার প্রায় এক কোটি। তাদের নিয়ে আমরা ভাবছি। কীভাবে তাদের চাকরি দেওয়া যায়, তা আমাদের বিশেষ বিবেচনায় আছে। ইশতেহারে তরুণদের জন্য বিশেষ কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করব। আলাদা স্কিম করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। তারা যাতে সমাজ পরিবর্তন করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে, সে জন্য কিছু কাজ করছি আর কিছু কাজ ভবিষ্যতে করব। এসব বিষয়ই আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে খুব শিগগিরই দেওয়া হবে।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শিক্ষিত তরুণ যদি কর্মহীন হয়ে পড়ে, তাহলে গোটা জাতির ওপর প্রভাব পড়ে। বেকারদের যত কর্মসংস্থান হবে, বুঝতে হবে সে দেশ তত উন্নত হচ্ছে। উন্নতির সঙ্গে যাতে তরুণেরা সম্পৃক্ত হতে পারে, সে জন্য আমরা কাজ করব। তরুণদের গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা, তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতা ও উৎকর্ষ, সর্বশেষ প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয়, প্রশিক্ষণ দেওয়া, তরুণদের উদ্যমী করে তোলাসহ তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা কাজ করব। তরুণদের প্রতিযোগিতার উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করব। আমাদের ২০২০-২০৩০ যে ভিশন আছে, সেখানে তরুণদের নিয়ে আমাদের লক্ষ্য তুলে ধরা হয়েছে। তরুণদের অন্যতম বড় চাওয়া ছিল কোটা সংস্কার। সেটা আমরা আরও এক–দেড় বছর আগে বলেছি। মেধাবীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছি আমরা। তরুণদের চাওয়া, ভাবনা, তাদের চিন্তার কথা আমাদের ইশতেহারে থাকবে। তবে কর্মসংস্থানকে এক নম্বর অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’

আরও পড়ুন...