Thank you for trying Sticky AMP!!

ফেঞ্চুগঞ্জে বাঘ–আতঙ্ক, রাতে মসজিদে মাইকিং

সিলেট জেলার মানচিত্র

‘দুটি বাঘ দেখা গেছে। আপনারা যাঁরা বাইরে ঘোরাফেরা করছেন, সাবধানে থাকবেন।’ সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের দুটি মসজিদে গতকাল সোমবার রাতে এ কথা বলে মাইকিং করা হয়েছে। এর আগে ২১ ডিসেম্বর ঘিলাছড়া ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামে মেছো বিড়ালের আক্রমণে এক বৃদ্ধ আহত হয়েছিলেন। পরে সেটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পর থেকে এলাকায় ‘বাঘের’ আতঙ্ক বিরাজ করছে।

Also Read: সিলেটে আক্রমণে বৃদ্ধ আহত, মেছো বিড়ালকে পিটিয়ে হত্যা

গতকাল রাতে এলাকার বাসিন্দারা টর্চলাইট, লাঠিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম হাতে নিয়ে বাঘের খোঁজ করেছেন। তবে মেছো বিড়াল কিংবা কোনো বাঘের সন্ধান পাননি তাঁরা। বন বিভাগ বলছে, এলাকায় যে প্রাণী দেখা যাচ্ছে, সেটি মেছো বিড়াল নামে পরিচিত। প্রাণীটি হিংস্র নয় এবং এ নিয়ে আতঙ্কিত না হতে আহ্বান জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। তবে বাঘ কে বা কারা দেখেছে, কেউ ঠিক করে বলতে পারছেন না। অহেতুক বাঘ নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে।
লেইছ চৌধুরী. ঘিলাছড়া ইউপির চেয়ারম্যান

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে ঘিলাছড়া ইউনিয়নের জিরো পয়েন্ট এলাকার মসজিদ এবং মইমাড়া টিলা এলাকার মসজিদ থেকে ‘দুটি বাঘ দেখা গেছে’ জানিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। এর পর থেকে ইউনিয়নের গাজীপুর, কোরবানপুরসহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে বাঘের আতঙ্ক দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে বাঘ দেখা গেছে জানিয়ে পোস্ট করেন। এর পরপরই এলাকার বাসিন্দারা লাঠিসোঁটা ও টর্চলাইট নিয়ে এলাকার ঝোপঝাড় ও টিলায় সন্ধান চালান।

ফেঞ্চুগঞ্জ ঘিলাছড়া ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. রিমন আহমদ গতকাল রাতে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘৪ থেকে ৫ দিন ধরে এলাকায় একটি বাঘের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেটি আটকও করা হয়েছে। এরপর আরও একটির সন্ধান পাওয়া গেছে। এলাকার মানুষ সেটাকে দেখেছে। সেটি ঘিলাছড়া জিরো পয়েন্টে সোমবার সন্ধ্যার পর দেখা গেছে।’ ওই পোস্টের নিচে অনেকেই মন্তব্য করে সাবধানে থাকার কথা জানান।

২১ ডিসেম্বর মেছো বিড়ালের আক্রমণে আহত হওয়া মো. লেজু মিয়া (৭০) হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর তিন দিন আগেই বাড়ি ফিরেছেন। তাঁর হাতে মেছো বিড়াল আঁচড় দিয়েছিল।

সিলেট বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা (ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার) শহিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ২১ ডিসেম্বর এলাকার বাসিন্দারা মেছো বিড়ালকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন। মেছো বিড়ালটির ওজন ৩২ কেজিও বলে জানিয়েছিলেন এলাকাবাসী। কিন্তু সেটির ওজন ১৩ কেজির মতো ছিল।

শহিদুল্লাহ আরও বলেন, মেছো বিড়াল নিরীহ প্রজাতির প্রাণী। তাকে বিরক্ত না করলে মানুষের ওপর আক্রমণ করার কথা নয়। সাধারণত খাবারের সন্ধানে জনবসতিতে এ প্রাণী চলে আসে। মানুষের গৃহপালিত হাঁস-মুরগি চুরি করে খেয়ে থাকে এ প্রাণী।

ঘিলাছড়া ইউপির চেয়ারম্যান লেইছ চৌধুরী বলেন, এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। তবে বাঘ কে বা কারা দেখেছে, কেউ ঠিক করে বলতে পারছেন না। অহেতুক বাঘ নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে। তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে ওই দুটি গ্রামে গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলে অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।