Thank you for trying Sticky AMP!!

খুলনায় চিকিৎসকদের দাবির মুখে থানার ওসি প্রত্যাহার

অবশেষে চিকিৎসকদের চাপের মুখে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা আসলাম বাহারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। খুলনার চিকিৎসক আবদুর রকিব খান হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাঁকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরের দিকে এই আদেশ দেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার। আসলাম বাহার ছিলেন ওই থানায় পরিদর্শক (তদন্ত)। তবে ওসি না থাকায় ওই পদে দায়িত্ব পালন করতেন তিনি।

মারা যাওয়া এক রোগীর স্বজনদের হামলায় খুলনা নগরের গল্লামারী এলাকায় অবস্থিত রাইসা ক্লিনিকের মালিক চিকিৎসক রকিব খান মারা যান। ওই ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার এবং সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে গত বুধবার অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন খুলনার চিকিৎসকেরা। তবে প্রথম দিনেই এজাহারভুক্ত চার আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হওয়ায় বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে তা ৭২ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়। ওই সময়ের মধ্যে এজাহারভুক্ত অন্য আসামিকে গ্রেপ্তার, সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার ও মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে না নেওয়া হলে আবার কর্মবিরতি পালন করার হুমকি দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের ওই বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই মামলার এজাহারভুক্ত সব আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আর রোববার দুপুরে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়।

কেএমপির মুখপাত্র ও উপপুলিশ কমিশনার শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসলাম বাহারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে রিজার্ভ পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। ওই থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হরিণটানা থানার ওসি আশরাফুল আলমকে।

গতকাল শনিবার দুপুরে রূপসা উপজেলার পালেরহাট এলাকা থেকে চিকিৎসক রকিব হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি আবদুল কুদ্দুসকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে এজাহারভুক্ত চার আসামির সবাই গ্রেপ্তার হন। এর মধ্যে প্রধান আসামি জমির শেখ ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের মধ্যে খাদিজা বেগম আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া অন্য চার আসামির তিনজনকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

১৪ জুন রাইসা ক্লিনিকে শিউলি বেগমের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হয়। প্রথম দিকে সন্তান ও মায়ের শরীর ভালো থাকলেও রাতে শিউলি বেগমের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ১৫ জুন রাতে শিউলি বেগমের স্বজনেরা রাইসা ক্লিনিকের মালিক চিকিৎসক আবদুর রকিব খানকে মারধর করেন। পরে মাথায় রক্তক্ষরণের কারণে খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রকিব খান।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মেহেদী নেওয়াজ বলেন, বিএমএর তিনটি দাবির মধ্যে সব আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি পূরণ হলেও শনিবার পর্যন্ত ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়নি। এ কারণে বিএমএর পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে রোববার দুপুরের মধ্যে ওসিকে প্রত্যাহার করায় চিকিৎসকদের তিনটি দাবির দুটিই পূরণ হয়েছে। তিনি বলেন, খুলনা বিএমএর আন্দোলনকে ধারণ করে কেন্দ্রীয় বিএমএ পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিল ও আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছিল। এ কারণে এখন কেন্দ্রীয় বিএমএ থেকে যদি কোনো কর্মসূচি না দেওয়া হয়, তাহলে তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেবেন।

আরও পড়ুন:
খুলনায় চিকিৎসক রকিব হত্যা মামলার আরেক আসামি গ্রেপ্তার