Thank you for trying Sticky AMP!!

৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এমএলএম কোম্পানির কার্যালয়ে তল্লাশি

রোববার বিকেলে এমএলএম কোম্পানি জেকা বাজারের তল্লাশি চালানো হয়

রাজবাড়ী জেলার প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে যাওয়া অনলাইনভিত্তিক এমএলএম কোম্পানি জেকা বাজারের নির্বাহী পরিচালককে গ্রেপ্তারের পর প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় তল্লাশি চালানো হয়েছে।

রোববার বেলা তিনটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এ তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এর আগে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক জাবিউল্লাহ খানকে শনিবার বিকেলে ফরিদপুরের আলীপুরের কবরস্থান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বাড়ি রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের গঙ্গানন্দপুর গ্রামে।

তল্লাশি চালানোর সময় গ্রেপ্তার জাবিউল্লাহ খানকেও সঙ্গে নেওয়া হয়। এ সময় সিআইডির রাজবাড়ী কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান আবুল হোসেন, পরিদর্শক জিল্লুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হাতকড়া পরানো জাবিউল্লাহ খানকে একদল সিআইডি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। নান্নু টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপকের কক্ষের তালা ভাঙা হয়। কিন্তু সেখানে কিছু পাওয়া যায়নি। পাশের জাবিউল্লাহ খানের কক্ষের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করা হয়। সেখানে টেবিলের ওপর বিভিন্ন ধরনের পণ্য সাজিয়ে রাখা ছিল। ওই কক্ষে একটি ল্যাপটপ, জমি বিক্রির দলিল, গাড়ি বিক্রির দলিলসহ বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র পাওয়া হয়।

তল্লাশি শেষে সিআইডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে রোববার জেকা বাজারের কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে একটি ল্যাপটপ, পণ্যসহ অনেক কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। এটি একটি প্রতারণা চক্র। প্রতারণা ছাড়াও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের মামলা সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।

জেবা বাজারের গ্রাহক হওয়া ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে রাজবাড়ী ও আশপাশের জেলার ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রাজবাড়ী শহরের পান্না চত্বরের পাশে নান্নু টাওয়ারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় দুটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। এ জন্য জাবিউল্লাহ খানসহ ১৫ জনের একটি কমিটি ছিল।

Also Read: ৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে পালিয়ে যাওয়া এমএলএম কোম্পানির প্রধান গ্রেপ্তার

গ্রাহকের কাছ থেকে জনপ্রতি ১ হাজার ৩০০ টাকা নিয়ে অনলাইনের একটি আইডি বিক্রি করা হতো। জেকা বাজারের অ্যাপসের মাধ্যমে ওই আইডি থেকে ৩০ সেকেন্ডের একটি বিজ্ঞাপন দেখলে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ১০ টাকা যোগ হতো। নতুন কাউকে প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক বানাতে পারলেও লভ্যাংশ পেতেন পুরোনো গ্রাহক। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল পণ্য বিক্রি করত প্রতিষ্ঠানটি।

গত বছরের ২ নভেম্বর প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখানোর জন্য এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এর পর থেকে জাবিউল্লাহ খান আত্মগোপনে চলে যান। পরে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে এক গ্রাহক বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় জাবিউল্লাহ খানকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন।