Thank you for trying Sticky AMP!!

'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত দুজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মিজানুরের খুনি: পুলিশ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ানের ছাত্র মিজানুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর খিলক্ষেতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত দুই যুবক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মিজানুর রহমানকে খুনের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে খিলক্ষেতের ডুমিনি (পূর্বাচল ৩০০ ফুট) এলাকায় হাতিরঝিল থানা-পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওই দুই যুবক নিহত হন।

পুলিশ বলছে, নিহত ওই দুই যুবক ছিনতাইকারী। তাঁদের একজনের নাম নাজমুল ইসলাম ও অন্যজন শাহীন ওরফে মোটা শাহীন। তাঁরা কিছুদিন আগে কারওয়ান বাজারসংলগ্ন উড়ালসড়কে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মিজানুর রহমানসহ পৃথক ঘটনায় চারজনকে যাত্রী হিসেবে অটোরিকশায় তুলে টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে লাশ উড়ালসড়কে ফেলে দেন। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন ছিনতাইকারীর জবানবন্দিতে নাজমুল ও শাহীনের নাম আসে।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বুধবার ছিনতাইকারীদের সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া দেওয়া জীবন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, গতকাল মধ্যরাতে নাজমুল ও শাহিন অটোরিকশা নিয়ে ছিনতাইয়ে বের হন। তাঁরা খিলক্ষেতের ডুমিনি আহবপাড়াসংলগ্ন (পূর্বাচল) ৩০০ ফুট সড়ক ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার পৌনে চারটার দিকে হাতিরঝিল থানার নিরাপত্তাচৌকি এলাকায় এসে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে নাজমুল ও শাহীন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা ও একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। পরে ছিনতাইকারীদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। আজ রাত ১০টা পর্যন্ত তাঁদের লাশ শনাক্ত করতে মর্গে কেউ যায়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় দুটি, খিলক্ষেত ও ভাটারা থানায় একটি করে মামলা রয়েছে।

খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদিকুর রহমান সুরতহাল প্রতিবেদনে নিহত দুই যুবককে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উল্লেখ করেন। এতে বলা হয়, তাঁদের বয়স ৩০ ও ৩১ বছর। তাঁদের শরীরে তিন থেকে ছয়টি গুলির চিহ্ন রয়েছে।

তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ জানায়, ৬ জানুয়ারি ভোরে পুলিশ রাজধানীর কারওয়ান বাজারসংলগ্ন উড়ালসড়কের ওপরে অজ্ঞাতনামা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মিজানুর রহমানের গলায় ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার করে। পকেটে থাকা এটিএম কার্ডের সূত্র ধরে মিজানুরের পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। ওই হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ দুটি ছিনতাইকারী চক্রের খোঁজ পায়। ২৫ ও ২৬ জানুয়ারি ওই ঘটনায় পুলিশ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য নুর ইসলাম, মো. জালাল ও আবদুল্লাহ ওরফে বাবুকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, রাতে অটোরিকশা নিয়ে ছিনতাইয়ে বের হন তাঁরা এবং যাত্রী তুলে তাঁদের কাছ থেকে টাকা ও মুঠোফোন নিয়ে দুপাশ থেকে দুই সদস্য মাফলার বা গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করেন। এতে নাজমুল, শাহীনসহ ১০ জনের নাম প্রকাশ করেন। গত চার বছরে তাঁরা আড়াই হাজার ছিনতাই করার কথা জানান।

ছিনতাইকারীরা মিজানুর রহমান ছাড়াও ১০ ডিসেম্বর কুড়িল উড়ালসড়কের ওপরে আক্তার হোসেন, ৪ জানুয়ারি বনানীগামী উড়ালসড়কের ঢালে দরজি মনির হোসেন, আর ৩১ ডিসেম্বর খিলক্ষেতে ওঠার উড়ালসড়কে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তিকে হত্যা করে তাঁদের কাছ থেকে টাকা ও মুঠোফোন ছিনতাই করার কথা স্বীকার করেন।

আরও পড়ুন...

রাজধানীর খিলক্ষেত দুই ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ
রাতের ঢাকায় মিজানুরের মতো ‘একই কায়দায়’ আরও তিনজনকে হত্যা করে তারা