Thank you for trying Sticky AMP!!

ধর্ষণের আলামত পাননি চিকিৎসক, গ্রেপ্তার আরও ১

>
  • ধর্ষণের আলামত পায়নি মেডিকেল বোর্ড
  • বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নির্যাতনের শিকার নারী
  • চিকিৎসক জানান, এক বছরে এক শর বেশি ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষায় আলামত মিলেছে একটিতে
  • ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও এক

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় মা ও সন্তানদের জিম্মি করে নারীকে (২৯) ধর্ষণের আলামত পায়নি মেডিকেল বোর্ড। গতকাল বুধবার ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষায় আলামত না পাওয়ার খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নির্যাতনের শিকার নারী। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে জামাল উদ্দিন (২৮) নামে আরও এক ব্যক্তিকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছে।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতি ইউনিয়নের দশবাহা এলাকার একটি বাড়ি থেকে জামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই মামলার প্রধান আসামি জাকের হোসেন ওরফে জহির আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে যে পাঁচজনের নাম বলেছিলেন, জামাল তাঁদের একজন। ঘটনার পর থেকে জামাল আত্মগোপনে ছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

ধর্ষণের আলামত না পাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. খলিল উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, গত এক বছরে তাঁরা এক শর বেশি ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষা করেছেন। এর মধ্যে আলামত পেয়েছেন মাত্র একটিতে। সেটি গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের রাতে সুবর্ণচরের গণধর্ষণের ঘটনাটি।

মামলার বাদী নির্যাতনের শিকার নারী তিনজনের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন। এ মামলার প্রধান আসামি জাকের হোসেন ওরফে জহিরও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে তিনিসহ চারজন ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ নির্যাতিত নারীর দেবরসহ তিন আত্মীয়কেও গ্রেপ্তার করেছে।

ডাক্তারি পরীক্ষায় আলামত না পাওয়ার খবরে নির্যাতনের শিকার নারী গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, তিন ব্যক্তি তাঁর মুখে কম্বল চাপা দিয়ে ধর্ষণ করেছেন, এটা নিশ্চিত। তাঁর শরীরে এখনো নির্যাতনের যন্ত্রণা, ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না। ওই নারী বলেন, ঘটনার সময় তাঁর পরনে যে কাপড় ছিল, তা থানায় মামলার পর ওই দিনই কবিরহাট থানার ওসির কাছে জমা নিয়েছেন। হাসপাতালে ডাক্তার দুই দফায় তাঁর কাছ থেকে আলামত সংগ্রহ করেছেন।

ওই নারীর স্বামী বলেন, একজন নারী ধর্ষণের শিকার না হয়ে কখনো জনসমক্ষে এ ধরনের ঘটনা প্রকাশ করেন না। তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণসহ যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, এখনো তিনি তা বয়ে বেড়াচ্ছেন। স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সুযোগ থাকলে প্রয়োজনে তাঁকে পুনরায় পরীক্ষা করে দেখা হোক।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রবিউল হাসান বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া না গেলেও কোনো সমস্যা নেই। ধর্ষণের ঘটনায় অসুস্থতার বিষয়টি প্রমাণিত। এজাহারভুক্ত আসামি জাকেরও দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত আরও বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণও এরই মধ্যে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

তিন আত্মীয় রিমান্ডে
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার নির্যাতিত নারীর তিন আত্মীয়কে গতকাল চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিন আসামিকে কারাগার থেকে ডিবি কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে তিন সন্তান ও মাকে জিম্মি করে এক গৃহবধূকে (২৯) গণধর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা। ধর্ষণের শিকার নারীর বর্ণনা অনুযায়ী, পুলিশ এ ঘটনায় জাকের হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। জাকের ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচিত। যদিও আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, তাঁর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।


আরও পড়ুন...