Thank you for trying Sticky AMP!!

বোনকে গলা কেটে হত্যার দায় অন্যের ওপর চাপাতে পরে নিজের মাথায় আঘাত করেন দা দিয়ে

ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। রোববার সকালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায়

কোনো দুর্বৃত্ত নয়, আলমগীর হোসেনই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নিজের বোন মিম আক্তারকে বাড়ির পাশে আমবাগানে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন। আলমগীর প্রথমে মিমের শ্বাসরোধ করেন ও পরে গলা কেটে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ বেগুনখেতে ফেলে দিয়ে আসেন। হত্যার ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নিজের মাথাতেই পরে দা দিয়ে আগাত করেন আলমগীর। এরপর বোনকে অপহরণের গল্প বানান।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার মোহাম্মদপুর মসজিদ পাড়ার গৃহবধূ মিম আক্তারের (২৮) খুনের মামলায় গ্রেপ্তার আলমগীর হোসেন (৩২) আদালতে এ জবানবন্দি দিয়েছেন। দামুড়হুদা আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রিপন হোসেন সোমবার বিকেলে এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর আলমগীরকে পৌর এলাকার ভীমরল্লাতে অবস্থিত জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ সোমবার বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাকিয়া সুলতানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-ডিবি) ফেরদৌস ওয়াহিদ।

পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দর্শনা পৌর এলাকার মোহাম্মদপুর মসজিদপাড়ার মৃত আরমান আলীর মেয়ে মিম আক্তারের সঙ্গে সাত বছর আগে সিঅ্যান্ডবি পাড়ার সুরুজ আলীর বিয়ে হয়। মিম আক্তার দুই দফায় বিদেশে যান এবং সেখান থেকে ফিরে এসে জমিসহ বাবার বাড়িটি কিনে নেন। সেই ওই বাড়িতে মা, ভাই ও স্বামীকে নিয়ে বসবাস করতেন। মিম আক্তার এবার স্বামীসহ বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গত রোববার সকালে উপজেলার একটি গ্রামের বেগুনখেতে মিমের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। এর আগে শনিবার মিমের ভাই আলমগীরকে আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়। স্ত্রী খুনের ঘটনায় সুরুজ মিয়া বাদী হয়ে রোববার অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় হত্যা মামলা করেন।

Also Read: চুয়াডাঙ্গায় বেগুনখেতে গৃহবধূর গলাকাটা লাশ, ভাই আহত

ওই সময় আলমগীর পুলিশকে বলেন, চার-পাঁচজন দুর্বৃত্ত শনিবার রাতে বাড়ি থেকে তাঁকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে বাড়ির পাশের মাঠে নিয়ে যায়। পরে তাঁর মা ও বোন তাঁর খোঁজে মাঠে যান। সেখানে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ছেড়ে দিয়ে তাঁর বোনকে নিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই এসে তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, বিভিন্ন দ্বন্দ্বের জেরে বোনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আলমগীর। পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মিমকে বাড়ির পাশের একটি আমবাগানে ডেকে নেন তিনি। এরপর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে বাড়ির পাশের বেগুনখেতে নিয়ে ধারালো দা দিয়ে গলা কেটে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নিজেই নিজের মাথায় দায়ের পোঁচ দেন আলমগীর। এরপর কৌশলে নিজেই নিজের হাত-পা বেঁধে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করেন।

লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে জেলা ও দর্শনা থানা-পুলিশ, পিবিআই, সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে নামে। সার্বিক আলামতের ওপর ভিত্তি করে আলমগীরকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেই বোনকে খুনের কথা স্বীকার করেন।