মুন্সিগঞ্জে মেঘনার তীরে কারখানায় আগুন, বাতাসে ফুলকি উড়ে পুড়ল তিনটি ট্রলার

গজারিয়ায় প্লাইবোর্ডের কারখানার আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। আজ রোববার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নে মেঘনা নদীর পাড়েছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীর পাড়ে একটি প্লাইবোর্ড তৈরির কারখানায় আগুন লেগেছে। আজ রোববার বেলা সোয়া একটার দিকে উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নের ওই কারখানায় এ আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে গজারিয়া ও নারায়ণগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট কাজ করছে। বাতাসের কারণে আগুনে ছড়িয়ে পড়ে কারখানার পাশে নদীতে রাখা তিনটি ট্রলার পুড়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই কারখানার নাম সুপার ফরমিকা অ্যান্ড লোমিনেশন লিমিটেড। আজ সকাল থেকে কারখানা শ্রমিকেরা কাজ করছিলেন। বেলা সোয়া একটার দিকে কারখানায় আগুন ধরে গেলে শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে বাতাসের কারণে আগুনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা ব্যর্থ হন। কারখানার পাশেই নদীতে পাটখড়ি বোঝাই তিনটি ট্রলার ছিল। কারখানার আগুনের ফুলকি বাতাসের মাধ্যমে ওই ট্রলারগুলোয় পড়লে মালামালসহ ট্রলারও পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়।

গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রিফাত মল্লিক বলেন, আগুন লাগার খবর পাওয়া মাত্র তাঁরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাঁদের দুটি ইউনিট প্রথম দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে আগুনের ভয়াবহতা বেশি হওয়ায় পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। সেখান থেকে আরও চারটি ইউনিট আসে। পরে আরও কয়েকটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়।

কারখানাটির কর্মী আবুল কাশেম বলেন, ‘কারখানার ভেতরে প্রচুর পরিমাণে পাটখড়ির মজুত আছে। আজ সকাল থেকে আমরা যথারীতিভাবে কাজ করেছিলাম। কারখানার একপাশে সামান্য আগুনের ফুলকি দেখা যায়। সেটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু পাটখড়িতে লাগা আগুন মুহূর্তেই সম্পূর্ণ কারখানায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পরে কারখানার ভেতর আমরা যারা ছিলাম, তারা নিরাপদে বেরিয়ে আসি।’

কারখানার শ্রমিক তরিকুল ইসলাম বলেন, তাঁদের কারখানার পাশে একটি ওয়েল্ডিংয়ের প্রতিষ্ঠান আছে। সেখানে ওয়েল্ডিং করার সময় আগুনের ফুলকি তাঁদের গোডাউনের পাটখড়িতে এসে পড়েছিল। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে দাবি তাঁর।
আগুন নেভাতে গিয়ে ধোঁয়ার কারণে কারখানার শ্রমিক মাহিম (৩৫), শরিফুল ইসলাম (৩০), মো. হিরণ (৩২) সহ স্থানীয় ৭ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজিব খান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার পর বেলা দুইটা দিকে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট থাকলেও পরে একে একে ১০টি ইউনিট আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে। আগুন সম্পূর্ণ নিভে না গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। তবে কী কারণে, কীভাবে আগুন লেগেছে এবং কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটি এখনো জানা যায়নি।