Thank you for trying Sticky AMP!!

যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেলেন বাংলাদেশি তারিকুল

ওয়াশিংটনে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মানব পাচারবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তারিকুলসহ ছয়টি দেশের ছয়জন নাগরিককে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

তারিকুল ইসলাম

মানব পাচারবিরোধী লড়াইয়ে ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের নাগরিক মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম টিআইপি হিরো স্বীকৃতি পেয়েছেন। গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের মানব পাচারবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তারিকুলসহ ছয়টি দেশের ছয়জন নাগরিককে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে মানব পাচারবিষয়ক (ট্রাফিকিং ইন পারসনস বা টিআইপি) প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বক্তৃতা করেন। প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে ‘টিআইপি হিরো’ স্বীকৃতি পাওয়া ব্যক্তিদের সম্মাননা জানান তিনি।

Also Read: মানবপাচার-সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রশংসা

স্বীকৃতি পাওয়া অন্য পাঁচজন হলেন জর্ডানের মেজর মোহাম্মদ আল-খলাইফাত, লাইবেরিয়ার কর্নেলিয়াস ওয়েন্নাহ, পোল্যান্ডের ইরেনা দাউইদ-ওলকজিক, থাইল্যান্ডের অপিন্যা তাজিৎ ও ইউক্রেনের কাতেরিনা চেরেপাখা।

তারিকুল যুক্তরাজ্যভিত্তিক এনজিও জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর। তাঁর সম্পর্কে টিআইপি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের পক্ষে অক্লান্তভাবে কাজ করা একজন ব্যক্তি। তাঁর কাজ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তকাজ পরিচালনা ও তাঁদের বিচার করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।

অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমাদের ২০২২ সালের ছয় টিআইপি হিরোকে ধন্যবাদ। আমাদের নায়কেরা সারা বিশ্বের মানুষের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আনছেন।’

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অফিস টু মনিটর অ্যান্ড কমব্যাট ট্রাফিকিং ইন পারসনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ক্যারি জনস্টোন প্রথমেই তারিকুল ইসলামকে সম্মানিত করেন। ক্যারি জনস্টোন বলেন, মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সহায়তা, বাংলাদেশ সরকারের তদন্ত-বিচার সক্ষমতার উন্নতি ও বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে আন্তসীমান্ত সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য তারিকুল ইসলামের অদম্য সংকল্পের স্বীকৃতি এ সম্মান।

অনুষ্ঠানে তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্বীকৃতি পাওয়া ব্যক্তিদের ছোট নেটওয়ার্কের অংশ হওয়াটা গর্বের বিষয়। তবে আমি অবশ্যই জানি, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরাই আসল নায়ক।’

পাচার থেকে বেঁচে যাওয়া শত শত মানুষের সঙ্গে তাঁরা বাংলাদেশে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন জানিয়ে তারিকুল বলেন, তাঁরা আনন্দ ও গর্বের সঙ্গে এই ব্যক্তিদের স্বাভাবিক জীবন পুনর্গঠনের বিষয়টি দেখেন। তিনি বলেন, এই ব্যক্তিরা অন্যদের সাহায্য করতে নিজেদের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করছেন। তাঁরা বড় পরিসরে পরিস্থিতি পরিবর্তন করছেন। তাঁদের গল্প আশা দেখায়। তাই এই পুরস্কার তাঁদেরই।

টিআইপি প্রতিবেদনে বলা হয়, তারিকুল মানব পাচারবিরোধী সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছেন, যা দুই হাজারের বেশি পাচারের শিকার ব্যক্তিকে সহায়তা করেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে তিনি আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন।

২০২১ সালের টিআইপি প্রতিবেদনে থাকা সুপারিশের বাস্তবায়নসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পরিমাপযোগ্য অগ্রগতি অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় তারিকুল সমর্থন জুগিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয় এ প্রতিবেদনে।

বিশ্বজুড়ে মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিবেদিতভাবে কাজ করছেন—এমন ব্যক্তিদের ২০০৪ সাল থেকে প্রতিবছর সম্মানিত করে আসছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।