Thank you for trying Sticky AMP!!

নান্দাইলের সেই অগ্নিদগ্ধ শিশুটিকে বাঁচানো গেল না

মারিয়া আক্তার নামের শিশুটি ৫ জানুয়ারি অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংদই গ্রামের পাঁচ বছর বয়সী সেই অগ্নিদগ্ধ শিশু মারিয়া আক্তার (৫) মারা গেছে। আজ শুক্রবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।

দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত সহৃদয় ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তায় উন্নত চিকিৎসার জন্য মারিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। মৃত্যুর আগপর্যন্ত সে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মারিয়া নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই গ্রামের বিপুল মিয়া ও আলপিনা আক্তার দম্পতির সন্তান। বিপুল ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালান। ঝালমুড়ির যাবতীয় উপকরণ তৈরি করে দেন স্ত্রী আলপিনা।

Also Read: অগ্নিদগ্ধ শিশুর চলছিল ‘কবিরাজি চিকিৎসা’, অবশেষে হাসপাতালে

আলপিনা বলেন, ৫ জানুয়ারি তিনি রান্নাঘরের চুলায় সেদ্ধ করতে ছোলা-বুট বসিয়ে একটি কাজে পাশের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখন অন্য শিশুদের সঙ্গে উঠানে খেলা করছিল মারিয়া। খেলার সাথিদের বুট খাওয়ার আবদার পূরণ করতে মারিয়া রান্নাঘরে যায়। ডেকচির ঢাকনা খোলার সময় সামনে ঝুঁকলে মারিয়ার পরনের কাপড়ে চুলার আগুন ধরে যায়। শিশুটি তখন দৌড়ে ঘরের বাইরে এসে প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করতে থাকে। এ দৃশ্য দেখে বাড়ির লোকজন পানি দিয়ে আগুন নেভায়। ততক্ষণে শিশুটি গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়ে পড়ে। পরে গ্রামের লোকজনের পরামর্শে মারিয়ার শরীরে লবণপানি ছিটানো হয়।

ঘটনার পর শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ২৫০ শয্যার কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুটি হাসপাতালে আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ অথবা ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারটি অর্থাভাবে শিশুটির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেনি। তাই অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর ১২ দিন পর্যন্ত শিশুটির ওপর কবিরাজি চিকিৎসা চালানো হয়েছিল। এতে তার অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
১৭ জানুয়ারি শিশুটিকে আবার নান্দাইল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

আলপিনা আক্তার বলেন, চিকিৎসায় তাঁর সন্তানের উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু গুরুতর অগ্নিদগ্ধ থাকায় চিকিৎসকেরা তেমন আশ্বাস দিতে পারছিলেন না।

অগ্নিদগ্ধ রোগীদের নানাভাবে সহায়তা করেন, এমন এক সমাজকর্মী সুজন কর বলেন, চাহিদা অনুযায়ী শিশুটির জন্য প্রয়োজনীয় রক্ত ও প্লাজমা জোগাড় করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিশুটিকে বাঁচানো গেল না।