Thank you for trying Sticky AMP!!

কয়রায় নারীর মুখ ও শরীর অ্যাসিডে ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় মামলা

খুলনা জেলার মানচিত্র

খুলনার কয়রা উপজেলায় অ্যাসিড নিক্ষেপ করে এক নারীর মুখ ও শরীর ঝলসে দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় কয়রা থানায় মামলাটি করেন ওই নারী। এতে চারজনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএমএস দোহা প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখান থেকে থানায় অভিযোগ পাঠিয়েছেন। ওই অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।

Also Read: কয়রায় ঝলসে দেওয়া হলো নারীর মুখ ও শরীর

শুক্রবার গভীর রাতে ওই নারীর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। রাতেই তাঁকে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। স্বজনদের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ওই নারীর শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়। আসামিরা বিভিন্ন সময় হুমকিও দিয়ে আসছিলেন। গত ১১ জুলাই ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় হওয়া মামলায় সহজে জামিন পাওয়ায় অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।

মামলার এজাহারে ওই নারী উল্লেখ করেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যার জন্য ঘরের জানালা দিয়ে বোতলে থাকা অ্যাসিড নিক্ষেপ করে। এতে তাঁর মুখের বাঁ পাশের কিছু অংশ, গলার বাঁ পাশ ও বাঁ হাতের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে।

Also Read: খুলনায় নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুজিত কুমার বৈদ্য প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারীর ওপর যা ছোড়া হয়েছে, তা ব্যাটারির অ্যাসিড বা কম ক্ষমতার অ্যাসিড হতে পারে। গুরুতর কোনো জখম হয়নি। এরপরও পরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওই নারীর শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ি একই এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে বাবার বাড়িতে। পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই নারী শুক্রবার রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। পাশের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তাঁর কলেজপড়ুয়া ছেলে। দিনগত রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ গায়ে পানির মতো কিছু একটা পড়ে। এতে ঘুম ভেঙে গেলে জানালায় তাকিয়ে দেখতে পান, কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। ততক্ষণে তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গা ঝলসে যায়। ঘরে টাঙানো মশারিও পুড়ে যায়। এরপর এলাকাবাসীর সহায়তায় ভোর পাঁচটার দিকে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জুলাই ঈদুল আজহার পরদিন বিরোধপূর্ণ জমিতে ঘর তুলতে আসেন ওই নারীর চাচা, চাচাতো ভাইসহ ২৫ থেকে ৩০ জন। এ সময় তিনি বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চাচাতো ভাইয়েরা তাঁকে মারধর করতে করতে বিবস্ত্র করে ফেলেন। পরে তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে সড়কের পাশের একটি মেহগনি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। প্রায় এক ঘণ্টা এভাবে নির্যাতন চলতে থাকে।

খবর পেয়ে পুলিশ এসে ওই নারীকে উদ্ধার করে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকেরা। দীর্ঘদিন খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকায় মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই নারী। ওই ঘটনায় ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা।