Thank you for trying Sticky AMP!!

দুই মাসে করোনা শনাক্ত ২২৯৫, সেখানে চিকিৎসাধীন ২০ হাজার কীভাবে হয়

ফাইল ছবি

দেশে কয়েক মাস ধরে করোনার সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। গত দুই মাসে দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে মাত্র ২ হাজার ২৯৫ জন। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি।

সাধারণত করোনা থেকে সেরে উঠতে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। সাম্প্রতিক সময়ে খুব বেশি করোনা রোগীও শনাক্ত হয়নি। এতে করোনার জন্য নির্ধারিত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের প্রায় সব শয্যা ফাঁকা। ফলে চিকিৎসাধীন রোগীর বর্তমান সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টিকে অধিদপ্তরের হিসাবের গরমিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, ঠিক দুই মাস আগে গত ২৬ অক্টোবর দেশে করোনা শনাক্তের মোট সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৭২৯। আর গতকাল রোববার পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৩৭ হাজার ২৪ জনের। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৭ জন। মারা গেছেন ২৯ হাজার ৪৩৯ জন। শনাক্ত রোগী থেকে সুস্থ হওয়া ও মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বাদ দিলে দেশে গতকাল চিকিৎসাধীন রোগী (অ্যাকটিভ কেস) ২০ হাজার ২৮৮ জন।

করোনার পরও এত মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে, এটা তো বিশাল ব্যাপার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সত্যি কতজনের খোঁজ নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আরও সঠিকভাবে তাদের তথ্য উপস্থাপন করা প্রয়োজন
আবু জামিল ফয়সাল, জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য

তবে ২০ হাজারের বেশি করোনা রোগীর চিকিৎসাধীন থাকার বিষয়টিকে ‘অস্বাভাবিক ও আশ্চর্যজনক’ বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির এই সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, করোনার পরও এত মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে, এটা তো বিশাল ব্যাপার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সত্যি কতজনের খোঁজ নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আরও সঠিকভাবে তাদের তথ্য উপস্থাপন করা প্রয়োজন।

Also Read: করোনা কি আবারও চোখ রাঙাচ্ছে?

বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক আহমেদুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, অনেক রোগী পোস্ট কোভিড জটিলতায় ভোগেন। তাঁদের সুস্থ তালিকায় দেখানো হয় না। আইসোলেশনে থাকা রোগীদেরও হিসাবে দেখানো হয়নি। অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগকে দ্রুত হিসাব মিলিয়ে দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে রোগী না থাকায় সারা দেশে করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের সাধারণ ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রায় সব শয্যাই ফাঁকা থাকছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল দেশে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যা ছিল ১২ হাজার ৮৬০টি। এর মধ্যে মাত্র ২৮টি শয্যায় রোগী ভর্তি ছিল। আর সারা দেশে করোনার আইসিইউ শয্যা ১ হাজার ১৮৬টি। এর মধ্যে মাত্র ১৭টি শয্যায় রোগী ভর্তি ছিল; অর্থাৎ করোনার সাধারণ ও আইসিইউ শয্যার ৯৯ শতাংশের বেশিই খালি রয়েছে।

Also Read: সতর্ক না হলে বিপদ বাড়তে পারে

সরকার ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের কথা জানায়। তখন থেকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিদিন করোনাবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে আসছে। শুরু থেকেই এই বিজ্ঞপ্তিতে নানা ধরনের তথ্যবিভ্রাট ও গরমিল দেখা গেছে। অধিদপ্তরের নজরে আনার পর সেসব তথ্য ঠিক করা হয়।

চিকিৎসাধীন রোগীর বিষয়ে করোনার জন্য নির্ধারিত একটি সরকারি ও দুটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, গত তিন মাসে করোনা নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা হাতে গোনা। যাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের উপসর্গ মৃদু। তাঁদের সেরে উঠতে সময়ও লাগছে কম। এত বিপুলসংখ্যক চিকিৎসাধীন রোগীর বিষয়টিকে বাস্তবসম্মত নয় বলে তাঁরা মনে করছেন৷

জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল বলেন, এত চিকিৎসাধীন রোগী কবে শনাক্ত হলেন এবং তাঁরা কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছেন, এটা বড় প্রশ্ন। বাড়িতে চিকিৎসা নিলে তাঁদের ফলোআপ কীভাবে হচ্ছে, তাঁদের কী কী জটিলতা রয়েছে, এই বিষয়ে অধিদপ্তর কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলো জানা প্রয়োজন।

Also Read: করোনার নতুন ধরন চার গুণ বেশি সংক্রামক: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

Also Read: টিকার মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো হয়েছে