Thank you for trying Sticky AMP!!

গজারিয়ার প্লাইবোর্ড গুদামের আগুন ৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

গজারিয়ায় প্লাইবোর্ড কারখানার গুদামে অগ্নিকাণ্ড। গতকাল রাত সাড়ে আটটায়

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পাড়ে প্লাইবোর্ড তৈরির কারখানার গুদামে লাগা আগুন সাত ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট।

আজ রোববার দুপুরে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে বাতাসের কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সম্পূর্ণ কারখানায়। এ আগুনের ফুলকিতে নদীতে রাখা তিনটি ট্রলার পুড়ে গেছে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ওই কারখানার নাম সুপার ফরমিকা অ্যান্ড লোমিনেশন লিমিটেড। আজ সকাল থেকে কারখানার ওই গুদামে শ্রমিকেরা কাজ করছিলেন।

বেলা সোয়া একটার দিকে গুদামে মজুত করা পাটখড়িতে আগুন ধরে গেলে শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে বাতাসের কারণে আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা ব্যর্থ হন। গুদামের পাশেই নদীতে পাটখড়িবোঝাই তিনটি ট্রলার ছিল। গুদামের আগুনের ফুলকি বাতাসের মাধ্যমে ওই ট্রলারগুলোয় পড়লে মালামালসহ ট্রলারও পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। প্রথমদিকে গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট, এরপর নারায়ণগঞ্জের আরও চারটি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় কুমিল্লা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের আরও কয়েকটি দল আসে। আগুনের ভয়াবহতা কমে গেলেও রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ধীরমাত্রায় আগুন জ্বলছে।

Also Read: মুন্সিগঞ্জে মেঘনার তীরে কারখানায় আগুন, বাতাসে ফুলকি উড়ে পুড়ল তিনটি ট্রলার

অগ্নিকাণ্ডের স্থান পরিদর্শনের কথা জানিয়ে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গজারিয়া, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে যাচ্ছে। আগুন পুরোপুরি বন্ধ না হলেও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেই সঙ্গে এ কারখানা থেকে অন্য কোথাও যেন আগুন ছড়িয়ে না পড়ে, সেই দিকেও লক্ষ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখভাল করছে। আগুন কেন, কীভাবে লেগেছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণসহ সব বিষয়ের জন্য একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

কারখানাটির কর্মী আবুল কাশেম বলেন, কারখানার ভেতরে প্রচুর পরিমাণে পাটখড়ির মজুত ছিল। আজ সকাল থেকে তাঁরা যথারীতিভাবে কাজ করেছিলেন। কারখানার একপাশে সামান্য আগুনের ফুলকি দেখেন তাঁরা। অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু পাটখড়িতে লাগা আগুন মুহূর্তেই সম্পূর্ণ কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে কারখানার ভেতর থেকে শ্রমিকেরা নিরাপদে বেরিয়ে যান।

কারখানার আরেক শ্রমিক তরিকুল ইসলাম জানান, তাঁদের কারখানার পাশে একটি ওয়েল্ডিংয়ের প্রতিষ্ঠান আছে। সেখানে ওয়েল্ডিং করার সময় আগুনের ফুলকি তাঁদের গুদামের পাটখড়িতে এসে পড়েছিল। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে দাবি তাঁর।

এদিকে কারখানার আগুন নেভাতে গিয়ে ধোঁয়ার কারণে আনসার সদস্য মো. হিরণ (৩২), কারখানার শ্রমিক মাহিম (৩৫), শরিফুল ইসলামসহ স্থানীয় সাতজন আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

গজারিয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা রিফাত মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গুদামভর্তি ছিল পাটখড়ি ও প্লাইবোর্ড। পাটখড়ির ভেতরে পানি প্রবেশ করে না। ওপর দিয়ে পানি দিলে ওপরের অংশ জ্বলা বন্ধ হলেও ভেতরে ভেতরে জ্বলতে থাকে। নদীতে প্রচণ্ড বাতাস। সব মিলিয়ে আগুন জ্বলছে। যে পর্যন্ত পাটখড়ি পুড়ে শেষ না হবে, সে পর্যন্ত জ্বলতে পারে। তবে আগুন সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’