Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রভাবশালীদের চাপে শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতি মোটেও সত্য নয়: দুদক

সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতি নিয়ে আলোচনার মধ্যে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছেন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেছেন, দুর্নীতির তদন্তে প্রভাবশালীদের নাম আসায় তাঁদের চাপে শরীফকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে যেসব বলা হচ্ছে, তা মোটেও সত্য নয়।

তাহলে কেন এই কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হলো, সেই প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেছেন, চাকরিবিধি না মানার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Also Read: চাকরিচ্যুতির পেছনে পর্দার আড়ালের শক্তি কাজ করেছে

দুদক পটুয়াখালী কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে গত বুধবার চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। গত বছরের ১৬ জুন পটুয়াখালীতে বদলির আগে শরীফ দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। সে সময় সরকারি প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে অনিয়মের ঘটনা তদন্ত করে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করেছিলেন তিনি। দায়িত্ব পালনের কারণে প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছিলেন জানিয়ে থানায় জিডিও করেছিলেন দুদকের এই কর্মকর্তা। তাঁকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকে।

এই পরিস্থিতি আজ রোববার বিকেলে দুদক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব হোসেন বলেন, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের কিছু মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দুর্নীতি উদ্‌ঘাটনের কারণে তাঁদের প্রভাবে তাঁকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে, এটা মোটেও সত্য নয়। দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো প্রভাব আমলে নেয় না এবং প্রভাবিত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে না বলেও দাবি করেন তিনি।

Also Read: দুর্নীতির তদন্তে যাঁদের নাম, তাঁরাই অভিযোগকারী

লিখিত বক্তব্যে শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের কারণ উল্লেখ করে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আপনি কমিশনের নিয়ম মানবেন না। অনুমোদন ছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করবেন। আমার কোনো কিছুই আপনি মানবেন না, কমিশন কেন আপনাকে রাখবে? তিনি যদি চাকরিবিধি না মানেন, অফিস ব্যবস্থাপনা না মানেন, তাহলে তো হার্ডলাইনে যেতেই হবে।’

দুদক সচিব বলেন, ‘দুদক একটি সংবিধিবদ্ধ আইনি প্রতিষ্ঠান। আমাদের তদন্ত অনুসন্ধান যাঁরা করে থাকেন, তাঁরা একটা সেট রুলস অনুসরণ করেন। আমাদের বিধানের প্রসিডিংস রয়েছে, আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। তিনি একসঙ্গে ২৫টি (ব্যাংক অ্যাকাউন্ট) লিখিতভাবে বন্ধ করে দিলেন, মৌখিকভাবে বন্ধ করে দিলেন ৮টি। আপনি যদি সার্ভিস করেন, তাহলে সার্ভিস রুল মানতে হবে। নিজের মনগড়া কাজ করতে পারবেন না।’

Also Read: ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির তদন্তে নেমে বিপদে তিনি

তাহলে শরীফ উদ্দিনের এসিআরে কেন তাঁর কার্যক্রমকে অতি উত্তম বলা হয়েছিল, সে প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, সম্ভবত ২০১৪ সালে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। স্বভাবগত কারণে তাঁদের উৎসাহিত করার জন্য এবং তখন যেসব কাজকর্ম করেছেন, সেটির মূল্যায়ন করা হয়েছিল (এসিআরে অতি উত্তম লেখা হয়েছিল)। তিনি বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে যেসব তথ্য-উপাত্ত আপনাদের দিয়েছি, আপনি আজ যে অবস্থানে আছেন, এক দিন পর, দুই দিন পর সে অবস্থানে থাকবেন কি না, তা আপনিও জানেন না, আমিও জানি না। তাঁর সিকোয়েন্সিয়াল যে মূল্যায়ন, সেটা তো আমলে নিতে হবে।

এটা তো আমার চাকরির পার্ট, শুধু ওই একটা দেখে, বাকি সব ওভারলুক করার তো সুযোগ নেই।’

শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে দুদকের একদল কর্মকর্তা-কর্মচারীও মানববন্ধন করেছেন। এই ঘটনা থেকে তাঁদের মধ্যেও একধরনের ভীতি তৈরি হয়েছে বলে আলোচনা রয়েছে। এ বিষয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের পরদিন এবং আজও কিছু কর্মকর্তা আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁদের আমরা বলেছি, কোনো দুঃখ–ক্ষোভের বিষয় থাকলে আমরা বিধিসম্মতভাবে দেখব।

এখানে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই, ভয়ের কিছু নেই। শুধু আমরা (দুদক) নই, যেকোনো প্রতিষ্ঠানই চালাতে হলে এর বিধিবিধান মানতে হবে। এখন আপনি যদি স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, তাহলে তো হবে না। আপনি যদি আপনার মনমতো কাজ করেন, সেটা তো কারোরই কাম্য নয়। শৃঙ্খলার মধ্যে কাজ করতে হবে।’