Thank you for trying Sticky AMP!!

হাফিজুরও না ফেরার দেশে

হাফিজুর রহমান

ময়মনসিংহের ভালুকায় বিস্ফোরণে দগ্ধ হাফিজুর রহমানও (২৪) না ফেরার দেশে চলে গেছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় হাফিজকে নিয়ে চার বন্ধুর তিনজনই মারা গেলেন।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া বার্ন ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসকের বরাত দিয়ে প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। একই তথ্য প্রথম আলোকে জানান হাফিজের সহপাঠী তুষার মাহমুদ।

এর আগে বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহীন মিয়া (২৪) ।

নিহত হাফিজ নওগাঁর বাসিন্দা বিল্লাল হোসেনের ছেলে। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট সূত্র জানায়, হাফিজের শ্বাসনালিসহ শরীরের ৫৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

গত শনিবার রাতে ভালুকার মাস্টারবাড়ি এলাকায় একটি ছয়তলা ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তৌহিদুল ইসলাম (২৩) নামের একজন মারা যান। গুরুতর দগ্ধ হন দীপ্ত সরকার (২৩), শাহীন মিয়া (২৪) ও হাফিজুর রহমান। তাঁরা সবাই খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। এঁদের মধ্যে দীপ্ত সরকার এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় বেঁচে আছেন।

শিক্ষাজীবন শেষে কর্মজীবনে ঢোকার আগে হাতে-কলমে শিক্ষা নিতে এই চার শিক্ষার্থী ভালুকার স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড নামের কারখানায় শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। কারখানার পাশে মাস্টারবাড়ি এলাকায় তাঁরা ফ্ল্যাট ভাড়া নেন।

হতাহত এই চার শিক্ষার্থীর সবাই বিভাগে মেধাতালিকায় প্রথম দিকে ছিলেন। তাঁদের সহপাঠী তুষার মাহমুদ জানান, সম্মিলিত ফলাফলে দীপ্ত দ্বিতীয়, তৌহিদ তৃতীয় ও শাহীনের অবস্থান ছিল চতুর্থ।

স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম জানান, ওই চার শিক্ষার্থী ১১ মার্চ থেকে ইন্টার্নি শুরু করেন, যা ৫ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা।

বিস্ফোরণের পর দীপ্ত, শাহীন ও হাফিজুরকে গত রোববার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানিয়েছেন, জীবিত দীপ্তের শরীরের ৫৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।

ঘটনার পর পুলিশ জানায়, মাস্টারবাড়ি এলাকার বাড়িটির মালিক অবৈধভাবে গ্যাস-সংযোগ নিয়েছিলেন। সেই সংযোগের ফুটো থেকে গ্যাস ছড়িয়ে বিস্ফোরণ ঘটেছে। ভবনমালিকের অবহেলায় হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভালুকা থানার পুলিশ।

বিস্ফোরণের পর রোববার সন্ধ্যায় ছয়তলা ওই ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় পুলিশ। ভবনের অন্য ভাড়াটেরা আগেই ভবন ছেড়েছেন।