Thank you for trying Sticky AMP!!

পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার মূলে চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়া

২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছর পূর্তি সামনে রেখে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ করে চারটি সংগঠন। ঢাকা, ২৯ নভেম্বর

দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের ব্যবহার করেছে। কিন্তু তাদের সুযোগ-সুবিধা, অধিকার ও মৌলিকতার প্রশ্ন আসে, তখন তারা নিশ্চুপ হয়ে যায়। ২৬ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করার পর তা বাস্তবায়ন না করে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে একধরনের তামাশা করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার মূলে চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়া। এই চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চলবে।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন। ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছর পূর্তি সামনে রেখে যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে চারটি সংগঠন। সংগঠনগুলো হলো আদিবাসী ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও আদিবাসী যুব ফোরাম।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সই হয়। এর মাধ্যমে পার্বত্য এলাকায় দুই দশকের সশস্ত্র সংঘাতের অবসান হয়। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ চুক্তি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস)।

সমাবেশ থেকে সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন; জেএসএসের কর্মী-সমর্থক, শুভাকাঙ্ক্ষী ও সহযোগী-অঙ্গসংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী নারী ও শিশুদের প্রতি সব ধরনের সহিংসতার বিচার ও তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

আদিবাসী ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ বলেন, ২৬ বছর পেরোলেও এর ৭২টি ধারার মধ্যে মাত্র ২৫টি বাস্তবায়ন করেছে। চুক্তি সম্পাদনকারী জনসংহতি সমিতির নেতাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করা হয়েছে। আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদ গঠন করা হলেও তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়নি। বরং একে ধ্বংসের পাঁয়তারা করা হয়েছে।

চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়া পার্বত্য চট্টগ্রামের সব সমস্যার মূল কারণ বলে উল্লেখ করেন আদিবাসী যুব ফোরামের সভাপতি আন্টনি রেমা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের যে আশ্বাস দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াও তারা শুরু করতে পারেনি। যে প্রজন্ম এই চুক্তি করেছিল, তাঁদের অনেকে মারা গেছেন, অনেকে প্রবীণ। সরকারের কাছে প্রশ্ন, আর কত প্রজন্ম পেরিয়ে গেলে চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে?

পাহাড়ি ছাত্র পরিয়দের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নই পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ। চুক্তি নিয়ে সরকারের এই মিথ্যাচার ও টালবাহানা বন্ধ করতে হবে।

Also Read: চুক্তিতেই আটকে আছে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি দীপক শীল। তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তি খাতা-কলমেই শুধু বাস্তবায়িত হয়েছে। একটি ধারাও এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি চন্দ্রিকা চাকমা, ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি অতুলন দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ। সমাবেশের পর শাহবাগ থেকে টিএসসি পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সংগঠনগুলোর সদস্যরা।

Also Read: পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি পাহাড় ছাড়িয়ে সমতলে